
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

আজ ঢাকায় আসছে মার্কিন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল

সংসদ ভবনের সামনে চলছে নববর্ষের কনসার্ট

অপরাধীদের ‘সেকেন্ড হোম’ বস্তির ৩০০ ঘর

সরকারি ফার্মেসি: সম্ভাবনার পাশাপাশি আছে নানা চ্যালেঞ্জও

বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-মেঘালয় করিডোর চান সাংমা

সীমান্তে ফের বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করল বিএসএফ

আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি প্রত্যাশিতভাবে ক্ষমতায় আসবে: এএফপি
অভিযান চালিয়েও কেন রিকশা থামানো যাচ্ছে না রাজধানীতে ?

রাজধানীর ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে কিছু দিন পরপরই রিকশা চলাচল বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু উদ্যোগ নিলেও রিকশা চলাচল বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। সম্প্রতি ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর এলাকার যানজট কমাতে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। তবে রিকশাচালকদের সুযোগসন্ধানী মনোভাব ও সঠিক মনিটরিং না থাকায় রাজপথে রিকশা ঠেকানো যাচ্ছে না।
দিনের কোনও কোনও সময় যানজট কমানো যাচ্ছে বলে মনে করেন এ এলাকায় নিয়মিত চলাচলকারীরা। তবে কেউ কেউ মনে করেন, রাজপথে রিকশা চলাচল ঠেকানোর এই নিয়ম আগের মতো আবারও শিথিল হয়ে যাবে। কর্তৃপক্ষের দাবি, ঈদের পর তারা কঠোর হয়েছেন, একটু সময় লাগবে।
গুরুত্ব বিবেচনায় মিরপুর রোড রাজধানীর অন্যতম প্রধান সড়ক। এই সড়কটি রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার মধ্য দিয়ে যাওয়ায় অসংখ্য খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ী তাদের মালামাল কিনতে এটি ব্যবহার করেন। তাছাড়া রাস্তাটি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের পাশ দিয়ে যাওয়ায় প্রায়ই রাষ্ট্রীয় ও বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এই পথ দিয়ে চলাচল করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ এই সড়কে রিকশা চলাচল করায় যানবাহনের গতি কমাসহ যানজট লেগেই থাকে।
পাশের এলাকা মোহাম্মদপুরেও একই অবস্থা। এই এলাকায় নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়া ঢাকা শহরের বাসিন্দাদের বড় একটি অংশ ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরে বসবাস করেন। এসব এলাকার যাত্রীদের গন্তব্যে আসা-যাওয়ার পথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে গাড়িতে বসে থাকতে হয়।
সম্প্রতি যানজটের লাগাম টানতে ও সড়কের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে মাঠে নামে ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর ট্রাফিক জোন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধানমন্ডি-২৭ থেকে সাইন্সল্যাব মোড় পর্যন্ত প্রধান সড়কে রিকশা চলাচল নিষেধ করা হয়েছে আরও দুই মাস আগে। প্রধান সড়কের কোনও মোড় থেকেই প্রধান সড়কে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না রিকশাগুলোকে। তবে প্রধান সড়কের সঙ্গে যুক্ত সব গলির মুখে নজরদারি নেই। তাই সুযোগ পেলেই রিকশা নিয়ে চালকরা উঠে যাচ্ছেন প্রধান সড়কে।
রবিবার (১৯ মে) সরেজমিন মিরপুর রোডের ধানমন্ডি অংশে দেখা যায়, অফিস টাইমে দুই একটা রিকশা ছাড়া প্রধান সড়কে রিকশার তেমন কোনও ভিড় নেই। তবে ক্রসিংকে কেন্দ্র করে কোথাও কোথাও যানজট বা যানবাহনের ধীরগতি রয়েছে।
মিরপুর রোডে নিয়মিত যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করেন পাঠাও চালক শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, রিকশাচালকরা গতি বোঝে না। না বুঝেই হুট করে সামনে চলে আসে। এসময় পেছনে স্পিডে যে গাড়িগুলো থাকে তাদের বেগ পোহাতে হয়। আবার একই রাস্তায় রিকশা ও ইঞ্জিনচালিত গাড়ি চলার কারণে সার্বিক গতি কমে যায়।
ধানমন্ডির বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, রাজধানীর বেশ কিছু সড়কে এখন যানজট কমে আসছে। মিরপুরে রোডে কিন্তু সে তুলনায় যানজট কমছিল না। এখন মেইন রোডের কিছু অংশ থেকে রিকশা উঠিয়ে দেওয়ায় আপাতদৃষ্টিতে জট কিছুটা কমছে মনে হচ্ছে। অভিযান চালালে কী হবে? যতক্ষণ পুলিশ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে ততক্ষণ অফ থাকে, সরে গেলেই আবার অনিয়ম শুরু করে। ঠিকই মেইন রাস্তায় রিকশা ওঠে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ধানমন্ডি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার নব কুমার বিশ্বাস বলেন, ধানমন্ডি-২৭ থেকে নিউমার্কেট পর্যন্ত এ প্রধান সড়কে আমরা কোনও রিকশাকে চলাচল করতে দিচ্ছি না। কয়েক মাস ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবু দুই একটা রিকশা মাঝে-মধ্যে প্রধান সড়কে ঢুকে যায়।
এর কারণ বলতে গিয়ে তিনি বলেন, রাসেল স্কয়ার থেকে মেট্রো শপিং মল পর্যন্ত চালকদের প্রধান সড়কে চলাচলের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। পাশে কলাবাগানে ক্রসিং দিয়ে ধানমন্ডি ঢোকার সুযোগ রয়েছে। রিকশাগুলো যখন ক্রসিং দিয়ে এক পাশ থেকে অন্য পাশে পার হয় তখন চালকদের কেউ কেউ প্রধান সড়কে ওঠার চেষ্টা করে। তবে এবার আমরা আরও কঠোর হচ্ছি। আমি মনে করি আমরা পুরোপুরি বন্ধ করে সক্ষম হয়েছি।
এদিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে যানজটের লাগাম টানতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেয় তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ, যেমন- মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে সব গণপরিবহনের অস্থায়ী পার্কিং স্থায়ীভাবে অপসারণ, বসিলা থেকে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ননস্টপ সার্ভিস চালু করা, বাসস্ট্যান্ড থেকে বসিলা চার রাস্তার মোড় পর্যন্ত সব অবৈধ হকার উচ্ছেদ করে শতভাগ রাস্তা যানবাহন চলাচল উপযোগী করা, বাসস্ট্যান্ড কেন্দ্রিক বিআরটিসি'র বাস ডিপো থাকায় বিআরটিসি'র বাস দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় অপেক্ষা করার সুযোগ না দেওয়া এবং এ সংক্রান্তে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যথাযথ সমন্বয় করা, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড কেন্দ্রিক নতুন সার্কুলেশন প্ল্যান বাস্তবায়ন করা।
দুপুরে সরেজমিন মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে গেলে দেখা যায়, রিকশা চলাচলের আলাদা লেন তৈরি হয়েছে। তবে এই লেন ব্যবহার না করে রিকশাচালক অনেককেই এলোমেলোভাবে রিকশা নিয়ে চলতে দেখা গেছে। সেখানে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট মেহেদী হাসান বলেন, মোহাম্মদপুরে প্রচুর গাড়ি চলাচল করে। সড়কে বিশৃঙ্খলা এড়াতে আমরা রিকশার জন্য ব্যারিয়ার বসিয়ে আলাদা লেন করে দিয়েছি, তারপরও মানতে চাই না। সুযোগ পেলেই যেভাবে পারে সেভাবে ছুটে। আমাদের তো সীমাবদ্ধতা আছে। একটু আড়াল হলেই শুরু হয় বিশৃঙ্খলা।
তবে কিছুটা লাভ হয়েছে মনে করেন নিয়মিত চলাচলকারীরা। বসিলা থেকে মোহাম্মদপুর ল্যাবরেটরি স্কুলে সন্তানকে নিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন লাভলী বেগম। তিনি বলেন, গত ঈদের পরে এ সড়কে যানজট কিছুটা কমেছে। আগের মতো জ্যাম নেই।
এ প্রসঙ্গে ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, মোহাম্মদপুর এলাকার বাসস্ট্যান্ডকেন্দ্রিক মানুষ প্রায়ই ট্রাফিক জ্যাম নিয়ে অভিযোগ দেয়। স্কুল-কলেজের আধিক্য হিসেবে এই এলাকায় যে ধরনের মানুষ বসবাস করে, মানুষের আচরণ এবং যানবাহনের যে ধরন, সেটা আমরা দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিলাম না। এবার ঈদের পরে এ কাজটি শুরু করি। ২০ থেকে ২৫ দিন লেগেছে। আমাদের ট্রাফিক ইউনিট, কমিউনিটি পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে সমন্বয় করে সবাই মিলে এ কাজটি করছি। আমরা আশা করি এর একটি ভালো ফলাফল পাবো। মোহাম্মদপুর এলাকায় কমে আসবে যানজট।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।