৫৮ মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়েছেন আবদুল হাই বাচ্চু – দৈনিক গণঅধিকার

৫৮ মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়েছেন আবদুল হাই বাচ্চু

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৯ আগস্ট, ২০২৩ | ১১:০২ 31 ভিউ
বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ৫৮ মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চু। বুধবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এটি দায়ের করেছেন বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির এই মূল হোতা। হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে এর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার বেসিক ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনায় ২০ মামলায় ৪ আসামিকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। যদিও বুধবার তাদের আত্মসমর্পণের আদেশ স্থগিত করে দেন চেম্বার আদালত। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান গণমাধ্যমকে বলেন, ৫৮ মামলায় বাচ্চু আগাম জামিন চেয়েছেন। দুদক থেকে আমাকে জানানো হয়েছে। জানা গেছে, দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। গত ১৫ জুন পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে দুদক। এতে বলা হয়, শেখ আবদুল হাই বাচ্চুসহ একাধিক আসামির বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতিসহ বেসিক ব্যাংকের প্রায় ২ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মামলার রেকর্ডে প্রমাণ পাওয়া গেছে। গোপন সূত্রে খবর পাওয়া যায়, মামলার তদন্তে আসা আসামি শেখ আবদুল হাই বাচ্চু দেশত্যাগ করে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। ওই চিঠিতে, তিনি যেন বিদেশ যেতে না পারেন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষ পুলিশ সুপারকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়। দুদক সূত্র জানায়, ১২ জুন বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ৫৯টি মামলার ৫৮টিতে বাচ্চুকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় সংস্থাটি। গত ১২ জুন অর্থ জালিয়াতিসহ বেসিক ব্যাংকের দুর্নীতির ৫৯টি মামলায় সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১৫ সালে দায়ের হওয়া মামলার আট বছর পর শেষ পর্যন্ত ফেঁসে যান বাচ্চুসহ ১৪৭ জন। তাদের অভিযুক্ত করে গত ১২ জুন একযোগে ৫৯ মামলার চার্জশিট দিয়েছে দুদক। আসামিদের বিরুদ্ধে ২ হাজার ২৬৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই দিন কমিশন বৈঠকে এই চার্জশিট অনুমোদনের পর তা আদালতে দাখিল করা হয়। জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর তিন দিনে ৫৬টি মামলা দায়ের করা হয়। রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় দায়ের করা এসব মামলায় মোট ১২০ জনকে আসামি করা হয়। আসামির তালিকায় ৮২ ঋণগ্রহীতা, ২৭ ব্যাংকার ও ১১ জন ভূমি জরিপকারীর নাম থাকলেও ছিল না ঋণ কেলেঙ্কারির মূলহোতা আবদুল হাই বাচ্চুর নাম। ব্যাংকার ও ঋণগ্রহীতাদের অনেকেই একাধিক মামলায় আসামি করা হলেও আবদুল হাই বাচ্চু ছিলেন অধরা। তাকে কোনো মামলায়ই আসামি করা হয়নি। এ বিষয়ে বরাবরই দুদকের বক্তব্য ছিল, ‘ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় দালিলিকভাবে আব্দুল হাই বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।’ একই সঙ্গে রহস্যজনক কারণে মামলার তদন্ত আটকে ছিল। এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ আদালত একাধিকবার অসন্তোষ জানালে পালটে যায় সবকিছু। পরে মামলার তদন্তকালে দুদক জানতে পারে আলোচিত এই ঋণ কেলেঙ্কারির পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চু। গত ১২ জুন একযোগে দাখিল করা হয়েছে ৫৯ মামলার চার্জশিট। অভিযুক্ত করা হয়েছে বাচ্চুকেও। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার্জশিটে অভিযুক্ত হওয়ার পর আইনের চোখে এখন ফেরার দোর্দণ্ড প্রতাপশালী আবদুল হাই বাচ্চু। তাকে গ্রেফতারেও কোনো বাধা নেই। কিন্তু তার অবস্থান এখন কোথায় সে ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই তদন্ত সংস্থার কাছে। তবে আদালত চাইলে এ ব্যাপারে পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে তাকে গ্রেফতারের ব্যবস্থা করতে পারেন। জানা গেছে, আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে আবদুল হাই বাচ্চু গড়ে তুলেছেন বিশাল খামারবাড়ি। আট বছরে বিভিন্ন সময়ে বাচ্চুর যোগসূত্র খুঁজে পায়নি দুদক। এ নিয়ে দুদকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা একাধিকার গণমাধ্যমের কাছে দায়সারা বক্তব্য দেন। তারা দাবি করেন সম্পৃক্ততা না পেলে আবদুল হাই বাচ্চুকে আসামি করার সুযোগ নেই। কিন্তু হঠাৎ করে রহস্যজনক কারণে দুদকের পক্ষ থেকে অফিসিয়ালি বলা হচ্ছে, তিনি শুধু দায়ী নন। এ মামলার অন্যতম আসামি। প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন আবদুল হাই বাচ্চু। ২০১২ সালে তার নিয়োগ নবায়ন করা হয়। ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগের মুখে ২০১৪ সালে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফখরুল ইসলামকে অপসারণের পর চাপ সামলাতে না পেরে পদত্যাগ করেন বাচ্চু। আব্দুল হাই বাচ্চুর কাজ ছিল সরকারি এই ব্যাংকটি যাতে ঋণ বিতরণ ও আদায়ে কোনো অনিয়ম না করে, ব্যাংকিং নীতি মেনে আমানতকারীদের স্বার্থরক্ষা করে তা তদারকি করা। ব্যাংকটিকে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করে আমানতকারীদের স্বার্থসংরক্ষণ করা। কিন্তু ঘটল তার উল্টোটা। তিনি পুরো ব্যাংকটিকে তার পারিবারিক সম্পদে পরিণত করলেন এবং নজিরবিহীনভাবে লুটপাট আর ঋণ জালিয়াতিতে জড়িয়ে পড়লেন। ব্যাংকিং ইতিহাসে নজিরবিহীন এ আর্থিক কেলেঙ্কারিতে তোলপাড় ছিল সারা দেশ। বিশেষ করে এত বড় অপরাধ করেও তিনি ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এমনকি দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) তাকে এড়িয়ে যায়। যা ছিল তীব্রভাবে সমালোচিত। শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হন এ আলোচিত খলনায়ক। তার ও পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়।

দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
কুষ্টিয়ার স্বনামধন্য ইংলিশ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। স্বনামধন্য ইংলিশ প্রতিষ্ঠান CEL এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত ভূ-রাজনীতির ফাঁদে বাংলাদেশ শায়েস্তাগঞ্জ পূজা উদযাপন সাড়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ওসির! ইসরাইলের অভিযান নিয়ে যা বললেন পুতিন বেরিয়ে আসছে ব্যাটারদের হতশ্রী চেহারা নিউজিল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটের হার উন্নয়নের কারণে আমরা উন্নত জীবন যাপন করতে পারছি: শিক্ষামন্ত্রী মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ চার অগ্রাধিকার নীতি ঘোষণা চালকের কিস্তি আর সংসারের চাকা ঘুরাল ‘টিম পজিটিভ বাংলাদেশ’ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার পরিণতি ভালো হয় না: ফখরুল পিটার হাসের বক্তব্যের প্রতিবাদে যা বললেন সাংবাদিকনেতারা ‘কোনো চুক্তিতে দেশে ফিরছেন না নওয়াজ শরিফ’ পদার্থে নোবেল পেলেন ৩ জন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট দমনে কঠোর অবস্থানে সরকার: বাহাউদ্দিন নাছিম সেপ্টেম্বরে সারা দেশে ১৫৭৭ অগ্নিকাণ্ড, ১১ প্রাণহানি ৩ মেয়েকে হত্যার পর নিখোঁজের নাটক মা-বাবার! এবার অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটালে রেহাই নেই: প্রধানমন্ত্রী এবার দুদকের মামলায় ড. ইউনূসসহ ১৩ জনকে তলব ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট দমনে কঠোর অবস্থানে সরকার: বাহাউদ্দিন নাছিম ডেঙ্গুতে সহস্রাধিক মৃত্যু শক সিনড্রোমের রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে