পর্নোগ্রাফি মামলায় কারাগারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সুপারভাইজার নজরুল
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের ফিল্ড সুপারভাইজার নজরুল ইসলাম (শাহিন) পর্নোগ্রাফি দমন আইনের মামলায় বিচারিক আদালতের পরোয়ানা অনুযায়ী বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নেত্রকোণা মডেল থানার ওসি কাজী শাহনেওয়াজ। দুর্গাপুর উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের বালিচান্দা গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ও তার বাবা দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিজ উপজেলায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। স্থানীয় আলেম–ওলামা, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে তার অসদাচরণ ও কর্তৃত্ববাদী আচরণের অভিযোগ বহুদিনের। ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি দমন আইনের সংশোধিত দুটি ধারায় দায়ের করা মামলায় তাকে একমাত্র চার্জশিটভুক্ত আসামি করা হয়। অভিযোগে বলা হয়েছে—ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক উপপরিচালকের স্ত্রী মরিয়ম আক্তারের ব্যক্তিগত গোপন ভিডিও কৌশলে সংগ্রহ করে তা বিভিন্নজনের কাছে ছড়িয়ে দেন নজরুল ইসলাম। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। আদালতের জারি করা পরোয়ানা অনুযায়ী তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন। এদিকে, দুর্গাপুরের সহজ কোরআন শিক্ষা কেন্দ্রের একাধিক শিক্ষক লিখিত অভিযোগে জানান—নজরুল ইসলাম শিক্ষকদের স্বাক্ষরিত চেক বই সংগ্রহ করে বেতন নিজেই উত্তোলন করতেন। ব্যাংকে বেতন উত্তোলনের পরও শিক্ষকরা সেই টাকা পেতেন না। এ বিষয়ে স্থানীয় পত্রিকায় একাধিক প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, নজরুল কখনো রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে পৌরসভায়, আবার কখনো তার নিজ ভবনের নিচতলায় অফিস স্থানান্তর করতেন। তাদের ভাষায়—‘নজরুলের অফিস, বাসা ও দোকানের পার্থক্য বোঝা যেত না।’ দুর্নীতি ও অনিয়মের খবর প্রকাশের পর তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) স্বাক্ষর জাল করে একটি নথি ছড়িয়ে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ ওঠে। প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে—ইউএনও কার্যালয়ের নথি রেজিস্টারে ওই কাগজের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নেত্রকোণা জেলা উপপরিচালক শফিকুর রহমান সরকার প্রকল্প পরিচালকের কাছে পাঠানো প্রতিবেদনে অভিযোগগুলোর স্বাধীন তদন্ত ও প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেন। এদিকে, দুর্গাপুরের আলেম–ওলামা, মাশায়েখ ও শিক্ষক সমাজ নজরুল ইসলামের অবিলম্বে অপসারণ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
