ইংরেজিতে অনার্স, দুচোখ হারিয়ে ২০ বছর ধরে খেলনা বিক্রি – দৈনিক গণঅধিকার

ইংরেজিতে অনার্স, দুচোখ হারিয়ে ২০ বছর ধরে খেলনা বিক্রি

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৮ আগস্ট, ২০২৩ | ৫:০৪
মাদারীপুর শহরের শকুনী লেক। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঘুরতে আসেন ২০-২৩ হাজার দর্শনার্থী। তাদের ভিড়ে দেখা মিলবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে অনার্স করা দৃষ্টিহীন এক মানুষের। নাম তার সরদার আশিকুর রহমান হেমায়েত। মাদারীপুরের কালকিনির আন্ডারচরের ফজলুর রহমান সরদারের ছেলে হেমায়েত ১৯৯৫ সালে আন্ডারচর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। উচ্চ মাধ্যমিকে মাদারীপুর সরকারি কলেজ থেকে পাশ করার পর ২০০১ সালে ইংরেজিতে অনার্স করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। জানা যায়, ২০০১ সালে কালকিনির একটি মামলায় তাকে সাক্ষী করা হয়; কিন্তু বিষয়টি তিনি জানতেন না, এজন্য আদালতেও সাক্ষী দেননি। এর কিছুদিন পর লঞ্চে করে ঢাকা থেকে নিজ এলাকায় আসার পর দুচোখ তুলে নেয় প্রতিপক্ষের লোকজন। এরপর হাসপাতালের বিছানায়। রাজধানীর একটি চক্ষু হাসপাতালে পরিচয়ের পরে ভালোবাসা করে বিয়ে করেন লালমনিরহাটের মেয়ে পারভীন আক্তারকে। এরপরও থেমে নেই হেমায়েত। জীবন যুদ্ধে হারেননি তিনি। মাদারীপুর শহরের লেকেরপাড়ে বাঁশির সুরে প্রথমে ক্রেতাদের জড়ো করেন দোকানে। এরপর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বিক্রি করেন বাঁশি ও খেলনা। দুচোখ হারিয়েও করেন না ভিক্ষাবৃত্তি। ২০০৩ সাল থেকে ভালোবাসার মানুষটির হাত ধরে মাদারীপুরে আসেন স্ত্রী পারভীন। খেলনা বিক্রি করে স্বামী-স্ত্রী দুজনে ২০ বছর ধরে চালাচ্ছেন সংসার। কারো কাছে হাত পেতে নয়, কাজের মাঝেই তৃপ্তি খুঁজে পান অসহায় এই দম্পতি। দুচোখ হারানো হেমায়েতের মা ও বাবা বেঁচে নেই। লেকের উত্তরপাশে ভ্রাম্যমাণ দোকানে খেলনা বিক্রি করা অদম্য মানুষটি স্ত্রীকে নিয়ে শহরের কুকরাইল এলাকায় ভাড়া থাকেন। লেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী আল শাহরিয়াত করিম বলেন, দুচোখ নেই তারপরও ভিক্ষা না করে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন, এটা প্রশংসার দাবি রাখে। স্বামী-স্ত্রীর এমন কর্মকাণ্ড দেখে ভালো লাগছে। আরেক দর্শনার্থী ও ক্রেতা বিউটি আক্তার বলেন, বাঁশির সুর শুনে দোকানে এসে দেখতে পাই দোকানদার অন্ধ। পরে ঘটনা শুনে অবাক হয়েছি। চোখ নেই তবুও স্বামী-স্ত্রী দোকানদারি করে জীবিকা চালাচ্ছেন এটা আমাদের সমাজের জন্য একটি শিক্ষণীয় ব্যাপার। সরদার আশিকুর রহমান হেমায়েতের স্ত্রী পারভীন আক্তার বলেন, চোখ নেই দেখেও আমি হেমায়েতকে ভালোবেসে বিয়ে করছি। এমন একজন মানুষের পাশে থাকতে পেরে সত্যিই নিজেকে ধন্য মনে করছি। খেলনা ও বাঁশি বিক্রি করা আয় দিয়ে জীবন ভালোই চলছে। দুচোখ হারানো সরদার আশিকুর রহমান হেমায়েত বলেন, ভিক্ষা করতে ভালো লাগে না। তাই কর্ম করে জীবন চালাচ্ছি। কারো কাছে হাত পেতে খাওয়ার চেয়ে, কাজ করে আয় করার মাঝে আনন্দই আলাদা। জীবনযুদ্ধে সমাজে এখনো টিকে আছি।

দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
আটিগ্রাম মাঠে ঈদের সন্ধ্যায় মানুষের ভিড়, পুলিশের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রশংসনীয় মিরপুরে সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল হক আর নেই এডভোকেট নুরুল ইসলাম দুলাল আর পৃথিবীতে নেই শেরপুরে ৭ গ্রামে আগাম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় সেনা অভিযানে সন্ত্রাসী লিপটন ও তার তিন সহযোগী আটক ‘বিচারকদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ছিল ষোড়শ সংশোধনী মামলার মূল উদ্দেশ্য’ দক্ষিণ চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ডাকাত শাহিন রামু সেনাবাহিনীর হাতে অস্ত্র ও মাদক সহ আটক কুষ্টিয়া বাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কাজল মাজমাদার খোলা ট্রাক-পিকআপে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছে মানুষ দুই ভাতিজিকে কুপিয়ে হত্যা, ঘাতক চাচা গ্রেপ্তার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি রেড ক্রসে চাকরির সুযোগ, আবেদন করুন আজই মিরপুরে জামায়াত ইসলামী থেকে উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা মিরপুরে পুলিশের অভিযানে সাজাপ্রাপ্ত দুই ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার বাবার সঙ্গে গরু বিক্রি করতে এসে পানিতে ডুবে প্রাণ গেল ফয়সালের এবার ঢাকাবাসীকে নিয়ে নিজেই শপথ পড়ার ঘোষণা ইশরাকের ফারুকের মনোনয়ন বাতিল ও আমিনুলের মনোনয়ন কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট নিখোঁজ সংবাদ জাপানের সহযোগিতায় কুষ্টিয়াসহ চার জেলার মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম শুরু মেহেরপুর মুজিবনগরে ১১০০ পিস ইয়াবাসহ ১ জন আটক