নিউজ ডেক্স
আরও খবর
বিচার বিভাগ থেকে যেন কোনো অবিচার না হয় : আইন উপদেষ্টা
গার্মেন্টস খাতে অস্থিতিশীলতায় প্রতিবেশী দেশের ইন্ধন: শ্রম সচিব
হত্যাকারীদের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে রেখে ভালো কিছু সম্ভব না: মির্জা ফখরুল
পিতাপুত্রের টাকা পাচার
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় কুষ্টিয়ার বিভিন্ন সরকারি কলেজের দাপুটে শিক্ষক মহোদয়দের অনৈতিক কার্যকলাপ
ত্রাণ নিয়ে মানুষ ছুটছে টিএসসিতে
ভারতের বাঁধ ভাঙা পানিতে ডুবছে গ্রামের পর গ্রাম
নতুন বউকে ঈদে সুতা কিনে দেওয়ারও সামর্থ্য নাই
‘এই ছিল কপালে লেখা। এক আগুনে সব শেষ। ১০-১২ লাখ টাকার জিন্স প্যান্ট পুড়ে ছাই। ক্যাশে থাকা ১ লাখ টাকা রক্ষা করতে পারলেও তো সান্ত্বনা পেতাম। মানিব্যাগে ২শর মতো টাকা ছিল। সেটা নিয়ে শনিবার ভোররাতে দোকান থেকে বের হয়েছিলাম। দুই বন্ধু আজ ১ হাজার টাকা দিয়ে গেল। বিয়ে করলাম দেড় মাসও হয়নি। ঘরে নতুন বউ, ঈদে এখন সুতা কিনে দেওয়ারও সামর্থ্য নাই।’
রাজধানীর নিউ সুপারমার্কেটে আগুন লেগে পুড়ে যাওয়া নিজের দোকানের সামনে গতকাল রোববার আহাজারি করে এসব কথা বলছিলেন যুবক রবিউল আউয়াল সাদ্দাম। মার্কেটের তৃতীয় তলায় ‘ড্রিম টাচ গ্যালারি’ নামে দোকানের কর্ণধার তিনি।
মালিকের আহাজারি দেখে কান্না থামাতে পারছিলেন না কর্মচারী সাব্বির। তিনি বলেন, মালপত্র, নগদ টাকা ও ড্রয়ারে রাখা সার্টিফিকেট পুড়ে গেছে। কত স্বপ্ন ছিল। এখন পথের ভিখারি হয়ে গেছি।
চাঁদপুরের কচুয়ার বাসিন্দা রবিউল ব্যবসার পাশাপাশি লেখাপড়া করছেন নর্দান ইউনিভার্সিটিতে। মাঝে কিছুদিন চাকরিও করেছেন। দুই বছর আগে চাকরি ছেড়ে ব্যবসা শুরু করেন। নিউ সুপারমার্কেটে জিন্স প্যান্টের দোকান খুলে বসেন। ব্যবসা মোটামুটি ভালোই চলছিল। কিন্তু শনিবারের অগ্নিকাণ্ডে যেন সব থেমে গেল।
রবিউল জানান, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের কাছ থেকে ধারদেনা করেই প্রতিষ্ঠানটি দাঁড় করিয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে ৮ লাখ টাকা ঋণ আছে। দুই কর্মচারী সাব্বির ও ফরহাদকে নিয়ে দোকানটি চালিয়ে আসছেন। শনিবার ভোরে তাঁর বাবা ফোন করে আগুন লাগার খবরটি জানান। এর পর দৌড়ে দোকানে গিয়ে দেখেন, চারদিকে আগুন। চোখের সামনে সব পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।
মার্কেটের বিসমিল্লাহ পোশাক হাউসের মালিক শহীদুল ইসলামও নিজের পোড়া দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন। তিনি জানান, ২০ বছর ধরে নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসা করছেন। এক দোকানের ওপর পুরো সংসার চলে। ২৩৩ নম্বর দোকানটি তাঁর কেনা। নিজের জায়গায় পোশাক বিক্রির প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছিলেন। বৃদ্ধ মা, সন্তান ও নাতিদের ভরণপোষণ দোকানের আয় থেকে চলে। করোনার কারণে তিন বছর ব্যবসা তেমন ছিল না। এবার একটু লাভের মুখ দেখার আশায় ছিলেন।
শহীদুল বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে দোকানে ছুটে যান। ছেলেদের সঙ্গে ধরাধরি করে কিছু মালপত্র নামানোর চেষ্টা করেন। অনেক মালপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। আগুন থেকে বাঁচিয়ে নামানো মালপত্রের একটি বস্তা কে বা কারা নিয়ে গেছে।
শহীদুলের প্রশ্ন– কেন সিটি করপোরেশন ঈদের আগে মার্কেট সংলগ্ন ফুট ওভারব্রিজটি ভাঙতে গেল? ওই মার্কেটের তৃতীয় তলায় পোশাকের দোকান রয়েছে রোকসানা ও তাঁর স্বামী পারভেজের। দোকানের নাম ‘আয়ান রয়েল ব্র্যান্ড’। স্বামী-স্ত্রী দু’জন দোকানে বসেন। রোকসানা বলেন, ঈদ উপলক্ষে কয়েক লাখ টাকার মালপত্র তুলেছিলেন। সব মিলিয়ে দোকানে ২৫ লাখ টাকার মতো পোশাক ছিল। এখন কীভাবে সংসার চলবে, তা ভেবে কূলকিনারা করতে পারছেন না।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।