সিআইডির রিমান্ড শেষে জিহাদ হাওলাদারকে আদালতে হাজির

৫ জুন, ২০২৪ | ২:৪৯ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , দৈনিক গণঅধিকার

কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত সন্দেহভাজন ব্যক্তি জিহাদ হাওলাদারকে ভারতের আদালতে তোলা হয়েছে। ১২ দিনের সিআইডি হেফাজত শেষে বুধবার দুপুরে তাকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসত জেলা ও দায়রা আদালতে প্রেরণ করা হয়। গত ২৩ মে (বৃহস্পতিবার) তাকে গ্রেফতার করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ।), ৩০২ (অপরাধমূলক নরহত্যা), ২০১ (তথ্য প্রমাণ লোপাট) এবং ১২০বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র)- এই চার জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে। নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এই মামলার তদন্তকারী সংস্থা পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দা বিভাগ জিহাদের বক্তব্য যাচাই করার পাশাপাশি তাকে সাথে নিয়ে খুন হয়ে যাওয়া সংসদ সদস্যের শরীরের অঙ্গগুলো উদ্ধার করার লক্ষ্যে place of occurrence পরিদর্শনে যায়। এমনকি জিহাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ভাঙড়ের বাঘজোলা খাল, নিউটনের হাতিশালা খালেও তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। তবুও ওই খাল থেকে এমপি আনারের লাশের টুকরোর সন্ধান মেলেনি। উল্লেখ্য, গত ১৩ মে সঞ্জীবা গার্ডেনে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওইদিন এমপি ঢোকার আগেই থেকে উপস্থিত ছিল অভিযুক্ত জিহাদ। ওই দিন বিকালের দিকে এমপি আবাসনে ঢোকার পর বাইরের ধকল কাটাতে বেসিনে হাত-মুখ ধুচ্ছিলেন। সেই সময়ই পিছন থেকে ক্লোরোফোম দিয়ে তাকে বেহুশ করা হয়। তারপর বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপর জিহাদ কসাই ধারালো অস্ত্র দিয়ে এমপির চামড়া থেকে মাংস আলাদা করে সেগুলোকে তিনটি প্লাস্টিকের ডিস্পোজাল ক্যারিব্যাগে ভরে রাখে। পরে সেই লাশের টুকরো গুলোকে ট্রলিব্যাগে ঢোকায় এবং সেইগুলোকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার ভাঙ্গড় কৃষ্ণ মাটি এলাকায় আলাদা আলাদা করে ফেলা হয়। জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনটাই জানতে পেরেছে তদন্তকারী কর্মকর্তারা। জঘন্য হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামান শাহীনের নির্দেশেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলেও স্বীকার করেন। মূলত আখতারুজ্জামানের নির্দেশে জিহাদসহ ৪ জন ওই সাংসদকে তার নিউ টাউনের ওই ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এই খুনের তদন্ত করতে কলকাতা সফর করেছে ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দাদের একটি প্রতিনিধি দল। এমপি আনার টুকরো টুকরো লাশের সন্ধানে ভারতীয় নৌবাহিনী ও কলকাতা পুলিশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দলের সহায়তা নিয়ে ভাঙড়ের কৃষ্ণমাটি খাল এলাকায় সিআইডির প্রতিনিধি দল অভিযান চালিয়েছে কিন্তু তবুও সফলতা মেলেনি। তবে খালে এমপি আনানের দেহাবশেষ খুঁজে না পাওয়া গেলেও নিউটাউনের যে সঞ্জীবা গার্ডেনে গত ১৩ মে খুন হয়েছিলেন বলে অভিযোগ, সেই আবাসনের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয় কিছু অংশ। যদিও সেই মাংস এমপি আনারের কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়। উদ্ধারকৃত এই মাংস পরীক্ষার জন্য ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে 'সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরী' (CFSL)-এ। প্রয়োজনে করা হবে ডিএনএ টেস্টও। আর এই সময়ের মধ্যেই হার ও মাথার খুলি উদ্ধার করা গেলে এই খুনের তদন্তে গতি পাবে বলেও ধারণা তদন্তকারী কর্মকর্তাদের।