চলতি বছর দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩০ হাজার মেগাওয়াট ছাড়াবে – দৈনিক গণঅধিকার

চলতি বছর দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩০ হাজার মেগাওয়াট ছাড়াবে

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৫ আগস্ট, ২০২৩ | ৫:০৪
বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে চলতি বছরের মধ্যে অব্যবহৃত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাও ৫০ শতাংশ বেড়ে যাচ্ছে। ৪ আগস্ট, শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ইউএনবি জানায়, চলতি সপ্তাহে সরকারি সূত্র জানিয়েছে, গ্রিড ও অফ-গ্রিড বিদ্যুৎসহ দেশের মোট স্থাপন করা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ক্ষমতা বর্তমানে ২৮ হাজার ১৫৯ মেগাওয়াট। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের মধ্যে এটি ৩১ হাজার ২৭৩ মেগাওয়াট হবে। এর মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি অব্যবহৃত থাকবে। বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ১৬ হাজার মেগাওয়াট। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বর্তমানে গ্রিডে যুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার ৯১১ মেগাওয়াট। এ ছাড়া ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ অফ-গ্রিড বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩ হাজার ২৪৮ মেগাওয়াট। অফ-গ্রিড বিদ্যুৎ বিশেষ করে, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোনো বড় পরিবর্তন নেই।এ ধরনের বিদ্যুৎ প্রধানত শিল্প প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ সালের ১ আগস্ট পর্যন্ত জাতীয় গ্রিডে যুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ২২ হাজার ৪৮২ মেগাওয়াট। চলতি বছরের একই সময় পর্যন্ত এই বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ২৪ হাজার ৯১১ মেগাওয়াট। অর্থাৎ এক বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে ২ হাজার ৪২৯ মেগাওয়াট। বর্তমানে আরও ৩ হাজার ১১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাইপলাইনে রয়েছে যা আগামী ছয় মাসের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। এতে দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩১ হাজার ২৭৩ মেগাওয়াটে পৌঁছাবে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, সব মিলিয়ে এই বছর গ্রিডে ৫ হাজার ৫৪৩ মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুৎ যুক্ত হবে। যদিও এই সময়ের মধ্যে চাহিদা আরও ১ হাজার মেগাওয়াট বাড়তে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কর্মকর্তা বলেন, মজার ব্যাপার হলো সমস্ত নতুন বিদ্যুৎ বেসরকারি খাত থেকে আসছে, সরকারি প্ল্যান্ট থেকে নয়। তবে, বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে ভাড়ায় চালিত প্রায় ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কর্মকর্তারা বলেছেন, অনেক গ্রাহক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার বিশাল বৃদ্ধিতে খুশি হতে পারে। তবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ৫০ শতাংশ অব্যবহৃত রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ বা পরিচালন ব্যয় পরিশোধের ক্ষেত্রে এটি কর্তৃপক্ষের জন্য উদ্বেগের কারণ হবে। বিপিডিবির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত অর্থবছর (২০২২-২৩) আমাদের ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাবে ২৬ হাজার কোটি টাকা দিতে হয়েছিল এবং এই চলতি অর্থবছরে এর পরিমাণ ৩৬ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাবে।’ ২০২১-২২ অর্থবছর যার পরিমাণ ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। ক্যাপাসিটি পেমেন্টের সঙ্গে আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো-দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র এক বছর আগে ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ২৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে গেলেও পেমেন্টের ৯০ শতাংশের বেশি অর্থ প্রদান করা হবে বৈদেশিক মুদ্রায়। ক্যাপাসিটি চার্জ হলো বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) অধীনে এক ধরনের জামানতযুক্ত পেমেন্ট।বেসরকারি উৎপাদনকারীর কাছ থেকে বিপিডিবি বিদ্যুৎ নিলেও সেই অর্থ দিতে হয়, না নিলেও দিতে হয়। বিপিডিবির আরেক কর্মকর্তা বলেন, দুই বছর আগের তুলনায় চলতি অর্থবছরে আমাদের ক্যাপাসিটি পেমেন্ট ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ বাড়বে। সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নতুন কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এরই মধ্যে গ্রিডে যুক্ত হয়েছে বা সংযুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট, রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ৬২০ মেগাওয়াট, চট্টগ্রামের বাশখালীর এস আলম গ্রুপের পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ১ হাজার ২২৪ মেগাওয়াট, মেঘনাঘাটে রিলায়েন্স পাওয়ার এলএনজি-ভিত্তিক প্ল্যান্ট থেকে ৭১৮ মেগাওয়াট, এলএনজি-ভিত্তিক জিই-সামিট মেঘনাঘাট-২ পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ৫৯০ মেগাওয়াট এবং মেঘনাঘাটে এলএনজি-ভিত্তিক ইউনিক গ্রুপের পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ৫৮৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে গ্রিডে। সরকারি পরিসংখ্যানে আরও জানা গেছে, বিপিডিবি তহবিলের ঘাটতি নিয়ে সমস্যায় পড়েছে। কারণ বেসরকারি খাতে এটির বকেয়া বিল এখন এই বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ২৫ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। বিপিডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, তবে বেসরকারি খাতের মে ও জুলাইয়ের বিল যোগ করা হলে তা ৩৫ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে। বিদ্যুৎ খাতের পরিস্থিতিকে আমদানিনির্ভর জ্বালানি সরবরাহের ওপর ভিত্তি করে ভুল নীতির ফলাফল উল্লেখ করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বিপিডিবির বোঝা কমাতে ‘বিদ্যুৎ নেই পেমেন্ট নেই’ পদ্ধতি চালু করতে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বন্ধে কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে ‘ফোর্স ম্যাজেউর’ প্রয়োগ করা উচিত। দ্বিতীয়ত, সরকারকে আমদানি-ভিত্তিক এলএনজি-চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে বলে জানান তিনি। সূত্র: ইউএনবি নিউজ

দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
দৌলতপুরে ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে র‍্যালি ও পথসভা কুষ্টিয়ার কুমারখালিতে অনুষ্ঠানের বাড়িতে মারামারি সাবেক সদস্য প্রীতি সমাবেশ করেছে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে গণঅধিকার পরিষদ দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যুদ্ধ-পরিস্থিতির মতো সতর্ক থাকতে বললেন ড. ইউনূস ভরিতে ২ হাজার টাকা বেড়ে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ স্বর্ণের দাম ‘বাজারে সিন্ডিকেট থাকলে রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়’ কারাগারে থাকা সাবেক মন্ত্রীর স্ট্যাটাস ‘ভাইরাল’যা বলল কারা অধিদপ্তর ৪৮ ঘণ্টায় ১০০-র বেশি কম্পন, বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা শেরপুরে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে জমি দখলের অভিযোগ কবিতা – বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে যে কারণে ভারতকে আর ছাড় দেবে না বিজিবি আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের অনুমতি দেওয়া হবে যে শর্তে! সীমান্ত হত্যা বন্ধে যে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ! আমেরিকা দখল কেন অসম্ভব? নির্বাচনে বিএনপি ডাকলে দেশে ফিরবেন মেজর ডালিম, রাশেদরা? ইবি ডিবেটিং সোসাইটির আহবায়ক ইরানী, সদস্য সচিব দিদারুল সাবেক ২ নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা শালিখায় ৩০পিচ ইয়াবাসহ এক মাদক কারবারি আটক কেশবপুরের সাগরদাঁড়ীতে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলার উদ্বোধন