নিউজ ডেক্স
আরও খবর
বিচার বিভাগ থেকে যেন কোনো অবিচার না হয় : আইন উপদেষ্টা
গার্মেন্টস খাতে অস্থিতিশীলতায় প্রতিবেশী দেশের ইন্ধন: শ্রম সচিব
হত্যাকারীদের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে রেখে ভালো কিছু সম্ভব না: মির্জা ফখরুল
পিতাপুত্রের টাকা পাচার
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় কুষ্টিয়ার বিভিন্ন সরকারি কলেজের দাপুটে শিক্ষক মহোদয়দের অনৈতিক কার্যকলাপ
ত্রাণ নিয়ে মানুষ ছুটছে টিএসসিতে
ভারতের বাঁধ ভাঙা পানিতে ডুবছে গ্রামের পর গ্রাম
এলো স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা
অগ্নিঝরা মার্চের তৃতীয় দিন আজ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সব রাজনৈতিক ও আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় ১৯৭১ সালের এ দিনটিতেই।
উত্তাল পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা-সংগ্রামের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা আসে এদিন। পূর্বসিদ্ধান্তের আলোকে আজকের দিনে ঘোষণা করা হয় ৫ দফা ঘোষণাপত্র। এতে বলা হয়-দেশের নাম হবে ‘বাংলাদেশ’, পতাকা হবে সবুজ জমিনের মাঝে লাল সূর্য, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর সৃষ্টি ‘আমার সোনার বাংলা’ হবে জাতীয় সংগীত, বঙ্গবন্ধু হবেন জাতির পিতা আর ‘জয় বাংলা’ হবে জাতীয় স্লোগান।
তাছাড়া ৪ দফা ও ১৬ উপদফার স্বাধীনতার ইশতেহারে বলা হয়, আজ থেকে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ ঘোষণা করা হলো। বঙ্গবন্ধুকে বাংলার স্বাধিকার আন্দোলনের সর্বাধিনায়ক মনোনীত করে গেরিলা ও সম্মুখযুদ্ধের সব রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণও হয় ঐতিহাসিক এই দিনে। গুলি করে নির্বিচারে সাধারণ মানুষ হত্যা, জেল-জুলুম-অত্যাচার ও একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার দাবিতে এদিন সারা দেশে স্বতঃস্ফূর্ত সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়। বঙ্গবন্ধুর পূর্বঘোষিত এ হরতাল সফল করার জন্য লাখ লাখ মুক্তিকামী মানুষ ভোর থেকে বাঁশের লাঠি হাতে রাস্তায় নেমে আসেন।
অন্যদিকে এই দিনে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট লে. জেনারেল ইয়াহিয়া খান দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য প্রধান কয়েকটি রাজনৈতিক দলের (সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী) ১০ জন নেতার বৈঠক আহ্বান করেন। আওয়ামী লীগ, পিপলস পার্টি, মুসলিম লীগ, ন্যাপ, জামায়াতে ওলামায়ে পাকিস্তান, জামায়াতে ইসলামী ও পিডিপির নেতাদের বৈঠকে আহ্বান করা হলে আওয়ামী লীগ প্রধান ও বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের কাণ্ডারি বঙ্গবন্ধু ওই বৈঠককে ‘নিষ্ঠুর তামাশা’ আখ্যায়িত করে প্রত্যাখ্যান করেন।
বিকালে ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগ আয়োজিত পল্টনের বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু। ৪ থেকে ৬ মার্চ দেশব্যাপী ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু দেশের খাজনা-ট্যাক্স বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি ঘরে ঘরে সংগ্রাম কমিটি ও মুক্তিবাহিনী গঠনেরও আহ্বান জানান। সভায় ঘোষণাপত্র ও প্রস্তাব পাঠ করেন ছাত্রলীগ নেতা এমএ রশীদ এবং ইশতেহার পাঠ করেন ছাত্রলীগ নেতা শাজাহান সিরাজ।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সূত্রে জানা গেছে, ‘১৯৭১ সালের ৩ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ঢাকায় দ্বিতীয় দিনের মতো এবং সমগ্র বাংলাদেশে প্রথম দিনের জন্য সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। হরতালের সময় শহরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে যায়। হরতাল চলাকালে জনতার স্বতঃস্ফূর্ত মিছিলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণে ও বিভিন্ন ঘটনায় সারা দেশে শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়। ঢাকা ছাড়াও রংপুর এবং সিলেটে কারফিউ জারি করা হয়।’
‘রংপুরে পাক সেনাবাহিনী ও জনতার মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে দুপুর আড়াইটা থেকে ২৪ ঘণ্টাব্যাপী কারফিউ জারি করা হয়। সিলেটে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। ঢাকায় কারফিউয়ের মেয়াদ শিথিল করে রাত ১০টা থেকে সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত বলবৎ করা হয়। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এক ঘোষণায় ১০ মার্চ ঢাকায় নেতাদের সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। রাওয়ালপিণ্ডির প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে ঘোষণা করা হয়, এই সম্মেলন অনুষ্ঠানের পর দুই সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় পরিষদ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। বঙ্গবন্ধু প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার আমন্ত্রণ তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেন।’
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।