ডুবন্ত মানবতা, ঘুমন্ত বিবেক – দৈনিক গণঅধিকার

ডুবন্ত মানবতা, ঘুমন্ত বিবেক

D M I
আপডেটঃ ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১:৫২
বর্তমান প্রযুক্তির যুগে দেশ ও সমাজ যখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় ভাসছে, তখন অন্যপ্রান্তে ডুবে যাচ্ছে মানুষের সভ্যতা, শিষ্টাচার আর সৌজন্যবোধ। হারিয়ে যাচ্ছে নৈতিকতা, মানবতা আর মনুষ্যত্ব। ১৯৪৫ সালের পর, বর্তমানে পৃথিবী সবচেয়ে বড় মানবিক সংকটের মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। নিরাপত্তা পরিষদে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা-বিষয়ক প্রধান স্টিফেন ও ব্রায়েন বলেন, বিভিন্ন দেশে অন্তত দুই কোটি মানুষ চরম খাদ্য সংকটে রয়েছে। ইয়েমেন, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান ও নাইজেরিয়ায় চলমান দুর্ভিক্ষকে চরম বিপর্যয় বলে উল্লেখ করেন ব্রায়েন। এ মানবিক বিপর্যয় এড়াতে চারশ ৪০ কোটি মার্কিন ডলার সাহায্য প্রয়োজন। জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার পর আর এমন সংকট তৈরি হয়নি উল্লেখ করে নিরাপত্তা পরিষদে ব্রায়েন বলেন, ইতিহাসের সংকটপূর্ণ মুহূর্তে রয়েছে বিশ্ব। একবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই মানবতা কমপক্ষে দুইটি বড় বৈশ্বিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। প্রথম সংকটটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নাইন ইলেভেন-এর সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে সম্পর্কিত, যা মার্কিন নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধকে সহায়তা করেছিল, যার ফলস্বরূপ, বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রের নজরদারি ব্যবস্থার বিস্তৃতি, ব্যাপক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডের প্রসার সহজতর হয়েছে। করোনা মহামারি মানুষের প্রাকৃতিক মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় বৈশ্বিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থার ব্যর্থতাগুলো প্রকাশ করতে শুরু করেছে। প্রচলিত পুঁজিবাদী ব্যবস্থা কল্যাণমূলক রাষ্ট্রীয় ঐতিহ্যকে বিকল করে কার্যকর জনস্বাস্থ্য পরিচালনার রাষ্ট্রীয় সক্ষমতাকে ক্ষুণ্ন করছে। আন্তর্জাতিক আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর নির্দেশনায় এবং নয়া উদারনৈতিক পুঁজিবাদী নীতির আলোকে স্বাস্থ্যসেবায় রাষ্ট্রীয় সহায়তা হ্রাসের পদক্ষেপের ফলে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য খাত এই মহামারিজনিত কারণে এখন চরম চাপের মধ্যে রয়েছে। আজকে এক দেশে অপর দেশের মানুষকে শধু ক্ষমতার দাপটে মানুষ মনে করছে না। অথচ ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অসহায় মানুষগুলোকে ব্যবহার করে জীবননাশ করে দিচ্ছে এমন ঘটনা প্রায় হচ্ছে কিন্তু কেন মানুষ মানুষকে স্বার্থ উদ্ধারে ব্যবহার করে খুন করবে? সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ সেই মানুষগুলো যখন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে একটা পরিবার ধ্বংস করে দেয় যা মানবতা বিরোধী। ধনাঢ্য ব্যক্তি বা রাষ্ট্র বাস্তবসম্মতভাবে মানুষের অধিকার ফিরে পাক সেদিকে এগিয়ে আসছে না বিধায় দিনে দিনে মানুষ অসহায় হয়ে পড়ছে জাতি-ধর্ম-বর্ণের উর্ধ্বে মানবপ্রেম এবং মানবাধিকার মানুষের আসল পরিচয়। কিন্তু এসব আজ কেবল বইয়েই রয়েছে বাস্তবে নেই। আজকাল তো মানুষ প্রতিবাদ করার ভাষাও হারিয়ে ফেলছেন। চোখে দেখছেন অন্যায় হচ্ছে, সহ্য করতে পারছেন না কিন্তু তারপরও মুখ দিয়ে টু শব্দ করছে না,কী জানি কী হয়ে যায় এই ভয়ে। পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ জলবায়ু উদ্বাস্তু হওয়ার আগেই বিশ্বের শতকোটি মানুষ রাজনৈতিক-মানবিক- অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্বের শিকার হয়েছে। তবে সামাজিক জীবন যাপনের তাগিদে বা নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে সে বিপরীতমুখী আচরণও করে। নিজেকে ক্ষমতাবান হিসেবে প্রকাশ করার লিপ্সায় মত্ত হয়। তখন উপকারের রূপ বদলে গিয়ে তা স্বার্থসিদ্ধির পন্থায় পরিণত হয়ে যায়। ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও প্রতিযোগিতার যুগে মানুষ ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সভ্যতার বিকশিত সময় ও আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতির যুগেও মনুষ্য সমাজে সহিংসতা, রক্তপাত, হানাহানি, বিদ্বেষ, প্রতিহিংসা পরায়ণতা আর উন্মাদনার যে চিত্র প্রায় নিত্য ফুটে উঠছে, এতে মানবতা আজ বিপন্ন। পৃথিবীতে মানুষের যা কিছু উদ্যোগ-উদ্যম, সবকিছুই শান্তিতে বেঁচে থাকার লক্ষ্যকে ঘিরে আবর্তিত হয়। পৃথিবী সুখময় না দুঃখময় এ নিয়ে তাত্ত্বিক বিতর্ক হতে পারে কিন্তু এ কথা সন্দেহাতীতভাবে প্রতিষ্ঠিত যে বিশ্বে নিরাপদে বেঁচে থাকার সাধনাতেই মানুষ নিজেকে ব্যস্ত রাখে। দুঃখের বিষয়, আমরা যত সভ্যতার দিকে ধাবিত হচ্ছি, ততই যেন মানবিক গুণাবলি হারিয়ে ফেলছি। করোনা এসে এই মানবিকতায় বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, আমরা কতটা মানবিকতা ধারণ করতে পারছি। কতটা অন্যের স্বার্থরক্ষা করতে পারছি। তবে আমাদের হতাশ বা নৈরাশ্যবাদী হলে চলবে না। আমাদের চিরকালের মানবিক মূল্যবোধ ও নীতি-নৈতিকতার দিকে তাকাতে হবে। আমাদের এই আচার-আচরণে করোনাভীতি সাময়িকভাবে আস্তরণ ফেললেও তা শেষ হয়ে যায়নি। এখনো মানুষের মধ্যে মানবিকতা রয়েছে। প্রয়োজন শুধু তা জাগিয়ে তোলা। ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর প্যারিসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র প্রদান করা হয়। প্রত্যেক মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৩০টি ধারা সম্বলিত এই সনদ ঘোষিত হয়। যার মুখবন্ধে বলা হয়-মানব পরিবারের সকল সদস্যদের সমান ও অবিচ্ছেদ্য অধিকারগুলো ও সহজাত মর্যাদার স্বীকৃতিই হচ্ছে বিশ্বে শান্তি, স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচারের ভিত্তি। প্রতিটি ধর্মেই মানবাধিকারের কথা বলা হয়েছে। অথচ আজ আমরা ধর্মকে অনুসরণ না করে মানুষের অধিকারের বিষয়ে কর্ণপাতও করি না যেন এ বিষয়ে ঘুমে আছে আমাদের সমাজ ব্যবস্থা। আজ যাদের ক্ষমতা আছে তারা দায়িত্বে থাকলেও কাজে আজকে এক দেশে অপর দেশের মানুষকে শধু ক্ষমতার দাপটে মানুষ মনে করছে না। অথচ ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অসহায় মানুষগুলোকে ব্যবহার করে জীবননাশ করে দিচ্ছে এমন ঘটনা প্রায় হচ্ছে কিন্তু কেন মানুষ মানুষকে স্বার্থ উদ্ধারে ব্যবহার করে খুন করবে? সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ সেই মানুষগুলো যখন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে একটা পরিবার ধ্বংস করে দেয় যা মানবতা বিরোধী। ধনাঢ্য ব্যক্তি বা রাষ্ট্র বাস্তবসম্মতভাবে মানুষের অধিকার ফিরে পাক সেদিকে এগিয়ে আসছে না বিধায় দিনে দিনে মানুষ অসহায় হয়ে পড়ছে জাতি-ধর্ম-বর্ণের উর্ধ্বে মানবপ্রেম এবং মানবাধিকার মানুষের আসল পরিচয়। কিন্তু এসব আজ কেবল বইয়েই রয়েছে বাস্তবে নেই। আজকাল তো মানুষ প্রতিবাদ করার ভাষাও হারিয়ে ফেলছেন। চোখে দেখছেন অন্যায় হচ্ছে, সহ্য করতে পারছেন না কিন্তু তারপরও মুখ দিয়ে টু শব্দ করছে না,কী