
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

৪৮ ঘণ্টায় ১০০-র বেশি কম্পন, বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা

আমেরিকা দখল কেন অসম্ভব?

ইউক্রেনে শতাধিক ড্রোন হামলা চালাল রাশিয়া

ইসরাইলের হামলায় গাজায় নিহত আরও ৮৮

ইসরায়েলের কাছে ৮ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করবে যুক্তরাষ্ট্র

ট্রাম্পের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করতে আগ্রহী ভারত

শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন প্রসঙ্গে ভারত
হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল যুদ্ধের আশঙ্কা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে

ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে বৃহত্তর যুদ্ধের শঙ্কা জোরালো হচ্ছে। সম্প্রতি পাল্টাপাল্টি হামলা জোরালো হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে, গাজায় কোনও যুদ্ধবিরতি চুক্তি না হলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে বড় আকারের সংঘাত শুরু হতে পারে। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকো এ খবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা উভয় পক্ষকে উত্তেজনা হ্রাসে সহায়তা করার চেষ্টা করছেন। তাদের মতে, গাজায় হামাস-ইসরায়েল একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলে উত্তেজনা কমানো অনেক সহজ হবে। বর্তমানে চুক্তিটি নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে শিগগিরই হামাস ও ইসরায়েল কোনও যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে বলে আশাবাদী নন মার্কিন কর্মকর্তারা।
গোয়েন্দা তথ্য সম্পর্কে অবগত অন্তত দুজন সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ইতোমধ্যে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) এবং হিজবুল্লাহ নিজেদের যুদ্ধের পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে এবং অতিরিক্ত অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টায় রয়েছে। প্রকাশ্যে উভয় পক্ষই সর্বাত্মক যুদ্ধ চায় না বলে দাবি করছে। তবে বাইডেন প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তারা ক্রমবর্ধমানভাবে মনে করতে শুরু করেছেন, উত্তেজনা কমানো ও সংঘাত এড়ানোর চেষ্টার পরও তীব্র যুদ্ধ শুরু হতে পারে।
অপর এক সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তার দাবি, যেকোনও সময়ের চেয়ে বর্তমানে সংঘর্ষের ঝুঁকি অনেক বেশি।
ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে রক্ষায় ভূমিকা নিতে বাধ্য করবে। এর ফলে বাইডেন প্রশাসন এমন একটি অঞ্চলে যুদ্ধে জড়াতে বাধ্য হবে, যেখান থেকে কয়েক বছর ধরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে তারা। এ যুদ্ধ আরেকটি মানবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি তৈরি করে। গাজায় যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যে ত্রাণ সংস্থাগুলো হিমশিম খাচ্ছে।
হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা নিয়ে ইউরোপের চেয়ে মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য কিছু মাত্রায় রক্ষণশীল। ইউরোপীয় দেশগুলোর শঙ্কা, কয়েক দিনের মধ্যে এই যুদ্ধ শুরু হতে পারে। অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের লেবানন ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছে। কানাডাও দেশটি থেকে হাজার হাজার মানুষ সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লেবাননে ভ্রমণ না করার জন্য একটি পরামর্শ জারি করেছে।
দুই সিনিয়র কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেছেন, যুদ্ধ কখন শুরু হতে পারে তা স্পষ্ট নয়। তবে তারা উল্লেখ করেছেন, ইসরায়েল দ্রুত তার মজুত ও সেনাবাহিনীর সক্ষমতা পুনর্গঠন করার চেষ্টা করছে।
হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন বলেছেন, বাইডেন প্রশাসন একটি ‘কূটনৈতিক সমাধানের’ জন্য কাজ করছে। যে সমাধানের ফলে ইসরায়েলি ও লেবানিজ নাগরিকরা তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে সক্ষম হবেন।
অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন বলেছেন, আমরা এমন একটি চুক্তি নিশ্চিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, যা গাজায় যুদ্ধের টেকসই সমাপ্তির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি চুক্তি অগ্রগতি ত্বরান্বিত করবে। এতে থাকবে লেবাননের সঙ্গে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে স্থায়ী নিরাপত্তা ও শান্তি। এই প্রস্তাবিত চুক্তিটি হামাসের কাছে পৌঁছানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত হামাসের ওপর নির্ভর করছে।
বাইডেন প্রশাসন কয়েক সপ্তাহ ধরে উভয় পক্ষকে যুদ্ধ থেকে বিরত রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত আমোস হকস্টাইনসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা সম্প্রতি পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টায় মধ্যপ্রাচ্য সফর করেছেন। এই প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বাইডেন প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তারা বলছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় কোনও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। ইসরায়েল সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছে—যা যুদ্ধের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
বাইডেন প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বুধবার সাংবাদিকদের বলেছেন, নাসরাল্লাহর যুক্তি হলো সবকিছু গাজার সঙ্গে সংযুক্ত। যতক্ষণ গাজায় যুদ্ধবিরতি হচ্ছে, ইসরায়েলে হামলা বন্ধ হবে না। আমরা এই যুক্তিকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করি।
গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে মার্কিন কর্মকর্তারা মনে করছেন, যেকোনও পক্ষ থেকে একটি হামলায় যুদ্ধের সূত্রপাত হতে পারে। হয়তো এতে আগাম কোনও সতর্কবার্তা পাওয়া যাবে না।
ওয়াশিংটন সফর করা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বুধবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ইসরায়েল ‘যুদ্ধ চায় না’। আমাদের লক্ষ্য হলো আমাদের নাগরিকদের নিরাপদে তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনা। আমরা সমঝোতার মাধ্যমে এটি করতে প্রস্তুত রয়েছি। তবে আমরা প্রতিটি সম্ভাব্য পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।
সূত্র : রয়টার্স
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।