নিউজ ডেক্স
আরও খবর
দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল কোথায়!
ইরান দূতাবাসের ঢাকায় ‘দেশে নয়া ইসলামি সভ্যতা গঠনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
এই দেশে আর কোনো মাইনরিটি-মেজরিটির কথা শুনতে চাই না
মেয়াদ বাড়লো নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের
কম্বল কিনতে ৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে ত্রাণ মন্ত্রণালয়
মোংলা বন্দরে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
ঢাকা ওয়াসায় পাস ব্যাতীত প্রবেশ নিষেধ
মুক্তিযোদ্ধারা মানবেতর জীবন কাটাবেন সেটা হতে পারে না
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন কোনো মুক্তিযোদ্ধা মানবেতর জীবনযাপন করবেন না। একজন মুক্তিযোদ্ধা ভিক্ষা করবে বা রিক্সা চালাবে বা মানবেতর জীবন যাপন করবে, অন্তত আমি জাতির পিতার কন্যা যখন ক্ষমতায় এটা কখনো হতে পারে না। এই দেশ আমাদের, রক্ত দিয়ে আমরা স্বাধীনতা এনেছি জাতির পিতার নেতৃত্বে। কাজেই এই দেশকে আমরা সোনার বাংলাদেশ হিসেবে ইনশাল্লাহ গড়ে তুলব।
বুধবার তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অসচ্ছল প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত ঘর ‘বীর নিবাস’- এর চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এই বাংলাদেশের ওপর আর কারও কালো থাবা যেন না পড়ে সেজন্য দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকারও আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে অনুষ্ঠানে যাদের ত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে তরুণ প্রজন্মের সামনে তা তুলে ধরতে এবং বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস জানাতে সারাদেশের অনাবিষ্কৃত বধ্যভূমিগুলো খুঁজে বের করে সেগুলো সংরক্ষণের জন্যও সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে নির্দেশ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, কেউ এটাকে আর থামাতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়েই এই বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আমরা গড়ে তুলব। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। এই বাংলাদেশের ওপর আর কারও কাল থাবা না পড়ে সেজন্য দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে। এই দেশ আমাদের, রক্ত দিয়ে আমরা স্বাধীনতা এনেছি জাতির পিতার নেতৃত্বে। কাজেই এই দেশকে আমরা সোনার বাংলাদেশ হিসেবে ইনশাল্লাহ গড়ে তুলব।
অনুষ্ঠান থেকে পাঁচ জেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে পাঁচ হাজার বাড়ির চাবি হস্তান্তর করেন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এবং কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল জেলা এর সঙ্গে যুক্ত ছিল।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল জেলার জেলা প্রশাসকগণ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ‘বীর নিবাস’-এর চাবি হস্তান্তর করেন। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খান এমপি। অনুষ্ঠানে ‘বীর নিবাস’র ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
দুটি শয়নকক্ষ, একটি বসার ঘর, একটি রান্নাঘর এবং একটি করিডোরসহ একতলা বিশিষ্ট প্রতিটি ‘বীর নিবাস’ দেশের জাতীয় পতাকার রঙে লাল-সবুজে রং করা। এছাড়া রান্নাঘরের পাশে একটি সিমেন্টের উঠান, একটি নলকূপ, একটি বাথরুম এবং গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির শেড রয়েছে। এর আগে ২০২১ সালের ১৬ মার্চ, সরকার তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ ও প্রয়াত যুদ্ধ বীরদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ৩০ হাজার বাড়ি নির্মাণের জন্য ৪ হাজার ১২৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করে।
আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি এই ভাতা বর্তমানে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাছাড়া যাদের ঘর বাড়ি নাই এবং মানবেতর জীবন যাপন করছিল সেটা আমাদের জন্য একটা লজ্জার ব্যাপার। সেজন্য আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ঘর বাড়ি তৈরি করে তাদের জীবন জীবিকা এবং চিকিৎসা-যাতায়াতসহ নানা সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, আজকে ‘বীর নিবাস’ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। আমি আশা করি আরও যারা বীর মুক্তিযোদ্ধা বাকি আছেন তাদের সকলের জন্য এই ঘর তৈরি করে দেয়া হবে। আর সাধারণ গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষের জন্য সরকারতো ঘর করে দিচ্ছেই। আমি আজকে অত্যন্ত আনন্দিত আজকে ৫ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার মাঝে বীর নিবাস হস্তান্তর করা হচ্ছে। বর্তমানে ১৭ হাজার ৬৬০টি বীর নিবাসের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে চলমান রয়েছে। আশাকরি এ বছরের মধ্যে ৩০ হাজার বীর নিবাস নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে। যদিও করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও স্যাঙ্কশনের কারণে আমাদের খুবই হিসেব করে চলতে হচ্ছে।
