যশোর হাসপাতালে রোগীর শরীরে দেওয়া হলো অন্য গ্রুপের রক্ত

৫ জুন, ২০২৪ | ৯:৩৭ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , দৈনিক গণঅধিকার

যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে এক বৃদ্ধার শরীরে অন্য গ্রুপের রক্ত দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (৪ জুন) রক্ত দিতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এ নিয়ে স্বজনদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। ভুক্তভোগীর নাম সালেহা বেগম (৭৭)। তিনি জেলার মণিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের খড়িঞ্চা হেলাঞ্চি গ্রামের মৃত শামসুর রহমানের স্ত্রী। শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে তিনি এখন হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। সালেহা বেগমের স্বজনেরা জানান, বার্ধক্যজনিত কারণে সালেহা বেগমকে ২০ মে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনেরা। তারপর সালেহার রক্ত শূন্যতার কারণে রক্ত দেওয়া পরামর্শ দেন চিকিৎসক। রক্ত প্রদানের জন্য হাসপাতালের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগে গিয়ে সালেহার রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করেন স্বজনেরা। সেখানে সালেহার রক্তের গ্রুপ আসে বি পজিটিভ (বি+)। ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের রক্তের গ্রুপ জেনে সালেহার স্বজনেরা বি পজিটিভ ডোনার খুঁজে সালেহার শরীরে রক্ত দেওয়া হয়। ২০ মে , ২২ মে ও ২৪ মে তিনদিন তিন ব্যাগ বি পজিটিভ ডোনারের মাধ্যমে সালেহাকে রক্ত দেওয়া হয়। তিন ব্যাগ রক্ত দেওয়ার দুদিন পর সালেহার পরিবার তাকে গ্রামে নিয়ে যায়। সেখানে সালেহার শরীরে গা জ্বালাপোড়া, বমিসহ খিঁচুনি হতে থাকে। এসব উপসর্গের কারণে স্থানীয় ডাক্তারের পরামর্শে তাকে বিভিন্ন চিকিৎসা দেওয়া হয়। সোমবার বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবারও যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক সালেহাকে আবারও রক্ত দেওয়া পরামর্শ দেন। মঙ্গলবার সকালে বি পজিটিভ ডোনার নিয়ে সালেহাকে রক্ত দিতে গেলে সেই ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তারাই জানান সালেহার রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ না। তার রক্তের গ্রুপ এ পজিটিভ (এ+)। বিষয়টি জানাজানি হলে রোগীর স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। রোগীর মেয়ে শিরিনা আক্তার বলেন, হাসপাতাল ব্লাড ব্যাংকের ভুলের কারণে আমার মা এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তিনি খুব অসুস্থ। তার শরীরের অবস্থা দিন দিন অবনতি হচ্ছে। কিছু খেতে পারছেন না। এ ঘটনার বিচার চাই। যশোর জেনারেল হাসপাতালের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের ইনচার্জ চঞ্চল হোসেন বলেন, রক্তের গ্রুপ পরিবর্তনের বিষয়টি কিভাবে হলো বুঝতে পারছি না। আমরা ধারণা করছি- একই নামে একাধিক রক্তের নমুনা সিরিঞ্জ ছিল। নমুনা পরীক্ষাকালে এমন ভুল হতে পারে। আবার ওয়ার্ডের নার্সের রক্ত সংগ্রহকালে তারাও ভুল করতে পারেন। এর আগেও একই নামে একাধিক রোগী থাকায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন আর রশিদ বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। রোগীর স্বজনরা মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করতে কমিটি করা হবে। কারোও কোনো গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।