নিউজ ডেক্স
আরও খবর
দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল কোথায়!
ইরান দূতাবাসের ঢাকায় ‘দেশে নয়া ইসলামি সভ্যতা গঠনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
এই দেশে আর কোনো মাইনরিটি-মেজরিটির কথা শুনতে চাই না
মেয়াদ বাড়লো নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের
কম্বল কিনতে ৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে ত্রাণ মন্ত্রণালয়
মোংলা বন্দরে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
ঢাকা ওয়াসায় পাস ব্যাতীত প্রবেশ নিষেধ
সিন্ডিকেটের কবলে চট্টগ্রামের ভোগ্যপণ্যের বাজার
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে রমজানের আগেই ভোগ্যপণ্যের বাজার সিন্ডিকেটের কবলে। প্রতিটি ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে। রমজান মাসে চিনি, ছোলাসহ কিছু খাদ্যপণ্যের অতিরিক্ত চাহিদা থাকে। এতে বেড়ে যায় দাম। ডলার সংকট, এলসি সমস্যা যোগ হওয়ায় এবার তাতে যোগ হয়েছে বাড়তি চাপ।
সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও কয়েকটি অসাধু সিন্ডিকেট রমজান মাসকে পুঁজি করে অস্থির করে তুলছে ভোগ্যপণ্যের বাজার। বিশেষ করে ভোজ্যতেল, ছোলা, ডাল, মটর, পেঁয়াজ, মসলা, চিনি ও খেজুরের দাম এরই মধ্যে বেড়ে গেছে। রমজান পর্যন্ত আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ভোক্তারা।
এখানকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডলার সংকটের কারণে আমদানি পরবর্তী কিছু ভোগ্যপণ্যের খালাস নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তবে সরকারি নানা সিদ্ধান্তের তা কাটতে শুরু করেছে। বড় বড় আমদানিকারকরাও নতুন করে এলসি (ঋণপত্র) খুলেছেন। বিশেষ করে ভোজ্যতেল, চিনি ও ছোলার সংকট হবে না বলে আশা করছেন খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। এদিকে মাছ ও মাংসের দাম বাড়ার ফলে ক্রেতারা এখন ঝুঁকছেন সবজির দিকে। ফলে সবজির দামও এখন লাগামহীন।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি করা সব ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। চড়া হয়ে উঠছে ডাল ও ছোলার বাজার। দেশের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের ডালের দাম ৫ টাকা থেকে ১০ পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা ইচ্ছাকৃত ডালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। পাইকারি বাজারে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা কেজি দরে, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৭৬ টাকা। সে হিসাবে দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৯ টাকার বেশি। আর খুচরা বাজারে ছোলা বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৯০ টাকার বেশি দামে।
দেশি মসুর ডাল বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে, যা তিন সপ্তাহ আগে ছিল ১১৮ টাকা। ভারতের দিল্লি সুপার ডাল বেচাকেনা হচ্ছে ২৩১ টাকা কেজি দরে, যা ১৫ দিন আগে ছিল ১২৯ টাকা। মসুর ডাল বেচাকেনা হচ্ছে ৮৮-৮৯ টাকা কেজি দরে, যা ১০ দিন আগে ছিল ৮৬ টাকা। সে হিসাবে দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৩ টাকা। ভাঙা মসুর ডাল বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে, যা কয়েকদিন আগে ছিল ৭৬ টাকা। সে হিসাবে দাম বেড়েছে ৪ টাকা। খেসারি ডাল বেচাকেনা হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৬৬-৬৭ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজির দাম বেড়েছে ৩-৪ টাকা। রমজান মাসে ছোলার পাশাপাশি খেসারি ডালের চাহিদাও বেড়ে যায়।
নগরীর কয়েকটি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, রমজানে বহুল ব্যবহৃত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল (বোতল) ডিলার পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮৩ টাকা আর খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করছে ১৮৬ টাকা। খুচরা বাজারে পাঁচ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা। পাইকারি বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে ৮৭০ থেকে ৮৮০ টাকা। এ ছাড়া চিনি পাইকারি বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা আর খুচরা ১১৫ টাকা থেকে ১১৮টাকায়। ভারতীয় গম বিক্রি হচ্ছে প্রতি মন ১ হাজার ৮৫০ টাকায়।
অন্যদিকে সয়াবিন তেল প্রতি মন বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৬৮০ টাকা এবং পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৬০০ টাকায়। চিনি প্রতি মন ৩ হাজার ৯৫০ টাকা, ভারতীয় মরিচ কেজি ৪৬৯ টাকা, হলুদ ১১০ টাকা, রসুন ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভোগ্যপণ্যের মধ্যে শুধু পেঁয়াজের দাম কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। ভালোমানের ভারতীয় পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৮ টাকা। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা দরে। দেশি পেঁয়াজ আরও ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।
এক সপ্তাহে বেড়েছে চালের দাম। প্রতি বস্তা মোটা সিদ্ধ চালের দাম ছিল ২ হাজার টাকা। চলতি সপ্তাহে তা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ১০০ টাকা। সিদ্ধ মিনিকেটের দাম আগে ছিল ২ হাজার ৭০০ টাকা। এ সপ্তাহে তা ২ হাজার ৮০০ টাকা। গুটি স্বর্ণার দাম ছিল ২ হাজার ২০০ টাকা, এখন ২ হাজার ৩০০ টাকা। ভারতীয় স্বর্ণার দাম ২ হাজার ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার ৪০০ টাকায় উঠে গেছে। এ ছাড়া গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে পারি সিদ্ধ জাতের চালের দাম ২ হাজার ৪৫০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৫০ টাকায়। এছাড়া খুচরা বাজারেও অস্থির চালের বাজার।
খাতুনগঞ্জের আড়তদার কামরুল হায়দার বলেন, রমজানকেন্দ্রিক সব পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। এখানে আমাদের হাত নেই। আমরা আমদানিকারকদের কাছ থেকে কিনে বিক্রি করি। আমদানিকারকরা দাম বাড়ালে আমাদেরও অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করতে হয়।
বাজারদর : চট্টগ্রামে এবার ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ার বেড়েছে কাঁচা মরিচের দামও। ২ সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যটির কেজিতে দাম বেড়েছে ২০ টাকা। ২ সপ্তাহ আগেও কাঁচামরিচের কেজি বিক্রি হয়েছিল ১শ টাকায়। বর্তমানে পণ্যটির দাম গিয়ে ঠেকেছে ১২০ টাকায়। মাছ ও মাংসের দাম বাড়ায় প্রভাব পড়ছে সবজির বাজারে। বাজারে প্রতি কেজি ফুলকপি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ২৫ টাকা, লাউ ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, করলা ১১০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা ও পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি পাঙ্গাশ ১৭০ টাকা, শিং ৫শ টাকা, চিংড়ি ৬শ টাকা, পাবদা ৪৫০ টাকা, শোল ৪৮০ থেকে ৫শ টাকা, রুই ২৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, কাতলা ৩শ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে হাড়সহ গরুর মাংস ৬৮০ থেকে ৭২০ টাকা। আর হাড়ছাড়া গরুর মাংস ৮শ থেকে ৮৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।