এক্সিট পোল বিজেপির তৈরি, এগুলো বিশ্বাস করি না : মমতা

৩ জুন, ২০২৪ | ১১:৩১ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , দৈনিক গণঅধিকার

বুথফেরত জরিপ (এক্সিট পোল) নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমি এই এক্সিট পোল বিশ্বাস করি না। এই এক্সিটপোল বিজেপির তৈরি করা। বিজেপি এটা তৈরি করে মিডিয়াকে খাইয়েছে। আমি এই ক্যালকুলেশন মানি না।’ শনিবার (১ জুন) শেষ হয়েছে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ৪ জুন ভোটের ফলাফল। তার আগে থেকেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে একাধিক প্রতিষ্ঠানের বুথফেরত জরিপ। প্রতিটা সমীক্ষা জানান দিচ্ছে, কেন্দ্রের নিরিখে এগিয়ে রেখেছে বিজেপি। এমনকি, বাংলায় চরমভাবে ধস নামতে চলেছে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূলের। পশ্চিমবঙ্গে ৪২ আসনে সিংহভাগ বিজেপির ঝুলিতেই যাবে বলে প্রথমসারির সমীক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ধারণা দিয়েছে। যা নিয়ে দেশজুড়ে চাপা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় রবিবার বাংলা একটি টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, যারা মোদিজিকে জিতিয়ে দিচ্ছেন, তাদের বলছি, এত সহজ অঙ্কে পার পাওয়া যাবে না। এই সরকার কতদিন চলবে, সন্দেহ আছে। ২০১৬ এবং ২০২১ সালের বাংলার বিধানসভা ভোট, ২০১৯ সালে ভারতের লোকসভা ভোটের এক্সিট পোল দেখেছি। কোনোটাই মেলাতে পারিনি, কারণ এগুলো সব বিজেপির তৈরি। মিডিয়াকে খাইয়ে দেওয়া হয়েছে। দুই মাস আগেই এই এক্সিট পোলগুলি তৈরি হয়ে গিয়েছিল। ওসব বিজেপির কোম্পানি। তিনি বলেন, বিজেপি কিছু লোক পোষে। সবাই বলে, মিডিয়া থেকে ‘ই’ টা বাদ দিয়ে ‘ও’ লিখে দাও। তহলেই ‘মিডিয়া’ বদলে তখন ‘মোডিয়া’ হয়ে যাবে। আমি অন্য রাজ্যের বিষয়ে বলতে পারব না, কারণ আমার অন্য রাজ্য নিয়ে ধারণা নেই। তবে অখিলেশরা (উত্তরপ্রদেশ) ভালো করবে, তেজস্বীরা (বিহার) ভালো করবে, স্ট্যালিনরা (তাড়িমলনাড়ু) ভালো করবে। উদ্ধবরা (মহারাষ্ট্র) ভালো করবে। যেখানে যেখানে আঞ্চলিক দল রয়েছে, তারা ভালো ফল করবে। যেই-ই আসুক না কেন, খুব বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আসবে না। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ২৭ দলের ইন্ডিয়া জোটের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা নিয়ে মমতা বলেছেন, আমি এরকম কোনো কথা বলতে পারি না। অন্য রাজ্যের তথ্য নেই আমার কাছে। কিন্তু নিজের রাজ্যের কথা বলতে পারি। যেভাবে আমরা গরমের মধ্যে কাজ করেছি। তা আমরা জানি। ওরা প্রতিটা আসনগুলো নিয়ে পর্যন্ত বলছে, যে এই সিটে হারছে, ওই সিটে হারছে। তার মানে কি বিজেপির কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল। না হলে জানলো কী করে কে কোন সিটে কে জিতছে, কে হারছে! তিনি বলেন, ভোটটা যদি মেশিনেই (ইভিএম) হয়, ভোটটা যদি গোপনেই হয়, তবে ওরা জানল কী করে? আমরা জানবার আগে, কাউন্টিং হওয়ার আগে মিডিয়া কী করে বলছে, কোন সিটে কে জিতবে, কে হারবে। আমি এই মিডিয়ার ক্যালকুলেশন মানি না। আমি আমাদের কর্মীদের বলব, শক্তিশালী থাকতে, ভালো করে কাউন্টিং করতে। যা আসন দেখিয়েছে মিডিয়া, তার ডবল আসনে যদি জিততে না পারি, তখন দেখবেন। প্রত্যেকটা সিট আমরা জিতব। বাংলায় কেমন ফল হবে? এমন প্রশ্নে মমতা বলেছেন, আমি কোনো নম্বরে যাব না। আমরা যেভাবে মাঠেঘাটে কাজ করেছি, আমি মানুষের চোখ দেখেছি, তাতে আমার কখনও মনে হয়নি মানুষ আমাদের ভোট দেবে না। বিজেপি অনেক শয়তানি করেছে। সিবিআই-ইনকাম ট্যাক্স রেইড, সিএএ, ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল, চাকরি খেয়ে নেওয়া, টাকা বণ্টন করা। এমনকি, কংগ্রেসের এলাকাতে মুসলিম দেখে দেখে টাকা দিয়েছে। আমার মনে হয় না, মুসলিমরা ওদের ভোট দেবে। কংগ্রেস ওদের টাকা দিয়েছে, যাতে কংগ্রেসকে ভোটটা দেয়, তৃণমূলের ভোটটা কাটা যায়। সিপিএমও একই কাজ করেছে। আমরা একসঙ্গে বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়েছি। এইজন্য বলছি, আমাদের রাজ্য নিয়ে যা দেখিয়েছে, তা আমি বিশ্বাস করি না, বিশ্বাস করি না। এটা পুরোটা ফেক। এরা সব বিজেপির দালাল।