নিউজ ডেক্স
আরও খবর
ঠাকুরগাঁও ২ টাকায় চা-নাস্তা বিক্রি করেন নুর ইসলাম
পায়ে হেঁটে হজে যাচ্ছেন গাইবান্ধার আলম আলী
অফিস-আদালত খুললেও জমজমাট বিনোদন কেন্দ্রগুলো
রাজধানীর পশুহাট গুলোতে লাখের নিচে গরু নেই
বাস টার্মিনালে তদারকি করছে বিআরটিএ ; অনিয়ম পেলেই ব্যবস্থা
প্রেমের টানে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কান তরুণী পচলা
রাজধানীর পশুহাটে কোরবানির পশু প্রবেশ শুরু
প্রতারক চক্রে একাকার নেতা, শিক্ষক, গীতিকার
দের পেশাগত পরিচয় ও কাজের ক্ষেত্র একেবারেই আলাদা। কেউ শিক্ষকতা করেন কলেজে, কেউ গান লেখার পাশাপাশি সুরও করেন। অন্যজন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা। তবে একটি জায়গায় এসে মিলেছেন তিনজনই। সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চক্রে তাঁরা মিলেমিশেই কাজ করেন। এর পর ভাগ করে নেন প্রতারণার টাকা। সম্প্রতি এই চক্রের কয়েক সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্য।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হলেন ড. রেজাউল হক এনডিসি, পিএসসি। নামের শুরু ও শেষে ব্যবহার করা ডিগ্রিগুলোর সত্যতা মেলেনি। তবে নিজেকে তিনি পরিচয় দেন গীতিকার, সুরকার ও গায়ক হিসেবে। তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে সেই গান প্রচার হয়। চক্রের আরেক সদস্য শাহাদত হোসেন সুমন চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি। সেই সঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৯ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদপ্রার্থী। তাঁদের সঙ্গে আছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স পাস করা আলমগীর হোসেন। তিনি শিক্ষকতা করেন নোয়াখালী অঞ্চলের কলেজে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর শুরু হয় এই চক্রের তৎপরতা। তাঁরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চাকরিপ্রত্যাশী তরুণ-তরুণীদের খুঁজে বের করেন। এর পর তাঁদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে মাথাপিছু ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা নেন। পরের ধাপে তাঁদের আবেদনপত্র নিয়ে ভুয়া লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন। বিশ্বাস অর্জন করতে বিশেষ ব্যবস্থায় সচিবালয়েও নিয়ে যাওয়া হয় প্রার্থীদের। শেষে দেওয়া হয় হুবহু আসলের মতো নিয়োগপত্র। ফলে পুরো প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে ভুক্তভোগীরা প্রতারণার বিষয়টি বুঝতেও পারেন না।
ডিবি লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়ার নামে প্রতারণায় জড়িত চক্রের আট সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা এর আগেও বিভিন্ন ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতিতে জড়িত ছিলেন। প্রতারণার টাকায় তাঁরা বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। তাঁদের মধ্যে রেজাউল হক রাজধানীর শাহজাহানপুরের একটি মাজারের খাদেম। পাশাপাশি তিনি গান লেখেন, সুর করেন। পশ্চিম ধানমন্ডি ও হাজারীবাগের দুটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে থাকেন তাঁর দুই স্ত্রী।
গ্রেপ্তার অন্য আসামিরা হলেন- হুমায়ুন কবির, পলাশ চন্দ্র সরকার, আসাদুল হক, জাহিদ হাসান ও আসাদুজ্জামান ওরফে বাবু। তাঁদের মধ্যে হুমায়ুন কবির প্রতারণার টাকায় গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীর পাংশা থানার মেঘনা এলাকায় একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি তৈরি করেছেন। স্থানীয় বাজারে রয়েছে ইলেকট্রনিক সামগ্রীর বড় একটি দোকান। চক্রের সদস্য যুবলীগ নেতা তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ভুয়া নিয়োগপত্রসহ অন্যান্য কাগজ তৈরি করে দেন।
ডিবি সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা ও মন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে প্রতারণা চালিয়ে আসছিলেন চক্রের অন্যতম হোতা আলমগীর হোসেন। চাকরিপ্রার্থীদের তিনি বলতেন, মন্ত্রীর বিশেষ কোটায় নির্বাচিত প্রার্থীদের আলাদাভাবে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। এর পর চক্রের সদস্যরা গণপূর্ত ভবনসহ অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এক বা একাধিক প্রার্থীকে নিয়ে যেতেন। সেখানে তাঁদের ভুয়া একটি পরীক্ষা নেওয়া হতো। পরে পাস সংগ্রহ করে সচিবালয়ের ভেতরে কোনো একটি কক্ষে নেওয়া হতো প্রার্থীদের। সেখানে চক্রের সদস্যরা সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রার্থীদের জানাত, চাকরির জন্য তাঁরা নির্বাচিত। পরে এক সময় ধরিয়ে দেওয়া হতো ভুয়া নিয়োগপত্র।
দৈনিক গণঅধিকার সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।