নিউজ ডেক্স
আরও খবর
শিবগঞ্জ সীমান্তে ভারত-বাংলাদেশের গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ,আহত-৫
কালিগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনায় স্কুল শিক্ষককে হাতুড়িপেটা ও কুপিয়ে জখম
বান্দরবানে ট্রাক-মোটর সাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩
অনুপ্রবেশের দায় ভারতীয় নাগরিক ২,সহোদর কে আটক করে বিজিবি
সুনামগঞ্জে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পন্য জব্দ করেছে র্যাব
বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের পক্ষ থেকে অসহায় ও দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ
নারায়ণগঞ্জে শ্রমিকদের বিক্ষোভে সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট
ওষুধ কিনতে বেরিয়েছিলেন গুলিস্তানে নিহত রেজাউল
আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ শেষে শুক্রবার দুপক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে ছুরিকাঘাতে নিহত হন মাদ্রাসাছাত্র রেজাউল করিম।ওই তরুণ ‘ওষুধ কিনতে বেরিয়ে’ মারামারি মধ্যে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
নিহত রেজাউল রেজাউলের বাড়ি শেরপুরের নকলার পশ্চিম নারায়নখোলা গ্রামে। তার বাবা ক্ষুদ্র চাষী আব্দুস ছাত্তার।
পরিবার দাবি করেছে, অসুস্থ শরীর নিয়ে ওষুধ কিনতে বেরিয়ে সংঘর্ষের মাঝখানে পড়ে যায় রেজাউল। মারপিটে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রেজাউলের মরদেহ এখনও বাড়ি আসেনি। রোববার বিকাল নাগাদ তার মরদেহ বাড়িতে আসার কথা রয়েছে।
রেজাউলের চাচা আজহারুল ইসলাম বলেন, তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে রেজাউল বড়। শেরপুরের একটি মাদ্রাসা থেকে হাফেজি পাস করে দুই বছর ধরে ঢাকার যাত্রাবাড়ীর একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করছিলেন তিনি।
জন্ডিস আক্রান্ত রেজাউলের শরীরে জ্বর ছিল। ওষুধ কিনতে ঢাকার গুলিস্তানে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে আটকে মারপিট ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ খবর সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের সুবাদে শুনতে পায় রেজাউল করিমের বাড়ির লোকজন। খবর শুনে বাবা স্তব্ধ হয়ে পড়েন। মায়ের কান্না চলছে অবিরতভাবে। সে তার ছেলে খুনের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চান। স্বজনদেরও একই দাবি।
এলাকাবাসীর জানায়, ছেলে হিসেবে রেজাউল অনেক ভালো ছিলো। তার মৃত্যুর খবর শুনে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ নিরীহ ছেলের খুনীদের বিচার দাবি করেন।
শনিবার সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে ছেলের মৃত্যুর খবর পান আব্দুস ছাত্তার। তখনই কান্নায় ভেঙে পড়েন। মাটিতে শুয়ে আহাজারি করতে করতে রেজাউলের মা রেনু বেগম বলছিলেন, আমার ছেলে কোনও রাজনীতি করতো না। তোমরা আমার বাবাকে এনে দাও।
আব্দুস ছাত্তার বলেন, গত বছর ময়মনসিংহের জামিয়া ফয়জুর রহমান মাদ্রাসা থেকে হাফেজি শেষ করে যাত্রাবাড়ীর মাদ্রাসায় পড়তে গিয়েছিল। অনেক কষ্ট করে ছেলেকে পড়াশোনা করাচ্ছিলাম। স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা শেষ করে সংসারের হাল ধরবে। আমার সেই স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলো।
প্রত্যক্ষদর্শীরারা জানান,শান্তি সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা যখন ফিরে যাচ্ছিলেন, তখনই ঢাকা- ২ আসনের সংসদ সদস্য কামরুল ইসলাম এবং কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের সমর্থকরা মারামরিতে জড়ায়।
সংঘর্ষের সময় রাস্তায় থাকা নেতাকর্মীরা দোড়াদৌড়ি শুরু করেন। এক পর্যায়ে এক পক্ষের ধাওয়ায় অন্য পক্ষ সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্সের দিকে চলে যায়।
সংঘর্ষের পর পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা রেজাউলকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত মো. আরিফুল (১৮), জোবায়ের (১৮), রনি (৩২) ও মোবাশ্বেরকে (২৮) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
পল্টন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেন্টু মিয়া জানান, নিহতের স্বজনরা শনিবার রাতে থানায় গেছেন। একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। ওই সময় পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।