বন্যার অজুহাতে আরেক দফা দাম বাড়ল চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে – দৈনিক গণঅধিকার

বন্যার অজুহাতে আরেক দফা দাম বাড়ল চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১২ আগস্ট, ২০২৩ | ৯:০৭
চট্টগ্রামে ‘বন্যার অজুহাতে’ চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে বেড়েছে সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম। পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়। যদিও গত সপ্তাহে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম ছিল খুচরা বাজারে ৪৫ টাকার কম। একইভাবেই দাম বেড়েছে পাইকারি বাজারেও। চাক্তাই খাতুনগঞ্জে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকার বেশি দামে। যদিও গত সপ্তাহে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল ৩৫ টাকার কম। বন্যার অজুহাতে শুধু পেঁয়াজের দাম নয়, দাম বেড়েছে কাঁচামরিচ, ডিম, আদাসহ বেশিরভাগ ভোগ্যপণ্যের। ভোক্তাদের দাবি, প্রবল বর্ষণে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামে। কিন্তু দক্ষিণ চট্টগ্রামে পেঁয়াজের উৎপাদন হয় না। তারপর চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। আসলে সিন্ডিকেটের কারণেই বাড়ছে দাম। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতের কিছু কিছু রাজ্যে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়াও দেশীয় পেঁয়াজ অনেকটা শেষের দিকে। এ কারণে পেঁয়াজের দাম ফের অস্থির হয়ে উঠেছে। পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য। চাইলেই মজুত করে রাখা যায় না। এছাড়া গরম পড়লে পেঁয়াজে দ্রুত পচন ধরে। তবে একটি সূত্র বলেছে, আসলে পেঁয়াজের আমদানিতে কোনো ধরনের সরবরাহ সংকট নেই। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের আমদানিকারক ও আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে পণ্যটির দাম বাড়ায়। তারা মানুষকে জিম্মি করে মুনাফা লুটে নিচ্ছে। সরবরাহ সংকটের ভুয়া অজুহাত তুলে পেঁয়াজের বাজারকে অস্থির করে তুলছে। খাতুনগঞ্জে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারে প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক পেঁয়াজের গাড়ি প্রবেশ করছে। আড়তেও দেখা মিলছে সারি সারি পেঁয়াজের বস্তা। তারপরেও কিছুদিন পর পর ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। শুক্রবার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারি বাজারে ভালো মানের নাসিক পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকায়। একদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৪০-৪২ টাকায়। এছাড়া তুলনামূলক ছোট আকারের পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। সেই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪ টাকা। খুচরা বাজারে ভালোমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা থেকে ৬০ টাকা। কিছু কিছু দোকানে আরও বেশি দামেও বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। আরও একটু নিম্নমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা থেকে ৫৬ টাকায়। জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি-১ (তাহেরপুরী), বারি-২ (রবি মৌসুম), বারি-৩ (খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ফলে বছরজুড়েই কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আর আমদানি করা হয় বাকি চার লাখ টন। মূলত এই আমদানিকৃত চার লাখ টন পেঁয়াজ বাজারের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। ভোজ্যতেলে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেল ১৭৯ টাকা লিটার বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা থেকে ১৯৭ টাকায়। সব ধরনের ভোজ্যতেল সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, সরকার দাম বাড়ালে ব্যবসায়ীরা মিনিটের মধ্যে কার্যকর করে। আর দাম কমালে দিনের পর দিনও কার্যকর হয় না। সরকার নির্ধারিত দাম কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকে। নির্ধারিত দাম কার্যকর হয়েছে কি না, তা যাচাই-বাছাই করারও কেউ নেই। সাধারণ মানুষ অসহায় অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে। অপরদিকে কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি রসুন ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আদা বিক্রি হচ্ছে আগের দরেই। শুক্রবার প্রতিকেজি মিয়ানমারের আদা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা এবং ইন্দোনেশিয়ার আদা ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়। খুচরা বাজারে রসুন বিক্রি হচ্ছে কেজি ২২০ টাকায়। খাতুনগঞ্জের আড়তদার কামরুল ইসলাম বলেন, পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমদানিকারকরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি ও বন্যার কারণে বিভিন্ন উপজেলা থেকে মুরগির গাড়ি আসতে পারছে না। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় কয়েকশ মুরগির খামার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে শহরে মুরগি ও ডিমের সংকট দেখা দেয়। মুরগির দাম বাড়ছে। বন্যার মধ্যে এ দুটি পণ্যের চাহিদাও বেড়ে গেছে। নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল ১৭০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে শুক্রবার ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয় ১৯০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি বিক্রি হয় ৩২০ টাকায়। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা দরে। তবে কিছু কিছু এলাকায় আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। কর্ণফুলী বাজারে প্রতিকেজি হাড় ছাড়া গরুর মাংস ৯৫০ টাকা ও হাড়সহ গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজারেও আগুন। বাজারে প্রতিকেজি পাবদা মাছ ৪৫০ থেকে ৫শ টাকা, ছোট আকারের রূপচাঁদা ৭শ টাকা ও বড় রূপচাঁদা হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি তেলাপিয়া ২শ, পাঙ্গাশ ১৮০ থেকে ১৯০, আকারভেদে প্রতিকেজি রুই ২৬০ থেকে ৩শ, কাতল ৩২০ থেকে ৪শ, মৃগেল ২২০, কোরাল ৮শ ও চিংড়ি ৬৫০ থেকে ৭শ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারের ইলিশ ১২শ থেকে ১৩শ টাকা, ছোট ইলিশ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
নারায়ণগঞ্জ শহরে যানজট নিরসনে যৌথ অভিযান কার্যক্রম চালুর অপেক্ষায় আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন আলিফ হত্যার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের বিক্ষোভ ২৮ কেজি গাঁজাসহ ০২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র জুলাই বিপ্লবে আহত সুজনকে আর্থিক অনুদান দিলেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা প্রশাসন শেরপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা ঠাকুরগাঁও ২ টাকায় চা-নাস্তা বিক্রি করেন নুর ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মাদকসহ গ্রেপ্তার ১ জন নাগরপুর একই উঠানে মসজিদ মন্দির ৫৪ বছর ধরে চলে পূজার কাজ আবরারের ৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে কুষ্টিয়াতে ছাত্র সমাবেশ ও দোয়ার অনুষ্ঠান পার্বত্য চট্টগ্রামে ইন্টারনেট বন্ধের কোনো নির্দেশনা নেই বিচার বিভাগ থেকে যেন কোনো অবিচার না হয় : আইন উপদেষ্টা গার্মেন্টস খাতে অস্থিতিশীলতায় প্রতিবেশী দেশের ইন্ধন: শ্রম সচিব হত্যাকারীদের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে রেখে ভালো কিছু সম্ভব না: মির্জা ফখরুল চাটমোহরে ছাত্রদল নেতা গুলিবিদ্ধ, কাটা হয়েছে পায়ের রগ দেশ গঠনের বার্তা দেবেন তারেক রহমান পিতাপুত্রের টাকা পাচার যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে: মুজিবুর রহমান