সাঈদীর মৃত্যু: চিকিৎসককে হুমকিদাতা তাফসির শিবিরকর্মী

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর হাসপাতালে মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসককে হুমকি দেওয়া তাফসিরুল ইসলামের পরিচয় পাওয়া গেছে। সে একজন শিবির কর্মী বলে জানিয়েছে র্যাব। সে 'বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দ্বারিয়াপুর, মহেশপুর' এবং 'বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দ্বারিয়াপুর, মহেশপুর' নামে দুটি ফেসবুক গ্রুপের অ্যাডমিন বলে জানিয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী। এসব তথ্য দিয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ঝিনাইদহের মহেশপুরে একটি কলেজে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে পড়ালেখা করছে তাফসিরুল। মঈন বলেন, তাফসিরুল স্কুল জীবন থেকেই ছাত্রশিবিরের একজন সক্রিয় কর্মী। সে প্রযুক্তিতে দক্ষ। অনলাইনে ইমেইল মার্কেটিং এর কাজ করে মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় করে। পাশাপাশি ফেসবুকে শিবিরের সাংগঠনিক প্রচার চালায়। উল্লেখ্য, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু দণ্ডিত সাঈদী কারাগারে হার্ট অ্যাটাকা করলে তাকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক চৌধুরী মেশকাত আহমেদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ আগস্ট রাতে সাঈদীর মৃত্যু হয়। তার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলে ছিলেন হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক এস এম মোস্তফা জামান। প্রাণনাশের হুমকি পাওয়ার অভিযোগ জানিয়ে মঙ্গলবার রাতে ধানমণ্ডি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি। এ বিষয়ে তদন্তে নেমে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-২ ও ৬ এর একটি যৌথ দল বুধবার রাতে ঝিনাইদহের মহেশপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৩ বছর বয়সি তাফসিরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার সকালে কারওয়ানবাজার র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি জানান, তাফসিরুলের বাবা রফিকুল ইসলাম রফিও জামায়াতের একজন সক্রিয় কর্মী। ২০১৩-১৪ সালে মহেশপুরে নাশকতার একাধিক মামলায় তার নাম আসে, সে সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও গিয়েছিলেন তিনি। র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তাফসিরুল ডা. মোস্তাফা জামানের মোবাইল নম্বর খুঁজে বের করে হোয়াটসঅ্যাপে এবং ফেইসবুক মেসেঞ্জারে প্রাণনাশের হুমকি দেন। জামায়াত নেতা সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ‘দলীয় ও রাজনৈতিক মতাদর্শ, ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও আক্রোশ থেকে’ তিনি এ কাজ করেন। মঈন বলেন, তাফসিরুল হুমকির বার্তা পাঠানোর পর হোয়াটসঅ্যাপ থেকে সেটা মুছে ফেললেও তার মোবাইলে ওই মেসেজের ‘স্ক্রিনশট’ পাওয়া যায়। ডা. এস এম মোস্তফা জামানকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় এ নিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করা হল। ওই ঘটনায় এর আগে ঢাকার উত্তরা থেকে হাফিজা মাহবুবা বৃষ্টি নামে ৩২ বছর বয়সি এক নারীকে আটক করে সিটিটিসি।