বিশ^ মন্দার অভিঘাত থেকে বাঁচতে দেশবাসীকে বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানির ব্যবহারে মিতব্যয়িতা অবলম্বনের পাশাপাশি প্রতি ইঞ্চি জমি চাষাবাদের আওতায় আনার মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোয় দেশবাসীর প্রতি তার আহ্বান এ সময় পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের ভবিষ্যতে যেন খাদ্যের কোনো অভাব না হয় সেজন্যই আমরা আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। সেজন্যই আমার এই আহ্বান যে যেখানে পারেন প্রত্যেকেই কিছু না কিছু উৎপাদন করেন। নিজে খান এবং অন্যকেও খাওয়ান।
সরকারপ্রধান বলেন, আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত যেন অনলাইনে যোগাযোগ করা যায় সে ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। তাছাড়া রাস্তা ঘাট পুল ব্রিজ করেছি, এসবের উন্নতি করে দিয়েছি। বাংলাদেশ এই ১৪ বছরে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। তিনি বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী আমরা উদযাপন করেছি, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি, রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়ন করেছি এবং আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। যে দেশকে জাতির পিতা মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধ বিধবস্ত দেশ গড়ে তুলে মাত্র সাড়ে ৩ বছরে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা এনে দিয়ে গিয়েছিলেন। জাতির পিতার পদাংক অনুসরণ করেই আমরা আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইনশাল্লাহ ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব। আর ২১০০ সালের বাংলাদেশ কেমন হবে সেজন্য ডেল্টা প্ল্যানও আমরা করে দিয়েছি। এই বদ্বীপ অঞ্চলের মানুষ যেন বংশ পরম্পরায় সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে এবং উন্নত জীবন পায় সেজন্যই এই পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি।
‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে যে বিজয় অর্জন করেছি, সেটা যেন মানুষ ভুলে গিয়েছিল’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ’৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে দায়মুক্তি দিয়ে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্য দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ছিল, তারাই প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, উপদেষ্টা হয়ে ক্ষমতায় বসেন। স্বাভাবিকভাবে তখন মুক্তিযোদ্ধারা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। এমনকি মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযোদ্ধার পরিবার হলে চাকরি দেওয়া হতো না। এমন দুর্ভাগ্যজনক পরিবেশ ছিল দীর্ঘ ২১ বছর।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতা যাওয়ার জন্য এই ১৫ ফেব্রুয়ারি একটা ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিল। যে নির্বাচনে ২ শতাংশ ভোটও পড়েনি। সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে খালেদা জিয়া নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বার ক্ষমতা এসেছে এই ঘোষণা দেয়। কিন্তু দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। কারণ, বাংলাদেশের মানুষ তাদের ভোটের অধিকার নিয়ে অনেক সচেতন।
তাদের ভোট চুরি হয়েছিল বলে সেখানে আন্দোলন হয়, সেই আন্দোলনের ফলে খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন করে ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। সেজন্য ১৫ ফেব্রুয়ারি আমাদের জন্য গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করার একটা দিন। এছাড়া স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন এরশাদ সরকার এই ১৫ ফেব্রুয়ারিতেই তাকে এবং আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ ১৫ দলীয় ঐক্যজোটের প্রায় ৪০ জন নেতাকে গ্রেপ্তার ও বন্দি করে বলেও তিনি জানান।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দলমত নির্বিশেষে সব বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য সম্মানের ব্যবস্থা করে দিয়েছে এবং মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী বিদেশী বন্ধু এবং মিত্র শক্তির সদস্যদেরও সম্মান দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নানান চড়াই-উৎরাই পার হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিয়েছি। দলমত নির্বিশেষে সব মুক্তিযোদ্ধার জন্য এই সম্মানের ব্যবস্থা আমরা করেছি। ’৭১ সালে যারা জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে যুদ্ধ করে আমাদের বিজয় এনে দিয়েছেন, তাদের সম্মান দেখানো আমাদের কর্তব্য মনে করি।