জানি কী হয়ে যায় এই ভয়ে। পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ জলবায়ু উদ্বাস্তু হওয়ার আগেই বিশ্বের শতকোটি মানুষ রাজনৈতিক-মানবিক- অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্বের শিকার হয়েছে। তবে সামাজিক জীবন যাপনের তাগিদে বা নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে সে বিপরীতমুখী আচরণও করে। নিজেকে ক্ষমতাবান হিসেবে প্রকাশ করার লিপ্সায় মত্ত হয়। তখন উপকারের রূপ বদলে গিয়ে তা স্বার্থসিদ্ধির পন্থায় পরিণত হয়ে যায়। ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও প্রতিযোগিতার যুগে মানুষ ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সভ্যতার বিকশিত সময় ও আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতির যুগেও মনুষ্য সমাজে সহিংসতা, রক্তপাত, হানাহানি, বিদ্বেষ, প্রতিহিংসা পরায়ণতা আর উন্মাদনার যে চিত্র প্রায় নিত্য ফুটে উঠছে, এতে মানবতা আজ বিপন্ন। পৃথিবীতে মানুষের যা কিছু উদ্যোগ-উদ্যম, সবকিছুই শান্তিতে বেঁচে থাকার লক্ষ্যকে ঘিরে আবর্তিত হয়। পৃথিবী সুখময় না দুঃখময় এ নিয়ে তাত্ত্বিক বিতর্ক হতে পারে কিন্তু এ কথা সন্দেহাতীতভাবে প্রতিষ্ঠিত যে বিশ্বে নিরাপদে বেঁচে থাকার সাধনাতেই মানুষ নিজেকে ব্যস্ত রাখে। অথচ মানবাধিকারের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ভোগ প্রত্যেক নাগরিকের আছে। আজ চারিদিকে দেখা যায় মানবতার পোশাকধারীদের। কিন্তু যাদের হাত দিয়ে মানবতা ফেরি করার কথা তারা তাদের নিয়ে ব্যস্ত। তাই তো আজ শোনা যায় আকাশে-বাতাসে মানবতার আহাজারি। আজকের দিনে বিশ্বব্যাপী সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশাই এখন সবার। মানবতাবাদীরা জেগে উঠুক এবং ঘুমন্ত বিবেবকে জাগিয়ে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হোক।কল্যাণের পথে এগিয়ে থাকুক। জয় হোক মানবতার এটাই বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা।

দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
চাটমোহরে ছাত্রদল নেতা গুলিবিদ্ধ, কাটা হয়েছে পায়ের রগ দেশ গঠনের বার্তা দেবেন তারেক রহমান পিতাপুত্রের টাকা পাচার যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে: মুজিবুর রহমান বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় কুষ্টিয়ার বিভিন্ন সরকারি কলেজের দাপুটে শিক্ষক মহোদয়দের অনৈতিক কার্যকলাপ কুমারখালীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দলোনে শহীদদের স্বরণে নাগরিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত। ত্রাণ নিয়ে মানুষ ছুটছে টিএসসিতে ভারতের বাঁধ ভাঙা পানিতে ডুবছে গ্রামের পর গ্রাম বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ–ভারতের নতুন ব্যবস্থার প্রস্তাব: প্রধান উপদেষ্টার ২১ দশমিক ৬ শতাংশ টাওয়ার অচল চট্টগ্রামের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ বন্যার্তদের উদ্ধারে সেনা মোতায়েন এখন পর্যন্ত ৩৬ লাখ মানুষ বন্যাকবলিত বন্যায় ভয়াবহ বিপর্যস্ত ১২ জেলা, মৃত্যু ৮ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের রিট শুনানি ঘিরে সারাদেশে সতর্ক পুলিশ তাহিরপুর বিভিন্ন ছড়া ও নদীর খনিজ বালু হরিলুট,যেন দেখার কেউ নেই নোয়াখালী-কুমিল্লা-ফেনীতে ভারী বৃষ্টি থাকতে পারে আরও ৪৮ ঘণ্টা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হলেন হাফিজ উদ্দিন খালেদা জিয়াকে শিগগিরই বিদেশে নেওয়া হবে : মির্জা ফখরুল বগুড়ায় শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ১০১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা