মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স
বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। প্রায় ১২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৪ জেলা এবং ৪২১ উপজেলায় ‘মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স’ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও ২২টি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ চলমান। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের মোট ৪৭০টি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে।
মহান স্বাধীনতা বাঙালি জাতির ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন এবং সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ হাজার বীরনিবাস নির্মাণের কাজ চলছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা মাসিক ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং জেলা-উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সারাদেশে বধ্যভূমি সংরক্ষণ এবং সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর একই ডিজাইনে নির্মাণের কাজও চলমান।
সম্মানী ভাতার পাশাপাশি শহীদ, যুদ্ধাহত ও সাত বীরশ্রেষ্ঠ এবং তারামন বিবিসহ বীর প্রতীক হিসেবে মোট ১১ হাজার মুক্তিযোদ্ধা পরিবার রেশনসামগ্রীও পান। সামরিক-অসামরিক নির্বিশেষে সব যুদ্ধাহত, শহীদ ও খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে কল্যাণ ট্রাস্টের আইন পরিবর্তন করে ২০১৮ সালে নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়। এর মাধ্যমে মোট ১১ হাজার ৯৯৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের পরিবারের রাষ্ট্রীয় সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে।
জীবন বাজি রেখে যারা বাংলাদেশকে মুক্ত করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, জিয়া ও বিএনপি সরকার তাদের সম্মান দেওয়ার বদলে জীবন নিয়েছে। তাদের শাসনামলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অমূল্য জীবন দিতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাদের নানাভাবে সম্মাননা দিয়ে আসছে। তাদের সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়ানোর হচ্ছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি ঘাতকরা আমাদের প্রায় লক্ষাধিক নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধের ৪৭ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস প্রতিষ্ঠা করে। একদিন আমাদের মাঝ থেকে দেশের সব বীর মুক্তিযোদ্ধা চলে যাবেন। এ জন্য তাদের সম্মানে মুক্তিযোদ্ধা দিবসও পালন করা প্রয়োজন।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়), উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থানগুলো সংরক্ষণ ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণ, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধার সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, ১৯৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যার জন্য ব্যবহৃত বধ্যভূমিসমূহ সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, মুক্তিযুদ্ধকালে শহীদ মিত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন নির্মাণ প্রকল্প, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্যানোরমা নির্মাণ (কারিগরি সহায়তা), বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের নৌ-কমান্ডো অভিযান ‘অপারেশন জ্যাকপট’ বিষয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রভৃতি প্রকল্প চলমান। এছাড়াও আরও ৩টি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারই মুক্তিযাদ্ধাদের কল্যাণে পদক্ষেপ নেবে, অন্য কোনো সরকার নয়।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।