প্রাইভেটকারের ছাদ খুলে ভিডিও করার সময় সিরাজগঞ্জে ইউটিউবারের মৃত্যু

সিরাজগঞ্জে সেতুতে উঠে প্রাইভেটকারের ছাদ খুলে ভিডিও করার সময় মাথায় লোহার পাইপে ধাক্কা লেগে মারা যাওয়া ইউটিউবার রবিউল আজিম তনুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (৮জুন) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে বাবা লিয়াকত আলীর কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। শনিবার সকালে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার ঐতিহ্যবাহী ইলিয়ট সেতুতে এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া রবিউল আজিম (৩০) সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামের মৃত লিয়াকত আলীর ছেলে। তিনি ইউটিউবার আরএস ফাহিম চৌধুরীর টিমের সদস্য ছিলেন। শনিবার রাত ৯টা ১৮ মিনিটে স্বজনরা মরদেহ নিয়ে গোপিনাথপুর গ্রামে পৌঁছান। বাড়ি পৌঁছানোর পর হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। মা সালেহা খাতুন ছেলের মরদেহ দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে যান। রাত ১১ টার দিকে গোপিনাথপুর পেট্রোল পাম্পে জানাজা হয়। স্বজনরা জানান, দুই ভাইয়ের মধ্যে রবিউল ছিলেন ছোট। বাবা মৃত লিয়াকত আলী অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা ছিলেন। মা সালেহা খাতুনও ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন। বড় ভাই সাগর মালয়েশিয়ায় থাকেন। কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু বলেন, ‘তার মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে তাকে দেখতে এসেছে অনেকে। অনেক ভালো ছেলে ছিল। দুই মাস আগে তার বাবা মারা গিয়েছিল। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’ সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সিরাজগঞ্জ শহরের এসএস রোডের মুখলেসুর রহমান, আর এস ফাহিম চৌধুরী, রবিউলসহ কয়েকজন বন্ধু মিলে সকালে প্রাইভেটকার নিয়ে ঐতিহ্যবাহী ইলিয়ট সেতুর ওপরে ওঠেন। তারা সেতুর ওপরে উঠে ভিডিও কনটেন্ট বানাচ্ছিলেন। এ সময় রবিউল গাড়ির ছাদ খুলে দাঁড়িয়ে সেতুর ভিডিও ধারণ করছিলেন। হঠাৎ সেতুতে ভারী যান চলাচল রোধে দেওয়া লোহার পাইপের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আহত হন। বন্ধুরা উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেক পুরোনো হওয়ায় ইলিয়ট সেতুর ওপর দিয়ে আগে থেকে ভারী যান চলাচল নিষিদ্ধ আছে। ভারী যান যেন চলাচল করতে না পারে, সেজন্য সেতুর দুই প্রান্তে রেলিংয়ের সঙ্গে লোহার পাইপ আটকে দেওয়া হয়েছে। এসএস রোডের বাসিন্দা মুখলেসুর রহমানের আমন্ত্রণে রবিউলসহ তিন বন্ধু সিরাজগঞ্জে বেড়াতে আসেন। খবর পেয়ে স্বজনরা এসে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যান।’