খালেদা পূর্ণ মুক্তি পেলে রাজনীতি করার প্রসঙ্গ আসবে

১ মার্চ, ২০২৩ | ১০:৫৭ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , দৈনিক গণঅধিকার

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পূর্ণ মুক্তি পেলে রাজনীতি করার প্রসঙ্গ আসবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখন সাময়িক মুক্তিতে, আমাদের ফাইট হচ্ছে ওনার পরিপূর্ণ মুক্তি। ওনার মুক্তিটা আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। ওনার রাজনীতিতে ফিরে আসার ব্যাপারটা মুক্তির ওপর নির্ভর করবে। ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপি দেশে এত সংকট দেখলেও সরকার না কি কোনো সংকট দেখে না। তবে এ সরকারের সংকট না দেখার কারণ হচ্ছে, তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। কারণ, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে সংসদে তাদের জবাবদিহিতা থাকত। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হতো। ফখরুল বলেন, দেশে চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট একটি জাতীয় সংকটে পরিণত হয়েছে। এই দুর্বিষহ জাতীয় সংকট থেকে মুক্তি পেতে জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে রাজনৈতিক মতপার্থক্য ভুলে বর্তমান সরকারকে হটাতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে অর্থনৈতিক সংকট সমাধান সম্ভব নয়। কারণ এরা এতটাই দুর্নীতিপরায়ণ হয়ে গেছে যে এরা ব্যাংকগুলোকে শেষ করে দিয়েছে। এরা একটা মিথ্যা প্রচারণা দিয়ে অর্থনীতিকে সচল রাখার চেষ্টা করছে। এই সংকটের একটাই সমাধান, তা হলো এ সরকারকে সরে যেতে হবে। এ সরকার সরে গেলেই দেশে ট্রাস্ট ক্রেডিবিলিটি অবস্থা সৃষ্টি হবে। তখন এই সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য যোগ্য ব্যক্তি, যারা কাজ করতে পারেন, তাদেরকে নিয়ে এসে সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করা সম্ভব হবে। ফখরুল বলেন, দেশে চারদিকে শুধু হাহাকার, নাই আর নাই। সমগ্র দেশটিই যেন নাই এর রাজ্যে পরিণত হয়েছে। এই হাহাকার অবশ্য সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট ও সুবিধাভোগী নব্য ধনীদের জন্য নয়। কুখ্যাত একটি গোষ্ঠী সম্মিলিতভাবে সাধারণ মানুষের রক্ত চুষে দিব্যি ভালো আছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় তারা দেদারসে অর্থ লোপাট করছে। ব্যাংকগুলোকে ফোকলা করে দিয়েছে। অর্থ পাচার করে বিদেশে গাড়ি বাড়ি ও সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। তারা দেশে-বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছে। আর অন্যদিকে দেশে গরিব আরও গরিব হচ্ছে। মধ্যবিত্ত মানুষ সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে। বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, করোনা উত্তরকালে প্রায় ৪ কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়েছে। দেশের অর্থনীতি আজ মহাসংকটে নিমজ্জিত। বিএনপি মহাসচিব বলেন, চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট একটি জাতীয় সংকটে পরিণত হয়েছে। এই দুর্বিষহ জাতীয় সংকট থেকে মুক্তি পেতে বিএনপি ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ২৭ দফা বাস্তবায়ন করে কাক্সিক্ষত জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, বিএনপির নেতৃত্বে চলমান আন্দোলনে বিজয়ের মাধ্যমে আগামী দিনে দেশের চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট দূরীভূত করে দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ও জাতীয় সরকার গঠন করা সম্ভব হবে। ফখরুল বলেন, রিজার্ভ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিক্রি হচ্ছে অথচ খাদ্য, ভোজ্য তেল, চিনি এমনকি জীবন রক্ষাকারী ওষুধ শিল্পের কাঁচামালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির এলসি খুলতে ডলার দিতে পারছে না সরকার। ব্যাংকগুলো ডলারের অভাবে এলসি মূল্য পরিশোধ না করায় খাদ্য ও পণ্যবাহী জাহাজ প্রায় এক মাস ধরে সাগরে ভাসছে। এতে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এর আগে সকালে যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটির নেতাদের নিয়ে শেরেবাংলানগরে জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সম্পূর্ণ রূপে মুক্তির পর খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার বিষয়ে আলোচনা হবে। আমাদের দাবি হচ্ছে অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে নি:শর্ত মুক্তি দিতে হবে।