নিউজ ডেক্স
আরও খবর
দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল কোথায়!
ইরান দূতাবাসের ঢাকায় ‘দেশে নয়া ইসলামি সভ্যতা গঠনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
এই দেশে আর কোনো মাইনরিটি-মেজরিটির কথা শুনতে চাই না
মেয়াদ বাড়লো নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের
কম্বল কিনতে ৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে ত্রাণ মন্ত্রণালয়
মোংলা বন্দরে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
ঢাকা ওয়াসায় পাস ব্যাতীত প্রবেশ নিষেধ
উত্তাল সাগর, সারাদেশের ভারী বৃষ্টির আভাস
পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি বর্তমানে উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ-দক্ষিণ উড়িষ্যা উপকূলের অদূরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে অবস্থান করছে। বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ায় সাগরও বেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে।
এদিকে মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। এতে আগামী দুইদিনে দেশজুড়ে ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বুধবার আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ‘ঢাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে আজ। তবে তা খুব বেশি নয়। হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। এতে তাপমাত্রা খুব বেশি কমবে না। এদিকে দেশের অন্য এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। উপকূলসহ দক্ষিণাঞ্চলে বেশি বৃষ্টি হতে পারে।’
আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, ময়মনসিংহ, রংপুর ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।
তাপপ্রবাহের বিষয়ে বলা হয়েছে, ঢাকা, টাঙ্গাইল, রাজশাহী, পাবনা, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী ও মৌলভীবাজার জেলাগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গায় কমতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এ ছাড়া আগামী দিন বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া ঢাকায় ৩৬ দশমিক ৬, রংপুরে ৩৬, ময়মনসিংহে ৩৫, সিলেটে ৩৫ দশমিক ৫, চট্টগ্রামে ৩৪ দশমিক ৭, খুলনায় ৩৪ দশমিক ৫ এবং বরিশালে ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
আমাদের কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, লঘুচাপ ও অমাবশ্যার কারণে গভীর সমুদ্রে প্রচণ্ড ঢেউয়ের তোড়ে টিকতে না পেরে উপকূলে ফিরে এসেছেন জেলেরা। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সোমবার অনেক আশা নিয়ে সাগরে রুপালি ইলিশের সন্ধানে নেমেছিলেন এসব জেলেরা। কূলে ফিরে আসা জেলেদের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ। এতে ট্রলারপ্রতি দেড় থেকে দুই লাখ টাকার লোকসান গুনতে হবে মালিকদের। আবহাওয়ার অশনিসংকেত কেটে গেলে ফের সমুদ্রে যাওয়ার পুঁজি সংকটেও পড়বেন অনেকেÑ এমন আশঙ্কা তাদের।
মঙ্গলবার সকাল থেকে সমুদ্র উপকূলে বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে ঘাটে ফিরতে দেখা যায় শত শত মাছ ধরার ট্রলার। বৃষ্টি আর হালকা বাতাসের সঙ্গে উত্তাল হয়ে ওঠা সমুদ্র থেকে জীবন বাঁচাতে মাছ ধরা বন্ধ করে উপকূলে ফিরতে শুরু করে জেলেরা। বুধবার দুপুর পর্যন্ত কেবল পটুয়াখালীর আলিপুর ও মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রায় পাঁচ শতাধিক ট্রলার ফিরে এসেছে। প্রতিটি ট্রলারেই লোকসান হওয়ায় মলিনতা ছিল জেলেদের চোখেমুখে।
ঘাটে ফেরা ট্রলার এফবি আদিলের মাঝি কুদ্দুস গাজী জানান, প্রায় আড়াই লাখ টাকার রসদসামগ্রী নিয়ে রোববার গভীর রাতে তারা ১৬ জন জেলে ও মাঝি সমুদ্রে যান। প্রায় ৩৬ ঘণ্টা ট্রলার চালিয়ে যখন মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ঠিক তখন জানতে পারেন সমুদ্রের সুস্পষ্ট লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। যেহেতু অনেক টাকার রসদ ও তেল খরচ করে গিয়েছেন তাই ঝুঁকি নিয়েও সমুদ্রে জাল ফেলেছিলেন। তবে জাল ফেলার পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টার মধ্যেই উত্তাল হতে থাকে সমুদ্র। একসময় সমুদ্র এতটাই উত্তাল হয়ে ওঠে যে তাড়াহুড়ো করে জাল টেনে ফিরে আসেন তারা। এতে আড়াই লাখ টাকা খরচ হলেও কোনো মাছ নিয়ে ফিরতে পারেননি তারা।
কুয়াকাটা-আলিপুর মৎস্য আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নিরাপদে ফিরছেন প্রায় পাঁচ শতাধিক ট্রলার। ৬৫ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সমুদ্রে গিয়ে তিন দিনের মাথায় ফিরে আসেন মাছধরার ট্রলারগুলো। কোটি টাকার লোকসানের সম্মুখীন ট্রলার মালিকরা। জেলে পেশায় থাকা সবাইকে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি সরকারের কাছে।’
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী বলেন, ‘মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয়। তাই পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এলাকায় অবস্থানরত সব মাছধরা ট্রলার ও নৌযানকে সাবধানে থেকে চলাচল করতে বলা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা বৃষ্টি ও বাতাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।