নিউজ ডেক্স
আরও খবর
নারায়ণগঞ্জ শহরে যানজট নিরসনে যৌথ অভিযান
কার্যক্রম চালুর অপেক্ষায় আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন
আলিফ হত্যার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের বিক্ষোভ
২৮ কেজি গাঁজাসহ ০২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র
জুলাই বিপ্লবে আহত সুজনকে আর্থিক অনুদান দিলেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা প্রশাসন
শেরপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক বহিষ্কার, ৩৩ নাগরিকের উদ্বেগ
সংবাদপত্রে খবর প্রকাশের জের ধরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও একটি জাতীয় দৈনিকের বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা ইকবাল মনোয়ারকে সাময়িক বহিষ্কারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৩৩ জন নাগরিক৷
রোববার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ইকবালের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং দুর্নীতির পক্ষে বক্তব্য দেওয়ায় উপাচার্যকে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানান তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়- ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে একাডেমিক স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো অন্যতম উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বহিষ্কারের ঘটনা তারই ধারাবাহিকতা, যেখানে যথাযথ প্রশাসনিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি বলে গণমাধ্যম সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি।’
তারা অবিলম্বে ইকবাল মনোয়ারের বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া এবং দুর্নীতির পক্ষে বক্তব্য দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
জানা যায়, গত ৩১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নবীনবরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈনের দেওয়া বক্তব্য নিয়ে দৈনিক যায়যায়দিনে রিপোর্ট করেছিলেন ইকবাল মনোয়ার৷ ‘দুর্নীতি হচ্ছে, তাই বাংলাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে: কুবি উপাচার্য’ শিরোনামে পরদিন প্রকাশিত এ রিপোর্টের জের ধরে বুধবার ইকবাল মনোয়ারকে সাময়িক বহিষ্কার করে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানে উপাচার্য দুর্নীতির পক্ষে সাফাই গেয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, উপাচার্যের বক্তব্য ‘বিকৃত করে’ প্রচার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়- ‘ছাত্র হিসেবে নয়, বরং একজন সংবাদকর্মী হিসেবে ইকবাল মনোয়ার পেশাগত দায়িত্বের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠানটি কাভার করেছিলেন৷ সংবাদে কোনো ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হলে তা জানানোর সুনির্দিষ্ট আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি প্রতিবাদলিপি পাঠাতে পারেন এবং বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগও দায়ের করতে পারেন। তা না করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার স্বাধীন সাংবাদিকতা করার অধিকার হরণের পর্যায়ে পড়ে। এর ফলে মুক্তচিন্তার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যারা সংবাদকর্মী হিসেবে কাজ করেন, তাদের মধ্যে একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি হবে।’
একটি অভিযোগে একজন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হলেও যেসব আইন প্রক্রিয়া আবশ্যক তা মানা হয়নি বলে তারা মনে করেন।
‘কোনো শিক্ষার্থীকে যদি গুরুতর অপরাধেও শাস্তি দিতে হয়, তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তা উপস্থাপন ও অনুমোদন হওয়ার পর সিন্ডিকেটে তা তুলতে হবে’- যোগ করেন তারা।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তারা আইন, বিধি, নিয়ম ও অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনপূর্বক তা প্রতিপালনের জন্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্ল্যাহ, সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) আ ম স আ আমিন, মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলী, পরিকল্পনাবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আকতার মাহমুদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ।
এছাড়াও এতে স্বাক্ষর করেন- প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, পরিবেশ ও জলবায়ু অর্থায়ন বিষয়ক বিশ্লেষক এম জাকির হোসাইন খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক কামরুন্নেসা খন্দকার, পরিবেশবিজ্ঞানী অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার, সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবুল কালাম মানিক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি ফজলে রেজা সুমন, সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউএসের বাংলাদেশ ও পাকিস্তান কান্ট্রি স্পেশালিস্ট সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া, সায়েন্টিফিক বাংলাদেশের সম্পাদক ড. মুনির উদ্দিন আহমেদ, নাগরিক বিকাশ ও কল্যাণের (নাবিক) সভাপতি ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান, জলবায়ু গবেষক ও আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ, আইনজীবী অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক ব্যারিস্টার মো. জীশান মহসীন, নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুসতাসীম তানজীর, নারী উদ্যোক্তা ও মানবাধিকার কর্মী আশরাফি হাসান, সিভিল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (সিআরআইবি) এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট আহসান হাবীব, লেখক ও গবেষক জাকারিয়া পলাশ, মানবাধিকার কর্মী ইজাজুল ইসলাম, লেখক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক সোহেল রানা এবং ইন্টার প্রেস নেটওয়ার্কের (আইপিএন) নির্বাহী পরিচালক এহসানুল হক জসিম।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।