
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

আজ ঢাকায় আসছে মার্কিন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল

সংসদ ভবনের সামনে চলছে নববর্ষের কনসার্ট

অপরাধীদের ‘সেকেন্ড হোম’ বস্তির ৩০০ ঘর

সরকারি ফার্মেসি: সম্ভাবনার পাশাপাশি আছে নানা চ্যালেঞ্জও

বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-মেঘালয় করিডোর চান সাংমা

সীমান্তে ফের বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করল বিএসএফ

আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি প্রত্যাশিতভাবে ক্ষমতায় আসবে: এএফপি
যেভাবে পতন হলো শেখ হাসিনা সরকারের

টানা ১৫ বছর ৬ মাস ক্ষমতায় থাকার পর অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ভাগ্যজনক ভাবে পতন ঘটলো শেখ হাসিনার নেতৃত্বের আওয়ামী লীগ সরকারের। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেন।
কদিন আগেই তিনি বলেছিলেন শেখ হাসিনা পালায় না। কিন্তু তার কথায় তিনি মিথ্যা প্রমাণ করলেন। তিনি সত্যি সত্যি পালিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগ গত সাড়ে ১৫ বছরে অনেক উন্নয়ন করেছে। কিন্তু দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন, অর্থপাচার সীমাহীন পর্যায় চলে গিয়েছিল। কিছু কিছু ব্যক্তির লাগামহীন দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচরিতার কারণে সরকার জনগণের কাছ থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। সুশাসনের অভাব এবং ভোটার বিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছিল। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন জনগণ বর্জন করে। এই নির্বাচনের পর অবশ্য আন্তর্জাতিক মহল থেকে সরকারকে সমর্থন জানানো হয়, সহানুভূতি জানায়। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলন শেষ পর্যন্ত সামাল দিতে পারেনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অতি বিশ্বাসের কারণে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটেছে। গত ১৫ বছর একাই তিনি সবকিছু সামলেছেন কিন্তু একটি দেশ পরিচালনা এক ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয় তা প্রমাণিত হয়েছে। আর একা সবকিছু সামাল দিতে গিয়ে সবকিছু এলামেলো হয়ে গেছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের মন্ত্রিসভায় তিনি কিছু দায়িত্বহীন, অযোগ্য, অর্থব ব্যক্তিদেরকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা তার দলকেও ঠিক রাখতে পারেনি। সাংগঠনিক ভাবে দল হয়ে পড়েছিল বিভক্ত এবং উদ্যোমহীন। দলের ভেতর চাটুকারদের ভিড় জমেছিল। বিশেষ করে দলের সাধারণ সম্পাদক একজন হাস্যকর ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। এ রকম একটি পরিস্থিতির মুখে কোটা আন্দোলন মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার।
চারটি কারণে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলো বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
১. কোটা আন্দোলন মোকাবিলায় ব্যর্থতা: কোটা আন্দোলনের মোকাবিলায় শুরু থেকেই সরকার উপেক্ষা করেছে, আত্মঅহংকার দেখিয়েছে। এবং তুচ্ছ্য তাচ্ছিল্য করেছে। ফলে আন্দোলন আস্তে আন্তে বেগবান হয়েছে। একটা সময় আন্দোলন বিষ্ফোরণে রূপ নিয়েছে।
২. শেখ হাসিনার অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস: শেখ হাসিনা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিলেন। তিনি যা বলবেন সেটিই সঠিক। এরকম একটি অবস্থানে যাওয়ার কারণে বিরুদ্ধ মত শুনতেন না, অন্যের ভালো পরামর্শ শুনতেন না। এটি তার পতনের বড় কারণ বলে অনেকে মনে করছেন।
৩. যোগ্য উপদেষ্টাদের অভাব: শেখ হাসিনাকে সৎ পরামর্শ দিবে এমন যোগ্য উপদেষ্টা থাকার অভাব ছিলো প্রবলভাবে। বিশেষ করে মন্ত্রী এবং আমলারা শেখ হাসিনাকে বিভ্রান্ত করেছে এবং জনবিচ্ছিন্ন করেছে।
৪. লুন্ঠনের রাজনীতি: গত ১৫ বছর ধরে একটি ধনিক গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। যারা অর্থনীতিতে ব্যাপক লুটপাট করেছে। এই লুটপাটের কারণেই জনগণ শেখ হাসিনার কাছে থেকে দূরে সরে গেছেন এবং আওয়ামী লীগ সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সবকিছু মিলিয়ে জনগণের কাছে থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যে একটি সরকার টিকতে পারে না, আজ শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে তা আরেকবার প্রমাণিত হলো।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।