ব্যবসায়ী থেকে এক লাফে প্রধানমন্ত্রী

থাইল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী ধনকুবের স্রেথা থাভিসিন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধায় হাউজ ও সিনেটের যৌথ বৈঠকে তাকে দেশের ৩০তম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত করা হয়। এদিন স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী ভোটের জন্য সংসদীয় অধিবেশন শুরু হয়। ৪৮২ ভোটে জয়লাভ করেন স্রেথা। বিপক্ষে ভোট পড়ে ১৬৫টি। প্রধানমন্ত্রী ভোটাভুটিতে অনুপস্থিত সদস্যের সংখ্যা ছিল ৮১ জন। এর আগে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার তেমন কোনো ইতিহাস নেই তার। গত বছরই যোগ দিয়েছেন রাজনীতিতে। বহু-জাতিক কোম্পানি সহব্যবসা পেশায় কয়েক দশক অতিবাহিত করার পর এবার এক লাফেই প্রধানমন্ত্রী বনে স্রেথা। মে মাসের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রচারাভিযানেও স্রেথা ছিলেন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। তার ব্যবসায়িক সফলতাই প্রধানমন্ত্রী পদে জয়লাভের ক্ষেত্রে তাকে এক ধাপ এগিয়ে রেখেছিল। স্রেথার জন্ম থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে। ১.৯৩ মিটার (৬ ফুট ৪ ইঞ্চি) বিশাল উচ্চতার এই স্রেথার ডাকানাম ‘নিড’। যার অর্থ ছোট বা সামান্য। থাইল্যান্ডের একটি নিউজ ওয়েবসাইট খাওসোডের মতে, স্রেথা উদার রাজনীতিতে বিশ্বাসী।’ ব্যবসায়িক প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। শত বিলিয়ন ডলারের রিয়েল এস্টেট কোম্পানির সানসিরিরও প্রধান। স্রেথার স্ত্রী একটি বয়স্ক পরিচর্যাকেন্দ্রের একজন মেডিকেল বিশেষজ্ঞ। তাদের রয়েছে তিন সন্তান। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রথম দফায়ই স্রেথা জয়ী হবে বলে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছিলেন দলের অন্য সদস্যরা। থাই অভিজাতরা বরাবরই রাজতন্ত্রের সমর্থক। আর স্রেথা এর আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন-রাজপরিবারের ওপর কোনো প্রভাব পড়ে এমন কোনো আইন তিনি সংশোধন করবেন না। রাজতন্ত্রের বিষয়ে তার অবস্থান জানতে চাইলে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘অবশ্যই ধারা ১১২-এর কোনো সংশোধন করা হবে না।’ মে মাসের প্রচারণার সময় ভয়েস অব আমেরিকা (ভিওএ) স্রেথাকে ‘সোজা কথা বলা’ রাজনীতিবিদ হিসাবে আখ্যায়িত করেছিল। বলা হয়েছিল, ‘তার এমন ব্যবসায়িক বুদ্ধিমত্তা লাখ লাখ ভোটারের আস্থা জাগাতে পারে।’ আর এটি যেকোনো ‘ব্র্যান্ড বিল্ডিং’র জন্য অনেক জরুরি। স্রেথার প্রতি ফেউ থাইয়ের প্রতিষ্ঠাতা থাকসিন সিনাওয়াত্রারও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন। ভিওএ’র সাক্ষাৎকারে স্রেথা জানিয়েছিলেন, তার ব্যবসায়িক অংশীদার ছিলেন থাকসিন সিনাওয়াত্রা। আর ব্যবসায়িক পার্টনারের সঙ্গে কয়েক দশকের বন্ধুত্বই তাকে রাজনীতিতে প্রবেশে আগ্রহী করেছিল। থাকসিন ও তার বোনকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি হতাশা অনুভব করেছিলেন বলে জানান। আর সেসঙ্গে থাইল্যান্ডে সামরিক শাসনও তাকে রাজনীতিতে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিতে ভূমিকা রেখেছিল। একই সাক্ষাৎকারে দেশে সামরিক দখলের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। ফেউ থাই জোটে ছিলেন বিভিন্ন সামরিক দল। দলগুলো স্রেথাকে সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আগেই।