
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

ঈদের পর আসছে জিম্বাবুয়ে, সূচি প্রকাশ

বাড়িতে বসে রোজা রাখা সহজ, খেলতে নেমে নয়!

ভারতের বিপক্ষে ইচ্ছে করেই খারাপ খেলেন ম্যাক্সওয়েল, দাবি সাংবাদিকের

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মাদ্রিদ ডার্বি জয় রিয়ালের

সেমিতে আজ দুই দুর্ভাগা দলের লড়াই

গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দ. আফ্রিকা, ইংলিশদের হারে বিশাল লাভ বাংলাদেশের

ইংল্যান্ডের নেতৃত্ব ছেড়ে দিলেন বাটলার
অভিজ্ঞতাকে মূল্য দেবেন কবে সাকিব ?

দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১১৩ রানে থামিয়ে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি জয়ের দারুণ সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু সেই পুরানো গল্পই মঞ্চায়িত হলো নিউইয়র্কের নাসাউ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। অল্প রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে কৌশলী হতে হতো টপ অর্ডার ব্যাটারদের। কিন্তু লিটন দাস-নাজমুল হোসেন শান্ত-সাকিব আল হাসানদের দায়িত্বহীনতায় বারবার একই ভুল হচ্ছে। শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহ ১১ রানের সমীকরণ মেলাতে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ৪ রানের ব্যবধানে হার মানে।
বাংলাদেশের জন্য ১১৪ রানের লক্ষ্য পূরণ করা কঠিন কিছু ছিল না। কিন্তু ব্যাটারদের দায়িত্বহীনতার খেসারত দিতে হয়েছে দলকে। বিশেষ করে অভিজ্ঞ সাকিব অভিজ্ঞতার মূল্য দিতে পারছেন না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ছিলেন উইকেটশূন্য, রান ৮। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও ব্যাটিং-বোলিংয়ে একেবারেই ছন্নছাড়া। আজ মাত্র এক ওভার বোলিং করেছেন। খুব বেশি খরুচে বোলিং না করলেও বাকি সময়টায় মাঠে থেকে আর বল হাতে নেননি। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বল থেকেই পরিকল্পনাহীন ব্যাটিং করেছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত আনরিখ নর্কিয়ের পরিকল্পিত ফাঁদে পড়ে বল আকাশে তুলে বিদায় নেন। ৪ বলে ৩ রান করেন, তার উইকেটের পরই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। অথচ দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার তিনি। এখন পর্যন্ত সবকটি বিশ্বকাপেই খেলেছেন। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচও খেলার অভিজ্ঞতা বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারের। বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগও খেলে বেড়ানোর অভিজ্ঞতাও তারই বেশি। তারপরও অভিজ্ঞতার কোনও মূল্যই দিতে পারছেন না সাকিব। নিজের উইকেটের মূল্য না বুঝতে পেরে বারবারই দলকে বিপদে ফেলছেন তিনি। বাংলাদেশর বহু ম্যাচ জয়ের নায়ক এখন হয়ে উঠছেন বহু ম্যাচ হারের খলনায়ক!
সাকিবের পর একই ভুল করে বসেন অধিনায়কন নাজমুল হোসেন শান্ত। অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালনে বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন তিনি। আজকে সুযোগ ছিল ঠাণ্ডা মাথায় ম্যাচটা বের করে নিয়ে আসার। সেভাবেই শুরু করছিলেন। আস্কিং রানরেটে কিছুটা প্রভাব পড়তেই যেন মাথা ‘খারাপ’ হয়ে গেলো শান্তর। তাতে বাজে শটে দলকে আরও একবার বিপদে ফেললেন তিনি।
এর আগে পাওয়ার প্লের দ্বিতীয় ওভারেই বাংলাদেশ হারায় ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমের উইকেট। এরপর সপ্তম ওভারের প্রথম বলে অস্বস্তি নিয়ে ব্যাটিং করা লিটনও দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে আউট হয়েছেন। যেভাবে ব্যাটিং করছিলেন, তাতে করে ১৩ বলে ৯ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়ে লিটন যেন বেঁচে গেলেন।
১০ ওভার শেষে ৫০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। তবে সেই চাপটা সামলে নিয়েছিলেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ ও তাওহীদ হৃদয়। পঞ্চম উইকেটে এই দুজনের ৪৪ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। হৃদয় আউট হওয়ার পর একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ১৮তম ওভারে ২ রান দিয়ে এক উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় প্রোটিয়ারা। ফলে শেষ ২ ওভারে বাংলাদেশের দরকার ছিল ১৮ রান, শেষ ওভারে ১১। ২ বলে দরকার ৬, মাহমুদউল্লাহ লং অনে উড়িয়ে মারলেন মহারাজের বল। কিন্তু বাউন্ডারি পার হওয়ার আগেই সেটি তালুবন্দি করেন মারক্রাম। বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে হতবাক হয়ে গেলেন মাহমুদউল্লাহ। দারুণ এক ক্যাচ ধরে মাহমুদউল্লাহকে সাজঘরে ফিরিয়ে বাংলাদেশের ম্যাচ হার প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন মারক্রাম। শেষ বলে ছয় রানের সমীকরণ মেলাতে পারেননি তাসকিন আহমেদ।
এদিন বোধ হয় ভাগ্যও সঙ্গে ছিল না। নয়তো মাহমুদউল্লাহর পায়ে লেগে বল গেলো বাউন্ডারিতে। আঙুল তুলে দিলেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু যেহেতু রিভিউ নেওয়া হয়েছে, তাই বাই চার রানটি পেলো না বাংলাদেশ দল। তারা হেরেছে ওই চার রানেই!
মঙ্গলবার নিউইয়র্কের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বাগে পেয়েছিল বাংলাদেশ। তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদের দারুণ বোলিংয়ে পাওয়ার প্লেতেই ৪ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। তখন ক্রিজে থাকা ডেভিড মিলার ও আইনরিখ ক্লাসেন ক্রিজে ছিলেন। তখনও তাদের জুটি জমে উঠেনি। ১১তম ওভারে শান্ত বল তুলে দেন মাহমুদউল্লাহর হাতে। প্রথম বলেই অস্তস্তিতে ভোগা মিলার ফিরে যেতে পারতেন, কিন্তু উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো লিটন ক্যাচটি নিতে পারেননি। সুযোগটা কাজে লাগিয়ে ৩৮ বলে ২৯ রান করে আউট হন মিলার। লিটনের এই ভুলেই আরও কম রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আটকে রাখার সুযোগ হারায় বাংলাদেশ।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিততে পারলে ইতিহাস গড়ার সুযোগ পেতো বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা হতে পারতো। পাশাপাশি প্রথমবারের মতো সুপার এইটে খেলার পথটা অনেকটাই তৈরি হয়ে যেতো। এখনও সুযোগ আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে নেদারল্যান্ডস ও নেপালের বিপক্ষে অন্তত একটি ম্যাচে জিতলেই পরের পর্ব অনেকটাই নিশ্চিত। সমীকরণের ফাঁদে না পড়তে চাইলে দুটি ম্যাচই জিততে হবে শান্তর দলকে।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।