
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

দুঃসময়ে লিটনের পাশে থিসারা পেরেরা

কোহলির নট আউট বিতর্ক নিয়ে আইসিসি

লাল কার্ডের ম্যাচে ফের্নান্দেজের জোড়া গোলে কিংসের কাছে বিধ্বস্ত পুলিশ

শামীমের ঝড়ো ব্যাটিংয়েও রক্ষা হলোনা চিটাগাং কিংসের

বিনিয়োগ করতে হবে ক্রিকেটে, কনসার্ট বা অন্য কিছুতে না: তামিম

সাড়ে তিন লাখ টাকা প্রাইজমানির টেনিসে অংশ নিচ্ছেন ২১০ খেলোয়াড়

অবিশ্বাস্য জয় নিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ
লিটনকে আউট করে তাসকিনের আনন্দ

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ৭ উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়েছেন তাসকিন আহমেদ। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে সাত উইকেটে নেওয়ার ইতিহাস ছিল দুটি। তাসকিন আজ দুর্বার রাজশাহীর হয়ে সাত উইকেট নিয়ে সংখ্যাটা তিন করেছেন। বাংলাদেশি হিসেবে অবশ্য এমন কীর্তি ছিল না কারও। এদিন সাত উইকেট নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ডানহাতি পেসার। এই ম্যাচে সাত উইকেট নেওয়া তাসকিন সবচেয়ে আনন্দ পেয়েছেন লিটন দাসকে শূন্য রানে ফিরিয়ে।
ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে আগুনে বোলিং করে ম্যাচ সেরা হওয়া তাসকিন সংবাদ সম্মেলনে এসে সাত উইকেট পাওয়ার গল্প শুরু করেন এভাবে, ‘উইকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে একটু ভাগ্যের সহায়তা পাওয়া লাগে। আমি খুশি, বোলিংয়ে যেটা করতে চাচ্ছি, সেটা বাস্তবায়ন করতে পারছি। আসলে ভালো বোলিং করতে পারাটাই গুরুত্বপূর্ণ। উইকেট তো অনেক সময় দুইটা কম হয়, দুইটা বেশি হয়। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।’
এরপরই তাসকিন ম্যাচ শুরুর আগের গল্পটা শেয়ার করলেন, ‘‘আজকে একটা মজার বিষয় ছিল যে আমাদের টিমের মেসয়োর আনোয়ার বলছিল, ‘ভাইয়া তুমি আজকে চার উইকেট পাবা।’ তখন আমি বলেছি, ‘চাচ্ছিস যেহেতু আল্লাহর কাছে বেশিই চাইবি। ৮ উইকেটও তো হইতে পারে।’ ৭ উইকেট পেয়ে গেছি আজকে। আলহামদুল্লিলাহ সো ফার আমি আমার প্ল্যান এক্সিকিউট করতে পেরেছি এবং জিতেছি। ভালো লাগতেছে।’’
বেশি উইকেটের চিন্তা না করে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে গেছেন তাসকিন, ‘না আসলে লোভে যাইনি। বেশি লোভে গেলে দেখা গেলো হাফভলি হতে পারতো। সিচুয়েশন অনুযায়ী কী করা দরকার সেটা করতে পেরেছি। ভালো লাগছে যখনই ক্যাপ্টেন আমাকে বিশ্বাস করে নিয়ে এসেছে, ব্রেক থ্রু এনে দিতে পেরেছি আলহামদুল্লিলাহ।’
কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের কারও সাত উইকেট নেওয়ার কীর্তি নেই। এর আগে মালয়েশিয়ার সায়ারুল ইজাত ইদ্রুস ২০২২ সালে চীনের বিপক্ষে ৪ ওভারে মাত্র ৮ রানে ৭ উইকেট নিয়েছেন। তারও আগে ২০১৯ সালে কলিন আকারম্যান ৪ ওভারে ১৮ রানে ৭ উইকেট পেয়েছিলেন ইংল্যান্ডের ভাইটালিটি ব্ল্যাস্ট টুর্নামেন্টে। এমন অর্জনে তৃপ্ত তাসকিন, ‘ফাইফার তো যে কোনও ফরম্যাটে অনেক স্পেশাল। কারণ অনেকবার তিন উইকেট, চার উইকেট পেয়েছি, কিন্তু উইকেটের সঙ্গে ভাগ্য লাগে পাঁচ উইকেট পেতে। আলহামদুল্লিলাহ এটা আমার জন্য বড় পাওয়া। যেহেতু আমি বাংলাদেশের ছেলে বিপিএলের ইতিহাসে আমার একটা নাম থাকবে খেলা ছাড়ার পরও, এটা সেজন্য একটা প্রাউড মোমেন্ট।’
