
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

ঈশ্বরদীতে টানা ৪০ দিন মসজিদে নামাজ পড়ে বাইসাইকেল উপহার পেলেন শিক্ষার্থীরা

নড়াইলে হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন

মাহফিলে পদদলিত হয়ে আহত ৩০

একদল যায়, আরেক দল এসে লুটে খায়

রূপপুরে গ্রিনসিটির ৪ তলা থেকে লাফ দিয়ে রুশ নারীর আত্মহত্যা

কুষ্টিয়ায় সেনাবাহিনীর অভিযানে বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে অস্ত্র-বোমা উদ্ধার

মধুখালীতে সাংবাদিকের বাবা-মাসহ ৩ জনকে কুপিয়ে জখম
শরীয়তপুরে নির্বাচন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিতের অভিযোগে আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা

শরীয়তপুরে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ এক সরকারি আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দে বাদী হয়ে বুধবার (১৫ মে)রাতে পালং মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অভিযুক্তের নাম আলমগীর মুন্সি। তিনি জজ কোটের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
পুলিশ ও নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে। সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচজন প্রার্থী। তাদের একজন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান উজ্জ্বল ঘোড়া প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কামরুজ্জামানের পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন শরীয়তপুর জজ কোটের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আলমগীর মুন্সী।
নির্বাচনের প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের তালিকা ও ভোট কেন্দ্রের তথ্য সংক্রান্ত গোপনীয় কিছু নথি নিয়ে মঙ্গলবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দে। তিনি ওই নথিপত্র নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুদ্দিন গিয়াসের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সে সময় ওই কক্ষে প্রবেশ করেন পিপি আলমগীর মুন্সী। ওই নথিগুলো তখন সরিয়ে রাখেন নির্বাচন কর্মকর্তা। এতে ক্ষুব্ধ হন জিপি আলমগীর মুন্সী।
বুধবার বিকেলে নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাওয়ার পথে তাঁর গতিরোধ করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন আলমগীর মুন্সী। এরপর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাইফুদ্দিন গিয়াস, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাইনউদ্দিন ও এনডিসি হোসেল রানা সেখানে আসেন। বিকাশ চন্দ্র বিষয়টি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। তখন আলমগীর মুন্সী পুনরায় তাঁকে গালাগালি করে মারার জন্য তেরে যান। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা তখন দুজনকে সরিয়ে দেন।
এ ঘটনায় বিকাশ চন্দ্র রাতে পালং মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগটি রাত সাড়ে ১২টার দিকে নথিভুক্ত করা হয়।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দে বলেন, ‘নির্বাচন সংক্রান্ত কিছু গোপন নথি আলমগীর মুন্সী দেখতে চেয়েছিলেন। তিনি একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক। ওই নথি না দেখানোর কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। আমাকে লাঞ্ছিত করেছেন। মারধর করতে উদ্যত হয়েছেন। আমি ঘটনাটির পর নিরাপত্তাহীন অবস্থা বোধ করছি। আমার সিনিয়র কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনের পরামর্শে মামলা দায়ের করেছি।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শরীয়তপুর জজ কোটের পিপি আলমগীর মুন্সী বলেন, ‘আমার সঙ্গে কোনো সরকারি কর্মকর্তার খারাপ সম্পর্ক নেই। আমি কেন একজন নির্বাচন কর্মকর্তাকে অপদস্থ করতে যাব। আমার বিরুদ্ধে কেন মামলা করা হয়েছে তা বলতে পারব না।’
এ নিয়ে শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা জানার পর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নির্বাচন কর্মকর্তা ও ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছি। দুই পক্ষকে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা চাইছিলাম অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনাটি আর যেন সামনের দিকে না আগায়। এখন মামলা হয়েছে।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, ‘নির্বাচনী কাজের নথি না দেখানোর কারণে কর্মকর্তাকে ভয় দেখানো, অপদস্থ করা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন। আমরা বিষয়টি কমিশনকে জানিয়েছি। আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের সামনে ঘটেছে। এটা দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা হতবিহ্বল হয়ে পড়েছি। ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।’
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দীন আহাম্মেদ বলেন, ‘নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও মারধর করতে উদ্যত হওয়ার অভিযোগে জজ কোটের পিপির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।