
নিউজ ডেক্স
আরও খবর

আ.লীগ নেতার গ্রেফতার নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ, বোমা বিস্ফোরণ

চাঁদা দাবির অভিযোগে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ নেতার সদস্য পদ স্থগিত

বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ গুলি আগুন আহত ২০

ঈদের পর বড় কর্মসূচি দেবে এনসিপি

২ জামায়াত কর্মী ছনখোলায় কেন গেলেন, উত্তর খুঁজছে পুলিশ

এইচ টি ইমামের সাবেক পুত্রবধূর বাসায় ভাঙচুর লুটপাট, আটক ৩

৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে এনসিপি
নাটোরের গুরুদাসপুরে পুনঃনির্বাচনের দাবিতে পরাজিত ৪ প্রার্থীর মানববন্ধন

গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রকাশিত ফলাফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন পরাজিত ৪ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। শুক্রবার (৩১ মে) বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলার কাছিকাটায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে ঘণ্টাব্যাপী ওই কর্মসূচি পালন করা হয়। এদিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলছেন, পরাজিত প্রার্থীরা সরকার বিরোধী লোকজন নিয়ে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন তিনি।
মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন চেয়ারম্যান পদে পরাজিত প্রার্থী নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান বাঁধন। এসময় পরাজিত দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রোকসানা আক্তার লিপি এবং হুমায়ুন কবির প্রিন্স উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে নির্বাচনের ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কারচুপিসহ নানা অভিযোগ এনে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ পোষ্ট করেন পরাজিত প্রার্থীদের দুই কর্মী। শুক্রবার দুটি পৃথক অভিযানে ইকবাল তালুকদার ও নাদিম পারভেজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বুধবার (২৯ মে) শান্তিপূর্ণভাবে গুরুদাসপুর উপজেলার ৭২টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হয়। প্রাথমিক ফলাফলে চেয়ারম্যান পদে আহম্মদ আলী, ভাইস চেয়ারম্যান পদে শরিফুল ইসলাম ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাহিদা আক্তার মিতা এগিয়ে থাকার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নেতাকর্মীরা উপজেলা চত্বরে স্লোগান দিতে থাকেন। রাত আটটার দিকে চূড়ান্ত ফল ঘোষণার সময় পরাজিত প্রার্থীরা লোকজন নিয়ে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলের তালিকার ছবি তোলার দাবি করেন। কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তা তা না মানলে চেয়ারম্যান প্রার্থী এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী ও আতিয়ার রহমান বাঁধনের সমর্থকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। একপর্যায়ে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলীর ছেলে রাসেদ ও অপর প্রার্থী আতিয়ার রহমান বাঁধন রিটার্নিং কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্যে করে অশালিন ভাষায় গালমন্দ করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশ,বিজিবি,ডিবি মোতায়েন করা হয়। সব মিলিয়ে টানা আড়াই ঘণ্টা উতপ্ত অবস্থার পর রাত প্রায় সাড়ে ১০ টার দিকে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আহম্মদ আলীকে বেসরকারী ভাবে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়।
রিটার্নিং কর্মকর্তার হিসেব মতে, আহম্মদ আলী মোল্লা ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ২০ হাজার ৩৫৯ পেয়ে ৪৫৬ ভোটে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রার্থী আতিয়ার রহমান বাঁধন আনারস প্রতীকে ১৯ হাজার ৯০৩ এবং এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী মোটরসাইকেল প্রতীকে ১৯ হাজার ৭৫৯ ভোট পেয়ে পরাজিত হন।
পরাজিত প্রার্থী সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান বাঁধন বলেন, নির্বাচনে পেশিশক্তি ব্যবহার এবং অথর্নৈতিক লেনদেন করা হয়েছে। একারণে আহম্মদ আলী মোল্লাকে ঘোষণার মাধ্যমে বিজয়ী করেছেন রির্টানিং কর্মকর্তা। তারা এই নির্বাচনের ফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানান।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী প্রার্থী আহম্মদ আলী মোল্লা বলেন, মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে তাকে ভোট দিয়েছেন বলেই তিনি নির্বাচিত হতে পেরেছেন। ফল ঘোষণা বা ভোট গ্রহণ এবং গণনায় কোনো অনিয়ম হয়নি। সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়ায় নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন বলেন, শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠানের পর পরাজিত প্রার্থীর কিছু অতিউৎসাহি কর্মী-সমর্থকরা উস্কানিমূলক পোষ্ট করায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এসব বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন জানান, ‘২৯ শে মে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উপজেলার ৭২টি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ফলাফল ঘোষণা শেষে বিজয়ী প্রার্থীদের বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করার সময় পরাজিত প্রার্থী সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী ও আতিয়ার রহমান এবং তাদের সমর্থকরা তার কাছ থেকে ফলাফল শিট কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি দিতে না চাইলে তারা চড়াও হন তিনিসহ দায়িত্বে থাকা সকলের ওপর। পরাজিত প্রার্থীরা সরকার বিরোধী লোকজন নিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য এবং অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়েছেন। পরাজিত প্রার্থীদের বুঝিয়ে বলা হয়েছে তাদের কোন অভিযোগ থাকলে আইনগত ভাবে করুক। কিন্তু তারা সেটা না করে ফলাফল ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে যাচ্ছেন। তিনি ইতিমধ্যেই এসকল বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবগত করেছেন।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।