নিউজ ডেক্স
আরও খবর
চাটমোহরে ছাত্রদল নেতা গুলিবিদ্ধ, কাটা হয়েছে পায়ের রগ
দেশ গঠনের বার্তা দেবেন তারেক রহমান
যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে: মুজিবুর রহমান
খালেদা জিয়াকে শিগগিরই বিদেশে নেওয়া হবে : মির্জা ফখরুল
বগুড়ায় শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ১০১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
গফরগাঁওয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবদলের ২ কর্মী নিহত
আমার ছেলে যেন এমনই সাধারণ থাকে: আসিফের বাবা
বাংলাদেশে এগিয়ে যাচ্ছে সব কয়টি সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সূচকে: ওবায়দুল কাদের
আন্তর্জাতিক এবং আভ্যন্তরীণ সংকটকালেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত দেড় দশকে বাংলাদেশ একটি দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মর্যাদা লাভ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৩তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অগ্রগতির ফলে বাংলাদেশের জনসাধারণের জীবনমান দিন দিন উন্নততর হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন শুধু ডাল-ভাতে নয়, পুষ্টি উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশে এগিয়ে যাচ্ছে সব কয়টি সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সূচকে।’
শনিবার (৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে গত ১৫ বছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) গড়ে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সারা দুনিয়ায় উচ্চতম প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশের মধ্যে অন্যতম উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল আমাদের সরকার সবার মধ্যে পৌঁছে দিয়েছে। যার ফলে দ্রুত দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে। ২০০৫ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার দেশের ৪০ শতাংশের বেশি মানুষকে দারিদ্র্যের মধ্যে রেখে গিয়েছিল। জনগণের ধারাবাহিক সমর্থন নিয়ে আমাদের সরকার মাত্র ১৪ বছরের মধ্যে সেই দারিদ্র্যের ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। অতি দারিদ্রের হার এখন মাত্র ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।’
আওয়ামীলীগের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার এই বাজেট বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট। বিগত বছরগুলোতে প্রতি বছরেই আমাদের বাজেটের আকার ১২ থেকে ১৪ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ব্যাঘাত না ঘটিয়ে, কিছুটা কৃচ্ছ্রসাধন করে বিগত অর্থবছরের তুলনায় এ বছরের বাজেট মাত্র ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।‘
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি, সুদের হার বৃদ্ধি, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি এবং টাকার মান কমে যাওয়ার এ চতুর্মুখী চাপ আমাদের অর্থনীতিতে সৃষ্টি করে ডলার সংকট এবং মূল্যস্ফীতি। উন্নত অর্থনীতির দেশগুলো মূল্যস্ফীতি অনেকাংশে কমিয়ে আনতে সক্ষম হলেও এখনও তাদের কাঙ্ক্ষিত ২ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়নি। বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি এখনও ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতি এবং দেশের বাজারে সরবরাহ শৃঙ্খলে ত্রুটি এবং ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া আমাদের বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণ। একই সময়ে দেশে গড় মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ শতাংশের বেশি হারে। মূল্যস্ফীতি এবং মজুরি বৃদ্ধির মধ্যে ২ শতাংশের একটা ফারাক রয়েছে।’
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক কম প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করেছে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। এরফলে বছরে ১৫ শতাংশের বেশি হারে আমদানি কমেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যার ফলে সংকটকালেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ৩ মাসের বেশি আমদানির জন্য ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। তা সত্ত্বেও টাকার মান ধরে রাখতে রিজার্ভ থেকে ২২ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হয়েছে, ফলে রিজার্ভ অনেক কমে গেছে। দ্রব্যমূল্য ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার নির্বাচনি অঙ্গীকার পূরণের লক্ষ্যে নতুন সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গেই সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। এবারের বাজেটেও তার পূর্ণ প্রতিফলন রয়েছে।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী মনে করেন, অর্থ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে চাহিদা কমিয়ে এবং পণ্য ও সেবার সরবরাহ বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমানো যায়। তার কথায়, এবারের বাজেট এই দুই পথের মিলন ঘটিয়েছে। দ্রব্যমূল্য কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। যার মাধ্যমে সুদের হার বাজারভিত্তিক করা হয়েছে এবং নতুন পদ্ধতিতে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার। এতে ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল হয়েছে। নতুন করে ডলার সংকট হওয়ার সম্ভাবনা আর দেখা যাচ্ছে না। রিজার্ভ এখন থেকে বাড়তে শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
‘মুদ্রানীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবারের বাজেটে রাজস্বনীতি নির্ধারণ করা হয়েছে যাতে কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যয় নিরুৎসাহিত করা হয়েছে, সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচি চলমান রাখা হয়েছে, কর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমদানি বিকল্প উৎপাদন উৎসাহিত করা হয়েছে এবং কৃষি ও শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রণোদনা ও ভর্তুকি চলমান রেখে তার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে’, যোগ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘বাজেটের এসব উদ্যোগ একদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করবে অন্যদিকে রিজার্ভ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে‘। এ বাজেটের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগামী অর্থ বছরে মূল্যস্ফীতির গড় ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য পূরণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
‘টেকসই উন্নয়নের পরিক্রমায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা’ শীর্ষক ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট দিয়েছে সরকার। এই বাজেটের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের অঙ্গীকার। এমন বাজেটের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রতি ধন্যবাদ জানান ওবায়দুল কাদের।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, উপ দফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।