দুদকের সামনে হাজির হতে সময় চাইলেন সাবেক আইজিপি বেনজীর

৫ জুন, ২০২৪ | ৫:৫৩ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , দৈনিক গণঅধিকার

দুর্নীতির অভিযোগের মুখে লাপাত্তা সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সামনে হাজির হতে সময় চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা। বুধবার (৫ জুন) বেনজীরের পক্ষে সময়ের আবেদন করা হয় বলে জানিয়েছে দুদক। আগামী বৃহস্পতিবার দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে সাবেক আইজিপি বেনজীরকে তলব করেছিল দুদক। অভিযোগ রয়েছে, বেনজীর এরই মধ্যে দেশত্যাগ করেছেন। তবে এ বিষয়ে সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। দুদক কমিশনার জহুরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি শুনেছি (বেনজীরের পক্ষে) একটা আবেদন দিয়ে গেছে। এটা অনুসন্ধান কর্মকর্তা দেখবে, পর্যালোচনা করবে। যথেষ্ট গ্রাউন্ড থাকলে অ্যালাউ করবে আর না থাকলে, করবে না। আইনে ১৫ দিন পর্যন্ত সময় দেওয়ার ক্ষমতা তদন্ত কর্মকর্তার আছে। যে অনুসন্ধান করবে সে ১৫ দিন পর্যন্ত অ্যালাউ করতে পারবে. যদি সন্তুষ্ট হয়।’ সম্প্রতি দৈনিক কালের কণ্ঠের এক প্রতিবেদনে সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের বিপুল সম্পদের কথা তুলে ধরা হয়। এতে দাবি করা হয়, বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাট, পাঁচ তারকা হোটেলের শেয়ার, গাজীপুর, কক্সবাজার, গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে শত শত বিঘা জমির মালিকানা রয়েছে। এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীরের বিপুল অবৈধ সম্পদের অভিযোগ অনুসন্ধান করতে দুদকের কাছে আবেদন করেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। এর পরপরই বেনজীর আহমেদের বিপুল অবৈধ সম্পত্তির অভিযোগের অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী সালা উদ্দিন রিগ্যান। এই দুই ঘটনার পর গত ১৮ এপ্রিল দুদকের সভায় সাবেক এই পুলিশ প্রধানের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর এর জন্য একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করে দুদক। কমিটির সদস্যরা হলেন, দুদক উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক নিয়ামুল হাসান গাজী ও জয়নাল আবেদীন। এরই মধ্যে বেনজীর ও তাঁর পরিবারের জাতীয় পরিচয়পত্র, আয়কর নথি ও কোম্পানির কাগজপত্র সংগ্রহ করেছে দুদক। বেনজীর ও তাঁর স্ত্রী সন্তানদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলবও করা হয়েছে। গত ২৩ মে দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে বেনজীর আহমেদের সব ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ (অবরুদ্ধ) এবং গোপালগঞ্জ ও কক্সবাজারের তাঁর ৮৩টি দলিলের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেয় আদালত। আর ২৬ মে বেনজীরের স্ত্রী জিশান মির্জা, বড় মেয়ে ফারহিন রিস্তা বিনতে বেনজীর এবং ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে থাকা বিভিন্ন সম্পত্তির দলিল, ঢাকায় ফ্ল্যাট ও কোম্পানির আংশিক শেয়ার ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়। দুদক বলছে, গণমাধ্যমে অবৈধ সম্পদের খবর প্রকাশের পর থেকেই সম্পদ রক্ষায় তৎপর হয়ে উঠে বেনজীর। এ সময় নিজেদের শতাধিক ব্যাংক হিসাবও বন্ধ করে দেন তিনি। একে একে ৫০টি এফডিআর ভেঙে নগদ প্রায় ১০০ কোটি টাকা তুলে নেন বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া ব্যাংকের হিসাবে থাকা আরও কয়েক কোটি টাকা এ সময় তুলে নেওয়া হয়। এর রেশ কাটতে না কাটতেই জানা যায়, বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশ ছেড়েছেন। বুধবার (৫ জুন) এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘বেনজীর আহমেদের দেশত‌্যা‌গে আদাল‌তের কোনো নি‌ষেধাজ্ঞা ছি‌ল না। তাই সে কোন দে‌শে গি‌য়ে‌ছে সেই বিষ‌য়ে সরকারের কাছে কো‌নো তথ‌্য নেই। তবে শোনা যাচ্ছে, তিনি সিঙ্গাপুরে আছেন।’