
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-মেঘালয় করিডোর চান সাংমা

সীমান্তে ফের বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করল বিএসএফ

আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি প্রত্যাশিতভাবে ক্ষমতায় আসবে: এএফপি

ঢাকা মেডিকেল থেকে হিজবুত তাহরীর চার সদস্য আটক

সাংবাদিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ

নারীর নিরাপত্তা ও সাইবার সুরক্ষার দাবিতে এনসিপির বিক্ষোভ শনিবার

পুঠিয়া যেন প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শনের রাজধানী
ভোটের আগে মাঠের তথ্য যাচাই না করার সুপারিশ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বহাল বা বাতিলের বিষয় ঘাঁটাতে চায় না নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়। নিবন্ধন বাতিল বা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিতে গেলে মামলাসহ নানা ধরনের বিতর্ক হতে পারে- এমন শঙ্কা ইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের। সম্প্রতি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন শর্ত প্রতিপালন যাচাইসংক্রান্ত কমিটির এক সভায় এসব উঠে আসে।
তাদের যুক্তি, আরপিওর নিবন্ধনসংক্রান্ত ধারা ৯০ এর (১)(খ) ও ৯০ ঘ উপধারা দুটি বর্তমানে অকার্যকর। এ অবস্থায় কোনো দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। ওই শঙ্কা থেকেই ১৩টি রাজনৈতিক দলের মাঠ পর্যায়ে সাংগঠনিক কাঠামো ও দলীয় কার্যালয় আছে কীনা-তা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ‘সুবিধাজনক সময়ে’ যাচাইয়ের সুপারিশ করেছে এ কমিটি। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
যদিও নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর ভিন্ন কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে এসব রাজনৈতিক দলের বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে খোঁজখবর নিয়ে তাদের নিবন্ধন বহাল বা বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
তিনি বলেন, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নিবন্ধন শর্ত প্রতিপালন করছে কীনা-সেই তথ্য আনা হয়েছে। নতুন দলের নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর তাদের অফিস ভেরিফিকেশন করা হবে। যেসব দল সাংগঠনিক কাঠামো দেখিয়ে নিবন্ধন পেয়েছে তারা শর্ত মানছে কীনা-সেটা আমরা খোঁজখবর নেব। নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। তবে রাজনৈতি দলের কমিটিতে ২০২০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখার বিষয়ে অন্যতম শর্ত ছিল। কিন্তু নিবন্ধিত আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ ৩৯টি দলই এটা পালনে ব্যর্থ। এর পরও এ বিষয়ে ইসি পদক্ষেপ নেবে না বলেও জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের শর্ত যাচাই কমিটির এক সদস্য বলেন, আমাদের সুপারিশ নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলে ধরব। নির্বাচন কমিশন আমাদের সুপারিশ রাখতে পারে, আবার ফেরতও দিতে পারে।
তিনি বলেন, আইনে উল্লেখ করা সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ার কারণে ৯০খ(খ)(আ) এবং ৯০ ঘ উপধারা দুটি এখন অকার্যকর। এ কারণে ওই দুটি ধারা প্রয়োগ করে নিবন্ধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গেলে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। আমাদের শঙ্কার কথা কমিশনকে জানানো হবে।
জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ইসি যে কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে সেখানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো শর্ত পূরণ করছে কীনা-তা যাচাইয়ের কথা বলা হয়েছে। যেসব দল শর্ত প্রতিপালন করবে সেগুলোর নিবন্ধন বহাল ও বাকিগুলোর নিবন্ধন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথাও রয়েছে। আগামী মে মাসের মধ্যে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে কর্মপরিকল্পনায় বলা আছে। এ হিসাবে ইসির হাতে আছে মাত্র দুই মাসের কিছু বেশি সময়।
সূত্রমতে, বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আছে ৩৯টি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে যেকোনো সংসদ নির্বাচনে অন্তত একটি আসনে জয়ী হওয়ার শর্ত পূরণ করায় ২২টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পেয়েছে। ওইসব নির্বাচনে অংশ নেওয়া আসনে জয়ী না হয়েও শুধু দলীয় প্রতীকে অন্তত ৫ শতাংশ ভোট পাওয়ার শর্ত পূরণ করায় আরও চারটি দল নিবন্ধন পেয়েছে। দুই শর্ত পূরণ করতে পারেনি কিন্তু দেশের অন্তত একশ’ উপজেলা বা থানা ও এক তৃতীয়াংশ জেলায় দলীয় কার্যালয় ও কমিটি আছে-এমন সাংগঠনিক কাঠামো দেখিয়ে বাকি ১৩টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পেয়েছে। এর বাইরে সর্বশেষ আদালতের রায়ে ‘তৃণমূল বিএনপি’ নামের একটি দল নিবন্ধন পেয়েছে। যদিও এ দলটির নিবন্ধনসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন এখনো জারি করেনি ইসি।
যে ১৩টি দল সাংগঠনিক কাঠামো দেখিয়ে নিবন্ধন পেয়েছে সেগুলোর মাঠ পর্যায়ের কার্যালয় ও কমিটি ঠিক আছে কীনা-সে বিষয়ে খতিয়ে দেখতে কাজ করছে ইসির একটি কমিটি। সম্প্রতি ওই কমিটির এক সভায় এসব দলের সাংগঠনিক কাঠামো জাতীয় নির্বাচনের পর যাচাইয়ের সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত হয়। এতে বলা হয়, মাঠ পর্যায়ের সাংগঠনিক কাঠামোর ভিত্তিতে ১৩টি দলের নিবন্ধন বহাল রাখা বা না রাখার বিষয়ে এখন কোনো সিদ্ধান্ত নয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সুবিধাজনক সময়ে যাচাই-বাছাই করা যায়।
ওই ১৩টি রাজনৈতিক দল হচ্ছে-জাকের পার্টি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, বাংলাদেশ কংগ্রেস এবং জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)।
যদিও বাংলাদেশ কংগ্রেস ও জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) আদালতের রায়ে নিবন্ধন পায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নিবন্ধন টিকিয়ে রাখার জন্য উপরোক্ত ১৩টিসহ ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে কিছু শর্ত প্রতিপালন করতে হয়। তার একটি হচ্ছে-আরপিওর ৯০খ(খ)(আ) উপধারা। এ উপধারায় নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের প্রতিটির গঠনতন্ত্রে ২০২০ সালের মধ্যে কেন্দ্রীয় থেকে মাঠ পর্যায়ের প্রত্যেক কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য থাকার শর্ত রয়েছে। কোনো দলই ওই শর্ত পূরণ করতে পারেনি।
নির্বাচন কমিশনের চিঠির জবাবে সম্প্রতি দলগুলো জানিয়েছে, ওই শর্ত পূরণে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছে। উপধারা লংঘনের দায়ে কোনো রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তারা আরপিওর উপধারাটি সংশোধন করে ২০৩০ সাল পর্যন্ত বেঁধে দেওয়ার প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
এ বিষয়ে ইসির অবস্থান সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর রোববার বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলই ওই শর্ত পূরণ করেনি। তাই আমরা মনে করি দলগুলোকে আরও সময় দেওয়া দরকার। এজন্য আরপিও সংশোধনীতে ১০ বছর সময় বাড়িয়ে ২০৩০ সাল করার প্রস্তাব করেছি।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।