নিউজ ডেক্স
আরও খবর
ইসলামী ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারলো না এস আলম!
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১৬ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আয় বেনাপোল কাস্টমসে
বেনাপোল বন্দরে আটকে পড়েছে পচনশীল পণ্যবাহী ৫০টির বেশি ট্রাক
অর্ধেকে নেমে গেছে আমদানি, শ্রমিক ও বন্দর কর্তৃপক্ষ দুশ্চিন্তায়
কলোটাকা সাদা করা নিয়ে সংসদে ২ এমপির পাল্টাপাল্টি অবস্থান
ক্যাশলেস লেনদেনের নতুন ফর্মুলা এফবিসিসিআই’র
ঈদের সপ্তাহে রিজার্ভ বেড়েছে ৩১ কোটি ৮৩ লাখ ডলার
গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে মানতে হবে যেসব নিয়ম
দিন দিন তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ব্যবহার বাড়ছে। শহর, নগর, বন্দর, গ্রামগঞ্জ– সর্বত্র এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহৃত হচ্ছে। পরিবহন, শিল্পেও এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে দুর্ঘটনাও। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুর্ঘটনাগুলোকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ বলা হলেও এগুলো সাধারণত গ্যাস ব্যবহারের সময় অসচেতনতা, রেগুলেটর ও সংযোগের দুর্বলতার কারণে গ্যাস লিকেজ থেকে হয়ে থাকে। এ ছাড়া সিলিন্ডার যথাযথভাবে পরিবহন, মজুত ও ব্যবহার না করা হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হয়।
বর্তমানে বাজারে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৩০টি কোম্পানির অন্তত দুই কোটি সিলিন্ডার রয়েছে। কোম্পানির সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এলপিজি সিলিন্ডার যথেষ্ট নিরাপদ। কারণ এলপিজি গ্যাস যে চাপ তৈরি করে, তার চেয়ে অন্তত চার গুণ চাপ ধারণ করার ক্ষমতা এসব সিলিন্ডারের থাকে। তাই সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কোনো ঝুঁকিই নেই। বিস্ফোরক অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মতে, সিলিন্ডারে দুর্ঘটনাগুলো মূলত গ্যাসের লিকেজ থেকে ঘটে। হোস পাইপ, রেগুলেটর, গ্যাস ভাল্ভ ইত্যাদিতে দুর্বলতার কারণে যে কোনো সময় গ্যাস লিক হতে পারে। সেই লিকেজ থেকে গ্যাস বেরিয়ে জমতে থাকে। তা সামান্য আগুন এমনকি স্ফুলিঙ্গের সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে।
বিস্ফোরক কর্মকর্তা এবং এলপিজি ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন এলপিজি ব্যবহারের। গ্যাস সিলিন্ডার, রেগুলেটর, পাইপ অনুমোদিত বিক্রেতাদের থেকে কেনা উচিত। সিলিন্ডারের গায়ের মেয়াদ নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। সিলিন্ডারের মেয়াদ সাধারণত ১০ বছর থেকে ১৫ বছর হয়। মেয়াদের তারিখ দেওয়া থাকে সিলিন্ডারের ওপরের দিকে। এ, বি, সি, ডি চারটি ইংরেজি বর্ণের সঙ্গে সাল দেওয়া থাকে। প্রতিটি বর্ণ আলাদা আলাদা মাসের নাম বোঝায়।
কোম্পানির সিল, সেফটি ক্যাপ, পাইপ রাবারের রিং, রেগুলেটর ঠিকভাবে আছে কিনা, সেটা পরীক্ষা করে নিতে হবে। কারণ বাজারে ভালো ও খারাপ দুই মানের যন্ত্রাংশই আছে। রেগুলেটর কিনে নিতে হবে। বিএসটিআই অনুমোদিত যন্ত্রাংশ কিনতে হবে। সিলিন্ডারে সংযোগ দেওয়ার জন্য দক্ষ লোকের সাহায্য নিতে হবে। নিজে সংযোগ দেওয়া যাবে না। পরিবহনের সময় সিলিন্ডারটি টানাহ্যাঁচড়া করে, ধাক্কা দিয়ে, মাটিতে গড়ানো যাবে না। সিলিন্ডার খাড়াভাবে দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে।
সিলিন্ডার মাটিতে সমতল পৃষ্ঠে রাখতে হবে। চুলা, সিলিন্ডার থেকে কমপক্ষে ছয় ইঞ্চি ওপরে রাখতে হবে। সিলিন্ডারটি লম্বা পাইপের সাহায্যে চুলা থেকে অন্তত তিন ফুট দূরে স্থাপন করতে হবে।
সিলিন্ডার রান্নাঘরের চুলার নিচে, ক্যাবিনেটের ভেতরে কিংবা বদ্ধ অবস্থায় রাখা যাবে না। বরং খোলামেলা জায়গা এবং সমান ভূমিতে রাখতে হবে, যেখানে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করে। বিদ্যুৎ, দাহ্য, প্রজ্বলিত বা বিস্ফোরক পদার্থ এবং ভিন্ন কোনো গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে এলপিজি সিলিন্ডার দূরে রাখতে হবে। সিলিন্ডারের আশপাশে আগুন জ্বালানো এবং ধূমপান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সিলিন্ডারের ওপরে বোঝা রাখা যাবে না।
রান্না শুরু করার আধাঘণ্টা আগে রান্নাঘরের দরজা-জানালা খুলে দিতে হবে। রান্না শেষে চুলার নব ও এলপিজি সিলিন্ডারের রেগুলেটর সুইচ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। বদ্ধ ঘরে প্রবেশের পর সবার আগে দরজা-জানালা খুলে দিতে হবে। ঘরের ভেতরে গ্যাসের গন্ধ পাওয়া গেলে ম্যাচের কাঠি জ্বালানো, ইলেকট্রিক সুইচ, সিলিন্ডারের রেগুলেটর কিংবা মোবাইল ফোন অন বা অফ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
সিলিন্ডারে লিকেজ খোঁজার সময় মোমবাতি কিংবা ম্যাচের কাঠি ব্যবহার করা যাবে না। বছরে অন্তত একবার গ্যাস সিলিন্ডার এবং এর সঙ্গে ব্যবহৃত নানা রকম সামগ্রীর পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। সিলিন্ডারের ভাল্ভ, গ্যাসের পাইপ বা ফিটিংস দুর্বল হলে কিংবা সিলিন্ডারে ছিদ্র থাকলে সঙ্গে সঙ্গে বদলে ফেলতে হবে। মেরামত, ঝালাই করে ব্যবহার করা যাবে না।
অতিরিক্ত গ্যাস বের করার জন্য এলপিজি সিলিন্ডারে চাপ দেওয়া, ঝাঁকানো কিংবা সিলিন্ডার গরম করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এতে তরল এলপিজি দ্রুত গ্যাসে রূপান্তরিত হয়ে অস্বাভাবিক চাপ বেড়ে বিস্ফোরিত হতে পারে। এলপিজি পূর্ণ সিলিন্ডার কোনো দুই চাকার যান যেমন সাইকেল, মোটরসাইকেলে কিংবা ভারসাম্য কম– এমন বাহনে পরিবহন করা যাবে না।
যে কোনো ধরনের জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাসা, বিশেষ করে রান্নাঘরের মধ্যে নিরাপত্তামূলক বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি, যেমন– গ্যাস ডিটেক্টর এবং ফায়ার এক্সটিংগুইশার কিংবা হাতের কাছে কম্বলের মতো মোটা কাপড় রাখতে হবে।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।