তাসকিনের সন্তান তাসফিন আহমেদ ক্রিকেট পাগল। বিশেষ করে বাবার ভালো দিনে তার উচ্ছ্বাসের শেষ থাকে না। বাজে দিনে ভীষণ মন খারাপ করে থাকেন। আজকে ভালো করায় তাসফিন দারুণ খুশি। ছেলেকে এই অর্জন উৎসর্গ করেছেন তাসকিন, ‘আসলে দিনশেষে যখন ভালো করি বা উইকেট পাই, আমার ছেলে, আমার বাবা- এরা অনেক খুশি হয়। ডেফিনিটলি ওদের সমর্থনও প্রেরণার। কারণ যেদিন ভালো বোলিং করতে পারি না, সেদিন তাসফিন অনেক মন খারাপ করে। আজকে আমি শিওর ও অনেক খুশি। তো এটা তাসফিনের জন্যই।’
বিপিএলের উইকেট সব সময়ে রহস্যহজনক। কিন্তু এবার কিছু ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে। ব্যাটারার যেমন দারুণ ব্যাটিং করতে পারছেন, বোলাররাও তেমন সুবিধা পাচ্ছেন। মিরপুরের উইকেট নিয়ে তাসকিন বলেছেন, ‘হ্যাঁ, একটু চ্যালেঞ্জিং। লুজ বল করে মাফ পাওয়া যাচ্ছে না। মার্জিন ছোট। এতে আমাদের বোলারদের জন্যও ভালো, ব্যাটারদের জন্যও ভালো। বেটার এক্সিকিউশন করতে হবে এবং নিউ বলেও প্রথম দুই-তিন ওভার ব্যাটারদের জন্য চ্যালেঞ্জ থাকছে। তার পর আস্তে আস্তে যত সময় যাচ্ছে ফ্ল্যাট হচ্ছে বা ব্যাটে সুন্দর আসছে। তো এটাতে ব্যাটিং-বোলিং দুইটাতে অ্যাডভান্টেজ। সামনে পাকিস্তান এবং দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। আশা করি, এটা আমাদের কাজে দেবে। এমন উইকেটে খেললে ভালো কারণ আমরা সচরাচর ফ্ল্যাট উইকেটগুলোতে কম খেলি, ইন্টারন্যাশনালে গিয়ে পাই। তো আমাদের অ্যাডজাস্ট করতে একটু প্রব্লেম হয়। এই রকম সব সময় যদি থাকে তাহলে আমাদের জন্য ভালো হবে।’
বৃহস্পতিবার ঢাকা ক্যাপিটালসের দুই ওপেনার লিটন দাস (০) আর তানজিদ হাসান তামিমকে (৯) তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। এরপর শাহাদত হোসেন দিপু আর স্টিফেন এক্সিনজি ৪৭ বলে ৭৯ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন। স্টিফেন ২৯ বলে করেন ৪৬। আর দিপু ৪১ বলে ৫০ রানে তাসকিনের তৃতীয় শিকার হন। ঢাকা অধিনায়ক থিসারা পেরেরা ৯ বলে ২১ রানের ছোট্ট একটা ঝড় তুলেছিলেন। তাকে থামান মোহর শেখ। পরের সময়টা কেবলই ছিল তাসকিনের। একে একে তুলে নেন শুভাম রনজি (২৪), চতুরাঙ্গা ডি সিলভা (১), আলাউদ্দিন বাবু (১৩) ও মুকিদুল ইসলামকে (০)। এর মাঝে এবং নিজের শেষ ওভারেই নিয়েছেন তিন উইকেট। সবমিলিয়ে সাত উইকেট নেওয়া তাসকিন সবচেয়ে আনন্দ পেয়েছেন লিটনকে আউট করে, ‘ফাস্ট বলটা যেটাতে লিটন আউট হলো। আনপ্লেয়বল ডেলিভারি ছিল, মানে যে কোনও ব্যাটারের ওইখানে ব্যাট দিতেই হতো এবং নিয়ে গেছে। এই রকম উইকেটে ক্যারি করলে ফাস্ট বোলাররা একটু বাড়তি বুস্টআপ হয় এবং বাংলাদেশে ক্যারি করছে মানে ভালো ইঙ্গিত। আর সবগুলো উইকেটই অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু প্রথম উইকেটটা বেশি।’
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।