নিউজ ডেক্স                            
                        আরও খবর
                                ভোরে নীলা মার্কেটে হাঁসের মাংস খেতে যান আসিফ মাহমুদ, বন্ধ থাকলে যান ওয়েস্টিনে
                                অস্ত্র বের করলেই গুলি: সিএমপি কমিশনার
                                সাত মাসে ২৫৯ শিশু খুন নির্যাতনও বাড়ছে
                                স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে মন্তব্য করায় অলিকে হত্যার পর লাশ ৮ টুকরো করেন সাদেক: র্যাব
                                পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় সাংবাদিককে হত্যার বিষয়ে যা জানা গেল
                                সাংবাদিক তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা নিয়ে যা জানা যাচ্ছে
                                প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দেয়া চিঠি পেয়েছে নির্বাচন কমিশন
স্বল্প আয়ের মানুষের আমানত কমেছে
                             
                                               
                    
                         বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে বিশেষ সুবিধায় খোলা হিসাবের বিপরীতে আমানতের প্রবাহ কমে গেছে। কৃষক, গার্মেন্টস শ্রমিক, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বিশেষ সুবিধায় ব্যাংকে হিসাব খুলতে পারেন। এর আওতায় ব্যাংকগুলোতে ২ কোটি ৬২ লাখ হিসাব খোলা হয়েছে। এসব হিসাবে আমানত বৃদ্ধির হার তিন মাসে কমেছে প্রায় সোয়া ১১ শতাংশ। এক বছরের হিসাবে কমেছে প্রায় ৬ শতাংশ। একই সময়ে নতুন হিসাব খোলার সংখ্যাও কমেছে। রোববার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনটি প্রতি মাস পরপর প্রকাশ করা হয়।
সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যপণ্যের দামে লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও স্বল্প আয়ের মানুষের আয় কমার কারণে তাদের সঞ্চয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ফলে তারা আগের মতো বাড়তি সঞ্চয় করতে পারছেন না। যে কারণে সঞ্চয়ের প্রবণতা কমে যাচ্ছে। যে আয় করেন তা দিয়ে সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোতে মোট আমানতের প্রবৃদ্ধিতেও নেতিবাচক অবস্থা বিরাজ করছে। এখন জানা গেল, বিশেষ সুবিধায় খোলা দরিদ্র মানুষের হিসাবেও আমানতের প্রবৃদ্ধি কমছে। সরকারি হিসাবেই ডিসেম্বর পর্যন্ত জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে পৌনে ৯ শতাংশ। একই সময়ে গড়ে আয় বেড়েছে সোয়া ৭ শতাংশ। জীবনযাত্রায় ঘাটতি থাকছে প্রায় দেড় শতাংশ। এতে মানুষের সঞ্চয় কমেছে।
বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, মন্দায় সবচেয়ে বেশি আয় কমেছে স্বল্প আয়ের মানুষের। কর্ম হারানোর প্রবণতাও তাদের বেশি। এতে তাদের জীবনযাত্রার মান কমেছে। সঞ্চয়ে পড়েছে টান।
স্বল্প আয়ের মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে তাদের জন্য বিশেষ সুবিধায় হিসাব খোলা হচ্ছে। বিশেষ করে ১০, ২০, ৫০ বা ১০০ টাকা জমা দিয়ে এসব হিসাব খোলা যায়। এগুলোর বিপরীতে কোনো ফি নেওয়া হয় না। এসব হিসাবে গ্রাহকরা সব ধরনের ব্যাংকিং সুবিধা নিতে পারেন। তাদের কম সুদে ঋণ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুটি বিশেষ তহবিল গঠন করেছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ২০০ কোটি টাকা ও অপরটি ৫০০ কোটি টাকার। এসব তহবিল থেকে তাদের কম সুদে বিনা জামানতে ঋণ দেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ওইসব হিসাবে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে আমানত বেড়েছিল প্রায় ১৫ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে বেড়েছে মাত্র ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে আমানত কমেছে প্রায় সোয়া ১১ শতাংশ। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে হিসাব খোলার হার বেড়েছিল ২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে বেড়েছে মাত্র ১ দশমিক ১৮ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে হিসাব খোলার হার এক শতাংশের বেশি কমেছে। এক বছরে হিসাব খোলা কমেছে প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে হিসাব সংখ্যা বেড়েছিল ১০ দশমিক ৬৩ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বরে বেড়েছে মাত্র ৫ শতাংশ।
সূত্র জানায়, করোনার পর থেকে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বৈশ্বিক মন্দার নেতিবাচক প্রভাব দেশের বাজারেও পড়েছে। এতে অনেক গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া নতুন গার্মেন্টসহ অন্যান্য শিল্পপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে না। যে কারণে এর আওতায় হিসাব খোলার সংখ্যা কমেছে।
প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এসব গ্রাহকের আমানত ছিল ৩ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে তা বেড়ে দাড়িয়েছে ৩ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে আমানত প্রবাহ বেড়েছে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে আমানত ছিল ২ হাজার ৯৫৮ কোটি টাকা। এক বছরের হিসাবে আমানত বেড়েছে ২০ দশমিক ৫২ শতাংশ। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে তিন মাসে আমানত বেড়েছিল প্রায় ১৫ শতাংশ। এক বছরের হিসাবে বেড়েছিল ২৬ দশমিক ২৩ শতাংশ। তিন মাসের হিসাব আমানত কমেছে সোয়া ১১ শতাংশ এবং এক বছরের হিসাবে কমেছে প্রায় ৬ শতাংশ।
গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর সময়ে তিন মাসে কৃষকের আমানত কমেছে সাড়ে ৬ শতাংশ, আগের বছরের একই সময়ে তা বেড়েছিল ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বরে অতি দরিদ্রদের আমানত বেড়েছিল ৯ দশমিক ১৪ শতাংশ। ২০২১ সালের একই সময়ে বেড়েছিল ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। তবে এক বছরের হিসাবে তাদের আমানত কমেছে ৬ দশমিক ১১ শতাংশ।
আলোচ্য তিন মাসের হিসাবে মুক্তিযোদ্ধাদের আমানত বেড়েছে সাড়ে ৮ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে বেড়েছিল সাড়ে ২৩ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বরে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সুবিধাপ্রাপ্তদের আমানত বেড়েছিল প্রায় ২ শতাংশ। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে তা বেড়েছিল সোয়া ১৯ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে গার্মেন্ট শ্রমিক আমানত বেড়েছে সোয়া ২ শতাংশ।  
                    
                    
                                                            
                    
                                    


দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।