সংসদে ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশের দাবি স্বতন্ত্র এমপি এ কে আজাদের

জাতীয় সংসদে ঋণখেলাপিদের নামের তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এ কে আজাদ। তিনি বলেন, ‘এই ঋণখেলাপিরাই ব্যাংকের টাকা লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করেছে।’ রবিবার (২৩ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ কে আজাদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। মূলত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ লাখ হাজার কোটি টাকা।’ এই টাকা কারা নিলো তা সবার জানা, এমন মন্তব্য করে স্বতন্ত্র এই এমপি বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি, আপনি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির জন্য সংসদে তাদের নাম প্রকাশ করুন। তারাই ব্যাংকের টাকা লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করেছে।’ তিনি বলেন, ‘এখন যদি ১৫ শতাংশ কর দিয়ে তাদের টাকা আনতে দেওয়া হয়, এটা হবে অন্যায়।’ কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে এ কে আজাদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনি ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। সেখানে কীভাবে সার্বভৌম সংসদ কালোটাকা সাদা করার বৈধতা দিতে পারে, তা বোধগম্য নয়।’ তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘কেন কালোটাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না।’ এ কে আজাদ বলেন, ‘একজন দায়িত্বশীল সাবেক মন্ত্রী বলেছেন, প্রশাসনের একটা বিরাট অংশ— যারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত এবং তাদের বিচার হওয়া উচিত।’ এতগুলো মন্ত্রণালয় ও দফতর দরকার আছে কিনা, সেটা দেখার জন্য একটি প্রশাসনিক কমিটি করার প্রস্তাব করেন এ কে আজাদ। তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে পত্রিকায় এসেছে, এসি ল্যান্ড ও ইউএনওদের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে গাড়ি কেনা হচ্ছে। অথচ প্রতিবেশী দেশ ভারতে মন্ত্রীরা নিজস্ব তৈরি গাড়িতে চলা ফেরা করেন। তাতে কি তাদের মানসম্মান কমে যায়’, এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘এখন ভাবার সময় এসেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চললে সামনের বছর বাজেটের আকার আরও কমাতে হবে। অর্থনৈতিক যে দুঃসময় তা আরও প্রকট হবে।’ বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো সম্ভব কীভাবে, এই প্রশ্ন রেখে এ কে আজাদ বলেন, ‘এবার বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে জিডিপির ২৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ২০ জুন প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে ক্যাপিটাল মেশিনারি বা মূলধন যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ। অপরদিকে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি কমেছে প্রায় ২২ শতাংশ। অনেক ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হয়ে গেছে, বা স্বল্প পরিসরে চলছে। তাহলে এ অবস্থায় কীভাবে বিনিয়োগ বাড়বে?’ এ কে আজাদ বলেন, ‘দেশের বিনিযোগ পরিবেশ দিন দিন কঠিন হচ্ছে। ঋণের সুদহার বিদ্যুৎ-জ্বালানির অপর্যাপ্ততা, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধিসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত উদ্যোক্তারা। অথচ বিনিয়োগ টানতে পাশের দেশ ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে নানামুখী প্রণোদনা দিচ্ছে।’