
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যুদ্ধ-পরিস্থিতির মতো সতর্ক থাকতে বললেন ড. ইউনূস

কারাগারে থাকা সাবেক মন্ত্রীর স্ট্যাটাস ‘ভাইরাল’যা বলল কারা অধিদপ্তর

যে কারণে ভারতকে আর ছাড় দেবে না বিজিবি

সীমান্ত হত্যা বন্ধে যে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ!

সাবেক ২ নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল কোথায়!

ইরান দূতাবাসের ঢাকায় ‘দেশে নয়া ইসলামি সভ্যতা গঠনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
বিচারপতিদের মতো সব সুবিধা চায় ইসি

সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিরা পেনশন, ভ্রমণ ভাতা, চিকিৎসাসহ অন্যান্য যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন, একই সুবিধা চান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনাররা (ইসি)। এক্ষেত্রে সিইসির আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং চার কমিশনার হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের সমান সুযোগ পাবেন। এসব সুযোগ-সুবিধার বিধান রেখে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।
আজ অনুষ্ঠেয় কমিশন সভায় এ খসড়া আইন অনুমোদনের জন্য তোলা হচ্ছে। কমিশনের অনুমোদন পেলে এটি আইন আকারে পাশের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ওই আইন পাশ হলে বিচারপতিদের মতো ৫ বছর পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করলে পেনশন সুবিধা, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে দেওয়া বক্তৃতা ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম কমিশন সভায় নির্বাচন কমিশনারদের আইনের খসড়া উত্থাপনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি বৈঠকের আগে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, আজ অনুষ্ঠেয় কমিশন সভায় নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন সংশোধন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের উদ্দেশ্যে প্যানেল প্রস্তুতের নির্দেশিকাসহ ছয়টি এজেন্ডা রয়েছে।
সূত্র জানায়, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের কারণে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার সুযোগ-সুবিধাসংক্রান্ত অধ্যাদেশ ‘দ্য চিফ ইলেকশন কমিশনার অ্যান্ড ইলেকশন কমিশনার (রিমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৩ এর কার্যকারিতা হারিয়েছে। মূলত ওই কারণে নতুন করে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) আইন’ এর খসড়া তৈরি করেছে বর্তমান কমিশন। সিইসি ও নির্বাচন কমিশনাররা নিজেরা কয়েক দফা বৈঠক করে এ খসড়া তৈরি করেছেন। সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে সিইসি আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং নির্বাচন কমিশনাররা হাইকোর্টের বিচারপতির সমান বেতন ও মর্যাদা পান। তবে বিচারপতিরা অবসরে গেলে পেনশন পান। নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালনের কারণে তারা কোনো পেনশন পান না। এছাড়াও বিচারপতিরা কিছু সুযোগ-সুবিধা পান, যা নির্বাচন কমিশনাররা পান না। নতুন আইন পাশ হলে সেসব সুবিধা ও প্রাধিকার পাবেন নির্বাচন কমিশনাররা।
ইসির সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, ‘সুপ্রিমকোর্ট জাজেস (রিমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৮’ এ বিচারপতিদের যেসব সুযোগ-সুবিধার কথা বলা আছে, নির্বাচন কমিশনারদের অধ্যাদেশে শুধু সেগুলোই পাওয়ার কথা বলা আছে। ওই অধ্যাদেশের বদলে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের বিচারক (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) আইন, ২০২১’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এ হিসাবে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের বিচারক (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) আইন, ২০২১’ এ উল্লিখিত যেসব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে শুধু সেগুলোই নির্বাচন কমিশনারদের প্রাপ্য হওয়ার কথা। কিন্তু কমিশন সভার কার্যপত্রে আইনের যে খসড়া অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে সেখানে বিচারপতিদের বেতন, সুযোগ-সুবিধাসংক্রান্ত তিনটি পৃথক আইনের কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে-বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের বিচারক (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) আইন, ২০২১; বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের বিচারক (ভ্রমণ ভাতা) আইন, ২০২১ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইন, ২০২৩। ওই পৃথক তিন আইনের আওতায় বিচারপতিরা ভাতা, চিকিৎসা, ভ্রমণ, পেনশন ও অন্যান্য যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন, সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার আইনে তার সবই প্রাপ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। খসড়া আইনের দফা-৪ এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আপাতত বলবৎ প্রযোজ্য আইনে সুপ্রিমকোর্টের বিচারকগণ যেসব ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি প্রাপ্ত হয়ে থাকেন, অনুরূপ ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারগণও পাবেন।’ ভ্রমণ ভাতার ক্ষেত্রেও একই বিধান উল্লেখ করা হয়েছে।
আইনের খসড়ায় বলা হয়, উল্লিখিত পৃথক তিনটি আইনের নাম উল্লেখ না করে, বিদ্যমান সব আইনের আওতায় বিচারপতিরা যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন সেগুলো নির্বাচন কমিশনাররা পাবেন। এর যৌক্তিকতা হিসাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, বিচারপতিদের সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে নতুন আইন করা হলে, সেইসব সুবিধা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্বাচন কমিশনাররা যাতে পেতে পারেন সেই লক্ষ্য রেখেই নতুন এ প্রস্তাব তোলা হচ্ছে।
ইসির কর্মকর্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইনের তৃতীয় অধ্যায়ে পেনশনের কথা উল্লেখ রয়েছে। কোনো বিচারপতি ৫ বছর কর্মকাল সমাপ্তির পর অবসর গ্রহণের বয়স সীমায় গেলে তিনি পেনশনযোগ্য হন। এই হিসাবে নির্বাচন কমিশনাররাও ৫ বছর মেয়াদ পূর্ণ করলে তারাও পেনশন পাবেন। নির্বাচন কমিশনে যোগ দেওয়ার আগের চাকরি থেকে যে পেনশন পেয়েছেন সেটার কী হবে বা আগে পেনশন পেলে নতুন করে আবার পাওয়ার যোগ্য হবেন কীনা-সে বিষয়ে খসড়া আইনে উল্লেখ নেই। তবে সুশীল সমাজের কেউ যদি নির্বাচন কমিশনার হন, তাহলে তার পেনশন পাওয়া নিয়ে এসব প্রশ্ন উঠবে না।
এছাড়া খসড়া আইনে বিচারপতিদের কর্মের সহায়ক শর্তাবলিসহ অন্যান্য পারিতোষিক, ভাতা, প্রাধিকার ও সুবিধা যেই হারে পেয়ে থাকেন সিইসি ও নির্বাচন কমিশনাররাও সেই হারে পাবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।