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যেন মারা গেলে রাষ্ট্রীয় সম্মান পায়, সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এ ছাড়া আমরা সরকারে আসার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের সন্তানরা যেন বংশ পরম্পরায় প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পায়, সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধাদের অনলাইনে ভাতা প্রদান এবং অন্যান্য সুবিধা প্রদানের জন্য ম্যানেজমন্টে ইনফর্মেশন সিস্টেম (এমআইএস) নামে একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজও গড়ে তুলেছে। এটি জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেজের সঙ্গেও সংযুক্ত রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এখনো অনেক জায়গা অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে সেগুলো খুঁজে বের করবেন। ইতোধ্যে প্রায় ২০ হাজার সমাধিস্থল সংরক্ষণ করার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। ২৯৩টি উপজেলার ৩৬০টি স্থানে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ বা জাদুঘর নির্মাণ করা হয়েছে এবং প্রত্যেকটি উপজেলায় আলাদা মুক্তিযুদ্ধ কমপ্লেক্স করে দিচ্ছি। যাতে করে মানুষ জানতে পারে এই যুদ্ধটা আমাদের জন্য কত গৌরবের ছিল বা কাদের আত্মত্যাগে এই স্বাধীনতা বা কাদের আত্মত্যাগে আজকে এই সম্মানটা পাচ্ছি সেটা যেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে মানুষ স্মরণ করতে পারে।
মাশরাফির বিনয়ে মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রী ॥ বীর মুক্তিযোদ্ধার সম্মানে নিজের বসার আসন থেকে সরে গিয়ে পেছনের সারিতে বসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ধন্যবাদ পেলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। প্রধানমন্ত্রী মাশরাফির নাম উল্লেখ করে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলে উপস্থিতি সকলে করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানান।
বুধবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন ‘অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় ‘বীর নিবাস’র চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল প্রান্তে সংযুক্ত ছিলেন। পরে তিনি নড়াইল প্রান্তে বীর নিবাসপ্রাপ্ত উপকারভোগী মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
নড়াইল জেলা প্রান্তে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। তিনি প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে উপকারভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুস সবুরকে অনুভূতি ব্যক্ত করার জন্য মাইক্রোফোন হাতে তুলে দেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুস সবুর মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে বক্তব্য শুরু করলে কিছুক্ষণ পর প্রধানমন্ত্রী গণভবন প্রান্ত থেকে তাকে বসতে দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। এসময় জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান, সংসদ সদস্য মাশরাফিসহ সামনের সারির কয়েকজন নিজেদের আসন ছেড়ে দিয়ে তাকে বসার জায়গা করে দিতে ব্যস্ত হন।
এ সময় জেলা প্রশাসক তার চেয়ারে বসার আহ্বান জানালে শেখ আব্দুস সবুর কিছুটা অনীহা প্রকাশ করে সে চেয়ারে বসেন। এতে জেলা প্রশাসক কিছুটা ডানপাশে সরে গেলেও সামনের সারিতে সবার স্থান সংকুলান হচ্ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে পাশে থাকা মাশরাফি বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নিজের আসনটি ছেড়ে দিয়ে নিজে গিয়ে পেছনের সারিতে বসেন এবং জেলা প্রশাসককে তার ছেড়ে দেওয়া চেয়ারে বসার আহ্বান জানান।
এ দৃশ্য দেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন প্রান্ত থেকে বলেন, ‘ওনাকে বসতে দাও, বসাও। আপনি বসে বলেন। পরে তিনি মাশরাফির নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘ধন্যবাদ মাশরাফি’।
এর আগে শেখ আব্দুস সবুর যখন বক্তব্য দিতে আসেন তখনই মাশরাফি তাকে নিজের আসনে বসে বক্তব্য দেওয়ার অনুরোধ করেন। মাশরাফি আব্দুস সবুরকে বলেন, ‘আপনি এই জায়গায় বসুন। আমি পেছনে বসি।’ তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সবুর মাশরাফির আহ্বানে সাড়া না দিয়ে দাঁড়িয়ে বক্তব্য শুরু করেন। বক্তব্য শুরুর কিছুক্ষণ পরই প্রধানমন্ত্রী তাকে আসনে বসে বক্তব্য দেওয়ার আহ্বান জানান।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।