নিউজ ডেক্স
আরও খবর
ইউক্রেনে শতাধিক ড্রোন হামলা চালাল রাশিয়া
ইসরাইলের হামলায় গাজায় নিহত আরও ৮৮
ইসরায়েলের কাছে ৮ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করবে যুক্তরাষ্ট্র
ট্রাম্পের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করতে আগ্রহী ভারত
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন প্রসঙ্গে ভারত
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় হামাসের পুলিশ প্রধানসহ ১১ জন নিহত
হামাস ও হিজবুল্লাহর পরিণতি ভোগ করবে হুথিরা: ইসরায়েল
শান্তি আলোচনায় ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্ব প্রস্তুত নয়: পুতিন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, চীনের শান্তি প্রস্তাব ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের ভিত্তি হতে পারে।
তবে এ প্রস্তাব তখনই এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে যখন ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলো শান্তি প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী হবে। শান্তি আলোচনার জন্য ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্ব মোটেও প্রস্তুত নয়। মঙ্গলবার মস্কোয় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে পুতিন এমন মন্তব্য করেন।
বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধ, শান্তিপ্রক্রিয়া, চীন-রাশিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে দুই নেতা আলোচনা করেন। এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও চান শান্তি প্রক্রিয়ায় চীন যুক্ত হোক। মঙ্গলবার কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের প্রতি তিনি এমন আহ্বান জানান। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, চীনের পক্ষে নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হওয়া অসম্ভব।
ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে ফেব্রুয়ারিতে ১২ দফার একটি প্রস্তাব দেয় চীন। এ শান্তি প্রস্তাবের মূল কথা-রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো ও আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ইউক্রেন যুদ্ধের স্থায়ী সমাধান। তবে চীনের এ শান্তি প্রস্তাবে স্পষ্ট করে বলা নেই-রুশ বাহিনী ইউক্রেন ছেড়ে যাবে কিনা। যদিও ইউক্রেন সরকার বরাবরই বলে আসছে, ‘দখলদার’ রুশ বাহিনীকে ইউক্রেন থেকে শর্তহীনভাবে বিদায় নিতে হবে। তা না হলে শান্তি প্রক্রিয়া কঠিন হয়ে যাবে। মস্কোয় যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, চীনা শান্তি প্রস্তাবের অনেকগুলো শর্ত গ্রহণ করার মতো। এর মধ্য দিয়ে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার ভিত্তি হতে পারে। কিন্তু সেটা তখনই সম্ভব হবে যখন কিয়েভ ও পশ্চিমারা শান্তির জন্য প্রস্তুত থাকবে। পুতিন বলেন, ইউক্রেন ও পশ্চিমাদের এই ‘প্রস্তুত’ থাকার বিষয়টি রাশিয়া এখন পর্যন্ত দেখেনি। এ সময় পুতিনের পাশে দাঁড়িয়ে শি বলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে তার দেশ শান্তি ও আলোচনার পক্ষে রয়েছে এবং ইতিহাসের সঠিক পক্ষেই রয়েছে। এ সময় চীনের এ অবস্থানকে ‘নিরপেক্ষ’ বলেও দাবি করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যের দিকে অভিযোগের তির ছুড়েছেন পুতিন। পুতিনের মন্তব্য-যুক্তরাজ্য যদি ‘পারমাণবিক উপাদানসমৃদ্ধ’ অস্ত্র ইউক্রেনকে দেয় তাহলে মস্কো চুপ থাকবে না। প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য হবে। এর পাশাপাশি পুতিন ও শি পশ্চিমা দেশগুলোর কড়া সমালোচনা করেন। যৌথ ঘোষণায় তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্ন করছে, ন্যাটো তাদের এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নাক গলাচ্ছে। দুজনের যৌথ ঘোষণায় জানানো হয়, রাশিয়া ও চীন ‘ব্যাপক অংশীদারত্ব ও কৌশলগত মিথস্ক্রিয়ার একটি নতুন যুগে প্রবেশের মাধ্যমে সম্পর্ক গভীর’ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। তারা ২০৩০ সালের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার মূল ক্ষেত্রগুলোর জন্য একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করবে বলেও জানিয়েছে। দুই নেতা বাণিজ্য, শিল্প, বিজ্ঞান ও সামরিক খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এক ডজনেরও বেশি নথিতে স্বাক্ষর করেন। বৈঠকের পর নৈশভোজে পুতিন বলেন, বিশ্ব শক্তিগুলো যারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং যাদের এ গ্রহের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বজায় রাখার বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে, তারা কীভাবে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলবে এটি তার একটি উদাহরণ।
এদিকে শি জিনপিং যখন মস্কো সফরে রয়েছেন, পুতিনের সঙ্গে বৈঠক-সংবাদ সম্মেলন করছেন, ঠিক তখন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা আকস্মিক সফরে কিয়েভে গেছেন। ভারত সফর শেষে টোকিও না ফিরে তিনি পোল্যান্ড হয়ে কিয়েভে গেছেন। সেখানে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে মস্কো-কিয়েভের মধ্যস্থতাকারী হিসাবে চীনের ভূমিকা রাখার আগ্রহে যুক্তরাষ্ট্র বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হিসাবে চীনের সক্ষমতা রয়েছে বলে মনে হয় না। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, আমি মনে করি না আপনারা চীনকে যুক্তিসঙ্গতভাবে নিরপেক্ষ ভূমিকায় দেখতে পারেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের সমালোচনা থেকে বিরত রয়েছে চীন। শুধু তাই নয়, মস্কো থেকে তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে দেশটি। তিনি আরও বলেন, রাশিয়া ও চীন আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার নিয়মে পরিবর্তন আনতে চায়।
এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধ থামিয়ে দিয়ে রুশ বাহিনীর দেশে ফেরার কোনো লক্ষণ এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। ইউক্রেনের বিভিন্ন জায়গায় এখনো চলছে দুই পক্ষের লড়াই। চলছে আকাশপথে হামলা। রুশ অধিকৃত ক্রিমিয়ার কর্তৃপক্ষ বুধবার জানিয়েছে, কৃষ্ণসাগরে রুশ বহরে তিনটি ড্রোনের হামলা প্রতিহত করা হয়েছে। এর আগে সোমবার ক্রিমিয়ায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের একটি চালানে বড় ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র রেলপথে কৃষ্ণসাগরের রুশ বহরে নেওয়া হচ্ছিল।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।